গাড়ি নিয়ে আমি গ্যাঁড়াকলে পড়েছি: হিরো আলম

হবিগঞ্জের স্কুল শিক্ষকের উপহার দেয়া গাড়ি নিয়ে গ্যাঁড়াকলে পড়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন আশরাফুল আলম ওরফে হিরো আলম। হিরো আলমকে গাড়ি উপহার দেয়া শিক্ষকের নাম এম মুখলিছুর রহমান। তিনি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার নরপতি গ্রামের হাজি আবদুল জব্বার জিএল একাডেমি অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক। মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী হিরো আলমের কাছে ঘটা করে সেই গাড়ি হস্তান্তর করেন শিক্ষক এম মুখলিছুর। উপহার পাওয়া মাইক্রোবাসটি সাদরে গ্রহণ করে সেটি অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে গরিব মানুষের সেবা দেয়ার ঘোষণা দেন তিনি।

সেই সঙ্গে হিরো আলম গাড়ির নাম দেন ‘জনতার অ্যাম্বুলেন্স’। গাড়িটি ব্যবহার হবে (নন্দীগ্রাম-কাহালু) বগুড়া উপজেলার জনতার অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে। কিন্তু এ নিয়ে একরকম বিপদেই পড়েছেন তিনি। টয়োটা নোহা ১৯৯৮ মডেলের উপহার পাওয়া গাড়িটির ফিটনেস সনদের মেয়াদ শেষ হয়েছে প্রায় ১০ বছর আগে। ওই গাড়ির ট্যাক্সও দেয়া হয়েছে সর্বশেষ ২০১৩ সালের ১৮ মার্চে। একই বছরের ১৫ জুলাই ফিটনেস সনদের মেয়াদোত্তীর্ণ হয়। বর্তমানে গাড়িটির ১০ বছরে চার লাখ ৩৯ হাজার ৪৪৩ টাকা সরকারি ফি বকেয়া।

হিরো আলম সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, উপহারের গাড়ি হস্তান্তরের আগে ওই শিক্ষক গাড়ির ফিটনেস না থাকা ও ট্যাক্স বকেয়া থাকার বিষয়টি তাকে জানাননি। আর গাড়ি হস্তান্তরের সময় মানুষের ভিড়ে তার কাগজপত্র দেখার সুযোগ হয়নি।

আলম বলেন, গাড়িটির কাগজপত্র নিয়ে যত জটিলতাই হোক, উপহারের গাড়ি ফেরত দেব না। ফেরত দিলে ওই শিক্ষককে অপমান ও ছোট করা হবে।

তিনি বলেন, গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্স বানিয়ে গরিব মানুষের সেবায় ব্যবহারের ঘোষণা দিয়েছি। এখন গাড়িটি বৈধভাবে রাস্তায় চলাচল উপযোগী করতে যত টাকা লাগে, তা খরচ করতে রাজি আছি। তবে যেহেতু গাড়িটি অ্যাম্বুলেন্স হিসেবে ব্যবহার করা হবে, তাই বকেয়া মওকুফ চেয়ে বিআরটিএতে আবেদন করব।

তিনি আরও জানান, আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে গাড়িটিকে বগুড়ায় ওয়ার্কশপে নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স বানানোর কাজ শুরু করব। এর মাধ্যমে হিরো আলম ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম শুরু হবে।

গাড়ির কাগজপত্রসংক্রান্ত জটিলতার বিষয়ে মুখলিছুর গণমাধ্যমকে জানান, ২০১৮ সালে গাড়িটি তিনি কিনেছিলেন। এই গাড়ির সর্বশেষ ট্যাক্স দেয়া হয়েছিল ২০১৩ সালের ১৮ মার্চ। একই বছরের ১৫ জুলাই ফিটনেস সনদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়। মেয়াদোত্তীর্ণ ফিটনেসেই গাড়িটি ক্রয় করেন।

মুখলিছুর আরও জানান, ওই গাড়ি নিয়ে চলাচলে তার কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। মাঝেমধ্যে পুলিশ আটকালেও যখন জানতে পারত যে গাড়িটি তিনি স্কুলে যাতায়াতের কাজে ব্যবহার করেন, তখন পুলিশ তাকে ছেড়ে দিতেন।

তার দাবি, গাড়ি উপহার হিসেবে হস্তান্তরের আগেই তিনি বিষয়টি হিরো আলমকে জানিয়েছেন।

মুখলিছুর বলেন, জনতার অ্যাম্বুলেন্সের জন্য কাগজপত্র লাগবে না। আর দেশে যে হাজার হাজার ফিটনেসবিহীন গাড়ি চলছে, তা নিয়ে তো এত কথা হয় না।