বিয়েতে যাওয়ার পথে ৩ ভাইয়ের করুণ মৃত্যু, লাশ দেখে মূর্ছা যাচ্ছেন মা

গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বিয়ের উদ্দেশ্যে গ্রামের মৃত জমির আলীর ছেলে বর হাফিজ আনসার আলী (২৬) তার দুই ভাই, ভগ্নিপতি ও নিকত্মাতীয়দের নিয়ে নোয়াখালীর উদ্দেশে মাইক্রোবাসযোগে যাত্রা করেন। দুপুরে সিলেট-ঢাকা সড়কের ওসমানী নগরে বেপরোয়া ট্রাকের সংঘর্ষে মারা যান বর হাফিজ আনসার আলী, তার বড় ভাই আমীর আলী (৩৫) ও ছোট ভাই আরব আলী (২০), ভগ্নিপতি ছাতকের মির্জাপুর গ্রামের মিরাস আলী (৩৫), নিকটাত্মীয় পারভীন আক্তার (২৭), তার শিশু কন্যা জাহানারা বেগম (৫) এবং ফুফাতো ভাই আনফর আলী (২৬)।দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হন হাফিজ আনসার আলীর চাচা আব্দুল খালেক ও ফকির আলী।

আশঙ্কাজনক অবস্থায় তারা সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।আজ শুক্রবার বিকেলে হাফিজ আনসার আলী ও তার দুই ভাইয়ের লাশ গ্রামের বাড়িতে আনা হয়।

সন্তানের লাশ সব সময় মা-বাবার কাছে বড় বেদনার। কিন্তু যখন একই মায়ের তিনটি সন্তান লাশ হয়ে ফিরে আসে তখন বাবা-মার কি অবস্থা দাঁড়ায় তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব। কিন্তু কখনো এমন বাস্তবতাও নেমে আসে জীবনে!

গতকাল বৃহস্পতিবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের তিন ছেলে এবং স্বজন মিলে সাতজনের লাশ আজ শুক্রবার বিকেলে বাড়িতে এসে পৌঁছায়। স্বজনদের লাশ যার যার বাড়িতে পাঠানো হয়।

তিন ছেলের লাশ এসে পৌঁছায় দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংপুর ইউনিয়নের মুকিরগাও গ্রামের ওই বাড়িতে। এ সময় সেখানে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।

সেখানে প্রতিবেশীরা জড়ো হন। তিনটি লাশ পাশাপাশি শুইয়ে রাখা হয় বাড়ির উঠোনে।সন্তানদের মত্যুর খবরে ষাটোর্ধ্ব নির্বাক মা তাজিরুন নেসা ছেলেদের ক্ষতবিক্ষত লাশ দেখে,

লাশগুলো জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কেঁদে ওঠেন। বার বার মূর্ছা যান তিনি। প্রতিবেশীরা সান্ত্বনা দিতে গিয়ে নিজেরাই কান্নায় ভেঙে পড়েন। বিষাদে ছেয়ে যায় পুরো বাড়ি।