হাজার কোটি টাকার পরিত্যক্ত বাড়ি ফেরত পেল সরকার

সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেওয়া ৪৩টি পরিত্যক্ত বাড়ি নিয়ে সাড়ে তিনবছর আগের রায় বাতিল করেছেন হাইকোর্ট। এর ফলে প্রায় হাজার কোটি টাকা মূল্যের এসব সম্পদ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে সরকারের বাধা কাটলো।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত ভবন, একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার কার্যালয়, শহীদ ও যুদ্ধাহত ১০ জন মুক্তিযোদ্ধাসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির নামে বরাদ্দ রয়েছে।

আপিল বিভাগের নির্দেশনা অনুযায়ী রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৩ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু জানান, এ রায়ের ফলে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন প্রায় এক হাজার কোটি টাকা মূল্যের এসব সম্পদ রক্ষা পেল।

এক রিট আবেদনের শুনানিতে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট সরকারকে দেয়া বরাদ্দ বাতিল করে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’র অনুকূলে রায় দেন। সমিতির সাধারণ সম্পাদক চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান মেয়র আজ ম নাছির উদ্দিনের করা এক রিট আবেদন হাইকোর্ট ওই রায় দিয়েছিলেন।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে সরকার ও বরাদ্দ পাওয়া মুক্তিযোদ্ধাদের করা এক রিভিউ আবেদনে সোমবার হাইকোর্ট আগের রায় বাতিল করে নতুন করে রায় ঘোষণা করলেন।

জানা গেছে, অবাঙ্গালি পাকিস্তানিদের নিয়ে ১৯৫১ সালে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’ প্রতিষ্ঠিত হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের পর তারা বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে পাকিস্তানে চলে যায়। এরপর সমিতির সদস্যদের নামে থাকা ৪৩টি বাড়ি ১৯৮৬ সালে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে সরকার। পরে সেসব বাড়ি সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এবং শহীদ ও যুদ্ধাহত ১০ জন মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের অনুকূলে বরাদ্দ দেয়।

পরবর্তীতে ‘দি চিটাগাং কো-অপারেটিভ হাউজিং সোসাইটি লিমিটেড’র সাধারণ সম্পাদক হিসেবে আ জ ম নাছিরউদ্দিন সরকারের সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে ২০১৩ সালের ৯ অক্টোবর হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। এ রিট আবেদনে হাইকোর্ট ২০১৪ সালের রায়ে সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্টরা আপিল বিভাগে যাণ।

আপিল বিভাগ তাদের আবেদন (২০১৬ সালে করা রিভিউ আবেদন) নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টকে নির্দেশ দেন। ওই নির্দেশে হাইকোর্টে রিভিউ আবেদনের ওপর শুনানি হয়। এর পর এ রায় আসলো।