জার্মানিতে একশ বাড়ির মালিক প্রবাসী বাংলাদেশি

২১ বছর বয়সে নিজের জমানো টাকা দিয়ে কেনেন প্রথম বাড়ি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি……

মাত্র ১৬ বছর বয়সে লেখাপড়ার পাশাপাশি হোটেলে কাজ শুরু করেন যুবরাজ তালুকদার। ২১ বছর বয়সে নিজের জমানো টাকা দিয়ে কেনেন প্রথম বাড়ি। এরপর আর পেছনে তাকাতে হয়নি। জার্মানিতে শতাধিক বাড়ির মালিক বাংলাদেশ আবাসন খাতে এক সফল ব্যবসায়ীর।

যুবরাজ তালুকদার, জার্মানির বন শহরের এই বাসিন্দা জার্মানির আবাসন খাতে এক পরিচিত মুখ। একশ’র বেশি বাড়ির মালিক তিনি। তবে বড় কোনো বিনিয়োগ নিয়ে এই খাতে ব্যবসা শুরু করেননি তিনি। নিজের সাম্রাজ্য গড়েছেন পুরোটাই নিজের চেষ্টায়, কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে। ১৯৯১ সালে আবাসন ব্যবসা শুরু করেন তিনি।

এ বিষয়ে তালুকদার বলেন, ‘১৬ বছর বয়স থেকে লেখাপড়ার পাশাপাশি আমি হোটেলে কাজ করতাম। পরে ইঞ্জিনিয়ারিং

খাতে চাকরি করে যে বেতন পেয়েছিলাম সেগুলো আমার বাবাকে দিতে হয়নি। আমি সেগুলো সেভ করেছি। বাবা কখনো বলেননি যে, আমার রোজগার থেকে তাকে খরচের টাকা দিতে হবে। টাকা জমা করে প্রথমে একটা বাড়ি নিলামে কিনি মাত্র সাড়ে ছয় হাজার ইউরো দিয়ে। মানে ১৯৯১ সালের তের হাজার মার্ক। সেই টাকা দিয়েই ব্যবসা শুরু করি’।

আবাসন খাতে নতুন বিনিয়োগের পাশাপাশি আরও কিছু খাতে ব্যবসা শুরুর চেষ্টা করছেন তিনি। সম্প্রতি কোলন-বন বিমানবন্দরের কাছে চালু করেছেন একটি ইতালীয় রেস্তোরাঁ।

তিনি বলেন, ‘এই বিল্ডিংটা যখন বিক্রি হলো, তখন রেস্তোরাঁ নয়, একটি অ্যাসেট হিসেবে এটি কিনেছিলাম। তখন এটি একটি চীনা রেস্তোরাঁ ছিল। আমার এক বন্ধু তখন বললেন এখানে একটি ইতালীয় রেস্তোরাঁ করা যায়। গত বছর আমরা এটি চালু করি’।

নিজের ব্যবসা দেখাশোনার জন্য সারাদিনই বন-কোলন অঞ্চলে ঘুরতে হয় যুবরাজ তালুকদারকে। সম্প্রতি কোলনের একটি আদালতে ‘অনারারি জাজ’ হিসেবেও নিয়োগ পেয়েছেন তিনি।

এই বিষয়ে তালুকদার বলেন, ‘আমাকে জার্মান সরকার অনারারি জাজ হিসেবে কোলনের ফাইন্যান্স কোর্টে দায়িত্ব দিয়েছে পাঁচ বছরের জন্য। সেখানে কোনো কেস এলে তিনজন সরকারি জাজ এবং দু’জন অনারারি জাজ বসে কেসটা তদন্ত করা হয়। সবকিছু বোঝার পরে আমাদের পাঁচজন বসে অন্তত তিনজন যেদিকে রায়টা দিতে চায়, সেদিকে রায় দেয়া হয়’।

জার্মানিতে সফল এই ব্যবসায়ী বাংলাদেশের আবাসন খাতেও বিনিয়োগ করতে চেয়েছিলেন। নানা আইনি ও দাফতরিক জটিলতায় সেখানে সুবিধা করতে পারেননি। এখন অবশ্য জানালায় ব্যবহারের উপযোগী বিশেষ একধরনের নেট তিনি বাংলাদেশে রফতানি করছেন।

জার্মানিতে নানারকম সামাজিক কর্মকাণ্ডেও যুক্ত আছেন যুবরাজ তালুকদার। বন শহরে একটি মসজিদ তৈরি করেছেন তিনি। ভবিষ্যতে ব্যবসা-বাণিজ্য সন্তানদের বুঝিয়ে দিয়ে সমাজসেবায় আরও মনোযোগী হতে চান এই বাংলাদেশি-জার্মান ব্যবসায়ী। ডয়েচে ভেলে

Share