আজ আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। ১৯৯৪ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে দিবসটি পালন করে আসছে বিশ্বের প্রায় ৩০ কোটি আদিবাসী।
১৯৯২ সালে জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের উন্নয়ন ও সংরক্ষণ উপকমিশনের কর্মকর্তারা তাদের প্রথম সভায় আদিবাসী দিবস পালনের জন্য ৯ আগস্টকে বেছে নেয়। বাংলাদেশেও ২০০০ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।
আজ বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশেও নানা আয়োজনে দিবসটি পালিত হচ্ছে। এ বছর দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারিত হয়েছে- ‘ইনডিজেনাস পিপলস, মাইগ্রেসন এন্ড মুভমেন্ট’। এরসঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম দিবসের প্রতিপাদ্য করেছে- ‘আদিবাসী জাতিসমূহের দেশান্তর প্রতিরোধের সংগ্রাম’।
এ উপলক্ষে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও অন্যান্য সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে- সকালে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের আয়োজনে দিবসের মূল অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। কর্মসূচির মধ্যে আরো রয়েছে সমাবেশ, শোভাযাত্রা ও সাংস্কৃতিক পরিবেশনা।
এ ছাড়া মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের আয়োজনে বাংলা একাডেমিতে হবে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী। অনুষ্ঠানে দেশের বিশিষ্ট নাগরিকরা উপস্থিত থেকে সংহতি জানাবেন।
সরকারি পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতিতে বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়- বাংলাদেশে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা এবং সাঁওতালসহ বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার প্রায় ৩০ লাখ মানুষ বসবাস করেন, যেটি দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ২%।
বাংলাদেশে বিভিন্ন ক্ষুদ্র জাতিসত্তার জনগোষ্ঠী নিজেদের ‘আদিবাসী’ হিসেবে পরিচয় দিতে পছন্দ করেন। তারা মনে করেন, বাংলাদেশের ভূখণ্ডে, বিশেষ করে পার্বত্য চট্টগ্রাম এলাকায়, তারাই ‘আদিবাসী’। ওই অঞ্চলে যেসব ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি বসবাস করছে তারা আসলেই সেখানকার আদিবাসী কিনা এনিয়ে রাজনৈতিক মতভেদ যেমন আছে তেমনি নৃবিজ্ঞানীদের মাঝেও আছে বিভক্তি।
বুধবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সেমিনারে আদিবাসী অধিকার সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা, সংবিধান সংশোধন করে আদিবাসী অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে তাদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার সহ ভূমি ও সম্পদের উপর অধিকার নিশ্চিত করা, সমতলের আদিবাসীদের জন্য স্বতন্ত্র ভূমি কমিশন গঠন, পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কার্যকর করা, আদিবাসীদের উন্নয়নে বা আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলে কোন উন্নয়ন পদক্ষেপ গ্রহণের বেলায় তাদের অর্থপূর্ণ অংশীদারীত্ব নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রং তার মূলপ্রবন্ধে এসব দাবি জানিয়েছেন।