এরশাদ ও রওশনের যে ছবি এখনো ঘুরছে ফেসবুকে

সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ও তার স্ত্রী রওশন এরশাদের বিবাহ জীবনের প্রথমদিকের একটি ছবি ছড়িয়ে পড়েছে। তবে ছবিটির উৎস সম্পর্কে জানা যায় নি।

এরশাদ ১৯৩০ সালের ১ ফেব্রুয়ারি কোচবিহার জেলার দিনহাটায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি রংপুরের কারমাইকেল কলেজে শিক্ষাগ্রহণ করেন এবং ১৯৫০ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন।

এরপর ১৯৫৬ সালে রওশনের সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। বর্তমানে এরশাদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন এবং রওশন সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

ভারতে নিজের নামে স্কুল-কলেজ গড়ার শর্তে জমি দান করলেন এরশাদ

নিজের নামে স্কুল-কলেজ ও জনকল্যাণমূলক স্থাপনা গড়ার শর্ত দিয়ে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কোচবিহার জেলার দিনহাটায় পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া নিজের জমির অংশ দান করেছেন বাংলাদেশের জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তথা প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।

দিনহাটার ‘গোধূলি বাজার’ নামে ১৫ বিঘার খেলার মাঠের পাঁচজন মালিকের মধ্যে এরশাদও একজন। ওই মাঠের তিন বিঘা জমি প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিনহাটার মানুষের জন্য দান করেছেন।

বুধবার (৩০ মে) ঢাকা থেকে বিশেষ দূতের মাধ্যমে ‘দানপত্র’ চিঠি পৌঁছে দেওয়া হয় দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহের কাছে।

বিধায়ক উদয়ন গুহ ওই চিঠি পেয়ে এতোটাই আবেগতারিত হয়ে পড়েন যে, তিনি ওই দানপত্রের ছবি তুলে মুহূর্তেই ফেসবুকে পোস্টও করে দেন। যা নিয়ে এখন শোরগোল পড়ে গিয়েছে সর্বত্র।

১৯৪৮ সালে পশ্চিমবঙ্গ ছেড়ে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান অর্থাৎ বর্তমান বাংলাদেশে পাড়ি জমান এরশাদ। তিনি চলে গেলেও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা থেকে যান কোচবিহারের দিনহাটা শহরেই। সেখানে তাঁর স্বজন-পরিজনরা এখনও রয়েছেন।

প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এরশাদের ভাইয়ের ছেলে দিনহাটা মহকুমার একজন আইনজীবী আহসান হাবিব। শুক্রবার সকালে তাঁর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি দানপত্র দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেন।

দ্য ডেইলি স্টারকে তিনি বলেন, “এরশাদ জেঠুর কাছে গত বছর (২০১৭ সালে ২৬ ডিসেম্বর) ওই জমি চেয়ে আবেদন জানিয়েছিল দিনহাটা পৌরসভা। সেই আবেদনের প্রেক্ষিতেই জেঠু ওই জমি দান করেছেন।”

দিনহাটার বিধায়ক এবং দিনহাটা পৌরসভার চেয়ারম্যান উদয়ন গুহের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি দিনহাটার মানুষ। সেই দিনহাটার মানুষের জন্য এই জমি দান করাটাই প্রমাণ করে যে এই মাটির প্রতি তাঁর ভালোবাসা-টান এখনো সতেজ।”

উদয়ন গুহের বাবা কমল গুহের বাল্যবন্ধু বাংলাদেশের এই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি। সেই সম্পর্কে উদয়ন গুহ এরশাদকে ‘কাকু’ বলেই ডাকেন। এমনকি, গত বছর দিনহাটায় যখন গিয়েছিলেন, তখন উদয়ন গুহের বাড়িতে এক বেলা খাওয়া-দাওয়া করেছিলেন এরশাদ।

জমি দানের শর্তগুলো পূরণ করার প্রশ্নে উদয়ন গুহ ডেইলি স্টারকে বলেন, “কাকুর দানপত্রে যেভাবে লেখা রয়েছে আমরা সেভাবেই কাজ করবো।”

তবে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, পুরো গোধূলি বাজারের পাঁচ শরিকের মধ্যে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদসহ তিনজন ইতিমধ্যেই দানপত্র করে জমি দান করেছেন। বাকি দুজন এখনও দান করেননি। পৌরসভার উন্নয়নের জন্য ওই এলাকার জমিটি ভীষণ জরুরি হয়ে পড়েছিল। সেই কারণে পৌরসভার পক্ষ থেকে ওই জমি চেয়ে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতিসহ বাকিদের কাছেও আবেদন জানিয়েছিল দিনহাটা পৌরসভা।