প্রতিনিয়তই ঘটে চলছে সারা বিশ্ব জুড়ে আজব আজব সব ঘটনা, তার সব আমারা জানতে না পারলেও কিছু কিছু আমদের অবাক করে দেয়। সেরকমই একটি ঘটনা ঘটেছে মিসরে। চলতি বছরের জুলাই মাসের শুরুর দিকে প্রত্নতাত্ত্বিক এক স্থানে খনন শুরু করা হয়। ধারণা করা হচ্ছিল, সেখানে অত্যন্ত মূল্যবান সামগ্রী পাওয়া যাবে। কিন্তু মিসরের আলেকজান্দ্রিয়া প্রদেশের সিদি গাবের অঞ্চলের ওই প্রত্নতাত্ত্বিক জায়গা খুঁড়ে পাওয়া গেছে কালো একটি বাক্স।
আকার ও আকৃতি দেখে সেটিকে মমি রাখার বাক্স বলেই মনে করেছিল বিশেষজ্ঞরা। সম্প্রতি সেই ‘বাক্স’ খোলা হলে রহস্য আরো ঘনীভূত হয়।
বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট ‘লাইভসায়েন্স’-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলেকজান্দ্রিয়া থেকে এখন পর্যন্ত প্রাপ্ত বাক্সের মধ্যে এটিই সবচেয়ে বড়। ৯ ফুট দীর্ঘ, ৫ ফুট চওড়া এবং ৬ ফুট উঁচু এই বাক্সটি বালি, পানি, চুন দিয়ে ঢেকে রাখা ছিল।
ধারণা করা হচ্ছিল, ওই বাক্সে গ্রিক সম্রাট আলেকজান্ডারের কিছু দামি জিনিস থাকতে পারে। সম্রাট আলেকজান্ডারের মরদেহ কোথায়, কী অবস্থায় আজ বিদ্যমান, তা কারো জানা নেই। এটি বিশ্বের অন্যতম রহস্য বলে বিবেচিত। সে কারণে অনেকেই ধারণা করেছিলেন, এবার কিছু একটা উদ্ধার হতে চলেছে।
শেষ পর্যন্ত বাক্সটি খোলা হলে দেখা যায়, তাতে তিনটি কঙ্কাল ও রহস্যময় এক তরল পদার্থ রয়েছে। মিসর সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সেই কঙ্কালগুলো সৈন্যদের। কিন্তু ওই তরল ঠিক কী, তাই নিয়ে চলতে থাকে ক্রমাগত আলোচনা। বাক্সের গায়ে বা আশেপাশে কোনো রকম লেখা বা ওই জাতীয় কিছু না থাকায় রহস্য আরো ঘনীভূত হয়।
মিসরের তত্ত্ববিদদের মধ্যে এ নিয়ে অসংখ্য প্রশ্ন উঠে এসেছে এই বাক্স নিয়ে। যেমন
এই তিন কঙ্কাল আসলে কাদের?
এই বাক্সটি ঠিক কবে রাখা হয়েছে?
কীভাবে এই তিন ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছিল?
এমন এক বিশাল বাক্সে কেন এই মরদেহগুলো রাখা হয়েছিল?
সর্বোপরি, এই তরল পদার্থ ঠিক কী? তা কী বাইরে থেকে প্রবেশ করেছে, নাকি ওই তিন মরদেহের সঙ্গেই ওই তরল রাখা হয়েছিল?
উপরের প্রশ্নগুলোর উত্তরের সন্ধান করছে মিসর সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সংবাদ রীতিমতো শোরগোল ফেলে দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, রহস্য-রোমাঞ্চ ঔপন্যাসিক ড্যান ব্রাউন তার পরের উপন্যাসের প্লট পেয়ে গেছেন এ থেকে। আবার কারো মতে, স্টিফেন স্পিলবার্গ তার পরবর্তী ইন্ডিয়ানা জোনস-ছবিটির প্রেরণা এ থেকে সংগ্রহ করে ফেলেছেন। সব মিলিয়ে রহস্য জমজমাট।