বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে চায় সৌদির আরও ২০ কোম্পানি

সৌদি আরবের আরও ২০ কোম্পানি বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। ঢাকায় সফরে আসা সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বুধবার সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান ড. মোমেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে সৌদি সরকার, সৌদি কোম্পানিগুলো আসতে চায় বলে আলোচনা করেছি। যত ধরনের সুযোগ-সুবিধা দেওয়া দরকার, আমরা তাদের দেব। ইতোমধ্যে ২০টি সৌদি কোম্পানি আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আশা করা যায়, খুব শিগগির তা বাস্তবায়ন হবে।

রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বৈঠক শেষে তাদের উপস্থিতিতে কাস্টমস সহজীকরণ নিয়ে দুদেশের মধ্যে একটি চুক্তি ও একটি সমঝোতা স্মারক সই হয়। সংক্ষিপ্ত সফরে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা পৌঁছান সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। বুধবার দুপুরেই দেশের পথে রওনা হন তিনি।

বৈঠক শেষে আব্দুল মোমেন জানান, হজযাত্রীরা সহজে ভিসা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা এখানেই সম্পন্ন করে যেতে পারেন, সেই বিষয়ে অনুরোধ করেছিলাম সৌদি মন্ত্রীর কাছে। তিনি সৌদি আরবে প্রবেশে হজযাত্রীদের ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া বাংলাদেশেই সেরে ফেলার আশ্বাস দিয়েছেন।

আব্দুল মোমেন বলেন, সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার ক্ষেত্রে দুই দেশের ‘আরও অনেক কিছু’ করার আছে। এক্ষেত্রে কাজ করার জন্য ‘সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা’ ঠিক করার বিষয়ে ‘মতৈক্যে’ পৌঁছেছি। বিনিয়োগের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের পাঁচ হাজার কোটি গাছ রোপণের কর্মসূচি এবং বিভিন্ন দেশে চুক্তিভিত্তিক কৃষিকাজে অংশীদার হতে ঢাকার আগ্রহের কথা সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে জানান মোমেন।

এ বিষয়ে মোমেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের সবুজায়নে সৌদি আরব মহৎ উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। ৫০ বিলিয়ন গাছ লাগাতে চায় তারা। ১০ বিলিয়ন সৌদি আরবে, বাকিগুলো মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশে। আমরা সেখানে পার্টনারশিপের জন্য তাদের অনুরোধ করেছি। গাছও আমরা দিতে চাই। গাছের রক্ষণাবেক্ষণ, এটাকে বড় করার দায়দায়িত্ব আমরা নিতে চাই।

খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সৌদি আরব কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও তাদের সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও খাদ্য নিরাপত্তার ওপর বেশ গুরুত্ব দিয়েছেন। আমরা বলেছি, এ ব্যাপারে তাদের সঙ্গে কাজ করব। তারা বিভিন্ন দেশে কনট্যাক্ট ফার্মিংয়ের আয়োজন করছে, সেখানেও তারা আমাদের পার্টনার হিসাবে নিতে পারে। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের ‘রাজনৈতিক পরামর্শ সভা’ হওয়ায় বর্তমান সুসম্পর্ক আরও এগিয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা সলিড কো-অপারেশন নিয়ে কাজ করেছি। দ্বিপাক্ষিক, বহুপাক্ষিক ইস্যুতে আমরা সব সময় একসঙ্গে কাজ করি।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সহযোগিতা বিস্তৃত করার ইচ্ছা প্রকাশ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ফোরামে আমরা একে অপরকে সমর্থন দেওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছি। এ ছাড়া আরও বিভিন্ন ধরনের বিষয়ে আমরা আলোচনা করেছি। এখন আমাদের কাজ হলো ফলোআপ ও এগুলো বাস্তবায়ন করা।