যে শর্তে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে রাজি মিয়ানমার

মিয়ানমারের রাখাইন প্রদেশে সশস্ত্র হামলার পর সেখানকার রোহিঙ্গারা দলে দলে বাংলাদেশে ঢুকে ছিল। মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা স্বেচ্ছায় ফিরে যেতে চাইলে তাদের ফেরত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মিয়ানমার। শনিবার (২ জুন) মিয়ানমারের জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা থাউং টুন এ তথ্য জানান।

সিঙ্গাপুরে অনুষ্ঠিত এক আঞ্চলিক নিরাপত্তা বিষয়ক সম্মেলনে বক্তব্য দেওয়ার সময় তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যেখানে রোহিঙ্গারা বসবাস করে সেখানে জাতিসংঘের ‘রেসপনসিবিলিটি টু প্রোটেক্ট’ বা ‘সুরক্ষার দায়িত্ব’ চুক্তির বাস্তবায়নের প্রয়োজন আছে কি-না।এর জবাবে নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা জোনান, ‘যদি স্বেচ্ছায় সাত লাখ রোহিঙ্গাকে ফিরিয়ে দিতে পারেন, তাহলে আমরা তাদের গ্রহণ করবো।’ তা ছাড়াও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মিয়ানমার সরকার যে আচরণ করছে তাকে জাতিগত নিধন বলে কি-না এ ব্যাপারেও প্রশ্ন তোলেন।

উল্লেখ্য, ২০০৫ সালে জাতিসংঘে তথাকথিত রেসপনসিবিলিটি টু প্রোটেক্ট (আর-টু-পি) অনুমোদন করা হয়। যেখানে প্রতিটি রাষ্ট্র-ই গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, মানবতাবিরোধী অপরাধ ও জাতিগত নিধনের মতো বিষয় থেকে নিজ দেশের জনগণকে রক্ষা এবং এ ব্যাপারে একে অন্যকে সহায়তা করারও প্রতিশ্রুতি দেয়।

‘মিয়ানমারে কোনো যুদ্ধাবস্থা চলছে না, ফলে সেটা যুদ্ধাপরাধ নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধ বিবেচিত হতে পারে তবে সে জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ থাকতে হবে এবং এ বিষয়টিকে হালকাভাবে আলোচনা করা উচিৎ নয়।২০১৭ সালের আগস্ট থেকে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনায় সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা মুসলিম বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

জাতিসংঘ এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রোহিঙ্গাদের ওপর এই নির্যাতনকে জাতিগত নিধনের উদাহরণ হিসেবে পাঠ্যপুস্তকে উল্লেখ করার মতো বিষয় বলে মন্তব্য করেছেন। তবে মিয়ানমার সরকার তাদের এই অভিযোগকে অস্বীকার করেছেন।গত জানুয়ারি মাসে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে এক ‍চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সেখানে বলা হয় দুই বছরের মধ্যে তারা রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেওয়ার ব্যাপারটি চূড়ান্ত করবে।

এ ছাড়া রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ও নিরাপদে মিয়ানমারে ফিরিয়ে নিতে জাতিসংঘ এবং মিয়ানমারের মধ্যে বৃহস্পতিবার এক ‍চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে।তবে এখন পর্যন্ত মিয়ানমারের ঘটনাকে যেভাবে বর্ননা করা হয়েছে তাকে ‘অসম্পূর্ণ এবং বিভ্রান্তিকর’ বলে উল্লেখ করেছেন থাউং টুন।