দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্রীর বিয়ে!

চুয়াডাঙ্গায় দশম শ্রেণির ছাত্রের সঙ্গে পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। খোদ বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুন্নাহার নিজের ১০ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলের সঙ্গে তার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীর বিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলাজুড়ে চলছে নানা সমালোচনা। একজন শিক্ষিকার এমন কর্মকাণ্ডে হতবাক হয়েছে সুশীল সমাজ।

স্থানীয়রা জানান, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছোটশলুয়া গ্রামের বিলপাড়ার দিনমজুর অসোক আলীর মেয়ে শারমিন খাতুন (১১) বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির একজন নিয়মিত ছাত্রী। তার রোল নং-৩৮। গত ২০ মার্চ একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা শামসুনাহার তার ছেলে বেগমপুর যদুপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুর রহমানের সঙ্গে শারমিন খাতুনের বিয়ে দেন। কয়েকদিন ধামাচাপা থাকলেও বর বধু শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে গেলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

আজ সোমবার সকালে বেগমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায়, বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির কক্ষে বসে ক্লাস করছে শারমিন খাতুন। হাতে বিয়ের মেহেদী রঙ। বিয়ের বিষয়ে শারমিন খাতুনকে জিজ্ঞাসা করলে সে জানায়, গত ৮ দিন আগে ম্যাডামের ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। বর্তমানে আমার বর বেড়াতে এসেছে। তাই স্কুলে ক্লাস করতে এসেছি।

একই ক্লাসে শ্রেণি শিক্ষক হিসাবে তখন ক্লাস নিচ্ছিলেন অভিযুক্ত শিক্ষিকা শামসুনাহার।

নিজের ছেলের বাল্যবিবাহ দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মায়ের শরীর খুব অসুস্থ। মায়ের ইচ্ছা নাতির বউ দেখার। মূলত তার ইচ্ছা পূরণের জন্যই ছেলের বিয়ে দিয়েছি। তবে বর কনের বয়স কম হওয়ায় বিয়ে রেজিস্ট্রি হয়নি। বেগমপুর দাখিল মাদরাসার শিক্ষক ও বেগমপুর ইউনিয়নের কাজি মফিজুল ইসলাম ধর্মীয়রীতি মেনে বিয়ে দিয়েছেন।

বাল্যবিয়ে পড়ানোর বিষয়টি অস্বীকার করে কাজি মফিজুল ইসলাম জানান, আমি কোনো বাল্যবিয়ে পড়াই না। বর ও কনের সঠিক কাগজপত্র যাচাই করে বিয়ে পড়াই। আমার রেজিস্ট্রারে কোনো বাল্যবিয়ে নেই।

এ বিষয়ে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম ভূঁইয়া জানান, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। একজন শিক্ষক কিভাবে তার ছেলের বাল্য বিয়ে দিতে পারেন? তিনি কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো কাজ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে দেখে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সূত্র : ঢাকাটাইমস