দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যসহ প্রায় সারা বিশ্বে দক্ষিণ ভারতীয় চলচ্চিত্রের কদর রয়েছে। বড় বাজেটের বিশ্ব মানের ছবি নির্মাণ করে চলেছে দক্ষিণ ভারতের তামিল, তেলেগু, কান্নাড়া ও মালায়লাম ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিগুলো। সেই সঙ্গে বাড়ছে সেসব ছবিতে অভিনয় করা অভিনেতাদের কদর।
ছবি প্রতি কোটি কোটি রুপি হাঁকাচ্ছেন রজনীকান্ত, প্রভাস, ধানুশ, মহেশ বাবুসহ অনেক তারকা। কিন্তু ছবি প্রতি ঠিক কত টাকা পান এসব তারকারা? গো নিউজ পাঠকদের জন্য সে তথ্যই তুলে ধর হল:-
রজনীকান্ত
সত্তরের দশক থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় করে চলেছেন সুপারস্টার রজনীকান্ত। এ পর্যন্ত তিনি অসংখ্য হিন্দি, তেলেগু, কান্নাড়া, ও ইংরেজি ছবিতে অভিনয় করেছেন। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বেশী পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেতাদের একজন তিনি। বর্তমানে ছবি প্রতি ৫০ থেকে ৬০ কোটি রুপি নেন রজনীকান্ত।
নাগার্জুন
তেলেগু, বলিউড, তামিলসহ প্রায় নব্বইটিরও বেশী ছবিতে অভিনয় করেছেন নাগার্জুন। এ পর্যন্ত ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরষ্কার জিতে নিয়েছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক ৭ থেকে ১০ কোটি রুপি।
বিজয়
দক্ষিণি ছবির সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক প্রাপ্ত অভিনেতাদের একজন জোসেফ বিজয়। তাঁর বাবা বিখ্যাত তামিল ছবির পরিচালক ও প্রযোজক এস এ চন্দ্রশেখর। ২০০৪ সালে ‘গিলি’ ছবিতে অভিনয় করে দারুণ প্রশংসা কুড়ান বিজয়। সে সময় ছবিটি অনেক ব্যবসাসফল ছবির মর্যাদা পায়। প্রতি ছবিতে বিজয়কে ২৫ থেকে ৩৫ কোটি রুপি পর্যন্ত দিতে হয়।
অজিত
তামিল ছবির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা অজিত কুমার। ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আসাই’ ছবির মাধ্যমে দ্রুত জনপ্রিয়তা লাভ করতে থাকেন এই অভিনেতা। সম্প্রতি তিনি ‘বেধেলাম’, ‘ইয়েন্না অরিন্ধল’এর মতো ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়ে তামিল ছবির সেরা তারকাদের মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন। অজিতের ছবি প্রতি পারিশ্রমিক ২০ থেকে ৩০ কোটি রুপি।
কমল হাসান
ষাটের দশক থেকে চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেছিলেন কমল হাসান। তামিল, তেলেগু, কান্নাড়া, মালায়ালাম ও হিন্দি ভাষায় এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২০০টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। ছবি প্রতি ২৫ থেকে ৩০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন তিনি। এছাড়া পরিচালনা ও চিত্রনাট্য লেখার জন্য আলাদা অর্থ নেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
সুরিয়া
ভারতীয় নারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় অভিনেতা সুরিয়া শিবকুমার। এ পর্যন্ত ‘নান্দা’, গজনী, অয়ন, ‘সিঙ্ঘাম’সহ অসংখ্য ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন সুরিয়া। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক ২০ থেকে ২৫ কোটি রুপি। এছাড়া চলচ্চিত্রে ডাবিং করার জন্য তিনি ৫ কোটি রুপি নেন।
প্রভাস
২০০২ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ঈশ্বর’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পা রাখেন প্রভাস। এরপর একে একে বহু ব্যবসাসফল ছবি উপহার দেন। তাঁর ক্যারিয়ার সেরা ছবি ‘বাহুবলি’ ও ‘বাহুবলি ২’। ছবিগুলো ভারতের চলচ্চিত্র ইতিহাসে সর্বোচ্চ ব্যবসাসফল ছবির মধ্যে অন্যতম। সম্প্রতি বলিউডের একটি ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি ৮০ কোটি রুপি চেয়েছিলেন। সাধারণত ছবি প্রতি ২০ থেকে ২৫ কোটি রুপি করে নেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা।
মহেশ বাবু
তেলেগু ছবির অন্যতম জনপ্রিয় অভিনেতা মহেশ বাবু। ১৯৯৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘রাজাকুমারুদু’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে আলোচনায় আসেন মহেশ। সম্প্রতি তাঁর অভিনীত ছবি ‘ভারত আনে নেনু’ ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। জানা যায়, ‘ভারত আনে নেনু’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য মহেশ ১৮ কোটি রুপি নিয়েছিলেন। ছবি প্রতি সাধারণত ১৬ থেকে ২০ কোটি রুপি নেন এই অভিনেতা।
জুনিয়র এন টি আর
ভারতীয় ‘কুচিপুড়ি’ নাচের উপর বিশেষ দক্ষ অভিনেতা জুনিয়র এন টি আর। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ২৭টি ছবিতে অভিনয় করেছেন। প্রতি ছবির জন্য ১২ থেকে ১৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন এই অভিনেতা।
রাম চরণ
জনপ্রিয় তেলেগু অভিনেতা চিরঞ্জীবী’র পুত্র রাম চরণ। বাবার পদচিহ্ন অনুসরণ করে তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন এই অভিনেতা। এ পর্যন্ত তিনি অনেক পুরস্কারে সম্মানিত হয়েছেন। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক ১২ থেকে ১৭ কোটি রুপি।
বিক্রম
বিক্রম তামিল চলচ্চিত্রের অন্যতম ধনী তারকা। ১৯৯০ সালে চলচ্চিত্রে পা রাখা এই অভিনেতা এ পর্যন্ত বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক ১২ থেকে ১৫ কোটি রুপি।
ধানুশ
অভিনয়ের পাশাপাশি ধানুশ প্লেব্যাক গায়ক ও প্রয়োজক হিসেবে পরিচিত। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘আদুকালাম’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার লাভ করেন ধানুশ। প্রতি ছবিতে অভিনয়ের জন্য তিনি ১০ থেকে ১৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন।
আল্লু অর্জুন
তেলেগু চলচ্চিত্রের শক্তিশালী অভিনেতা আল্লু অর্জুন। ‘পারাগু’ ও ‘ভিদাম’ ছবিতে অসাধারণ অভিনয়ের জন্য তিনি সেরা তেলেগু অভিনেতা হিসেবে ফিল্মফেয়ার পুরষ্কার জিতেন। ছবি প্রতি তাঁর পারিশ্রমিক ১৪ কোটি রুপি।