আমি আমার খুব কাছের একজন মানুষ ‘রাকিব’ কে হারিয়েছি সড়ক দুর্ঘটনায়। আমার দেখা পৃথিবীর সেরা মানুষগুলোর মধ্যে ওর নাম আমি প্রথমেই রাখবো। কত তরুণ এটা ছেলে কত কিছু করতে পারতো দেশের জন্য আজ বেঁচে থাকলে! কিন্তু ওই মানুষরূপী জানোয়ারদের জন্য আজ ও না ফেরার দেশে।
তার ক্যান্সার হয়েছিল। বাংলাদেশের চিকিৎসকরা সেটা ধরতে পারে নাই। পায়ে একটা ব্যথা পেয়েছিল সেখান থেকে ক্যান্সার কীভাবে শরীরে বাসা বেঁধেছিল হয়তো ব্যাংককে চিকিৎসক না দেখালে জানতেই পারতো না। তারপর শুরু হল ওর চিকিৎসা। সবাই জানেন ক্যান্সারের চিকিৎসা কত কষ্টের। দেশে ফিরলো রাকিব, কত পরিকল্পনা… আমার সাথে দেখা করবে, ঘুরবে… একদিন বাসার সামনে এসে দেখে গেল আমাকে, নিজ থেকেই। কিন্তু আমাদের আর ঘোরা হল না, আড্ডা দেয়া হল না। গাড়ি দুর্ঘটনায় ওর দুইটা বন্ধু বেঁচে গেল। শুধু বাঁচলো না রাকিব।
বনানী ফ্লাইওভার থেকে একটা ভ্যানের ধাক্কা ওকে নিয়ে গেল না ফেরার দেশে… ওর লাশের সামনে বসে কাঁদতে পারছিলাম না। এত সুন্দর কীভাবে লাগে একটা মানুষকে মরে গেলে? বুকের ভিতরটা হাহাকার করছিল, চিৎকার করে কাঁদতে চেয়েও করতে পারিনি চিৎকার।
আমরা অনেকেই আমাদের অনেক প্রিয় মানুষকে হারিয়েছি এই ভয়ঙ্কর সড়ক দুর্ঘটনায়। তাই এই সংগ্রাম আমাদের সড়ক দুর্ঘটনা থেকে মুক্তির সংগ্রাম। এ সংগ্রাম কিছু মানুষরূপী জানোয়ার চালক ও তাদের মালিকদের শায়েস্তা করার সংগ্রাম।
দেশে থাকলে অবশ্যই রাস্তায় নামতাম। কারণ আমি জানি কী হারিয়েছি, তার কষ্ট কতটুকু। যে মা তার সন্তান হারিয়েছেন তার কষ্ট কত… তাই শারিরীকভাবে তোমাদের সাথে না থাকতে পারি, মানসিকভাবে মন থেকে তোমাদের সাথে আছি… থাকবো… তোমরাই পারবা এই অন্যায়ের বিচার করতে। দেশের হাল ধরতে… এই পঙ্গু দেশটাকে তোমরা হাঁটা শিখাও, শুভকামনা…