বন্ধ হয়ে যাওয়া দৈনিক আমার দেশ’র ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহমুদুর রহমান কুষ্টিয়া গিয়েছিলেন তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতার দায়ের করা একটি মানহানি মামলায় জামিন চাইতে। আদালত জামিন দিলেও আগে থেকেই আদালত প্রাঙ্গণে অবস্থান নেয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাত থেকে বাঁচতে পারেননি তিনি। পুলিশের উপস্থিতিতে ছাত্রলীগের হামলায় মাহমুদুর রহমান আহত হয়েছেন। তার শার্ট রক্তে ভিজে গেছে।
হামলার পর থেকেই ফেসবুক সয়লাব মাহমুদুর রহমানের রক্তাক্ত চেহারার ছবিতে। কেউ কেউ ‘রক্তাক্ত বাংলাদেশ’, ‘লজ্জিত বাংলাদেশ’ ইত্যাদি লিখে মাহমুদুর রহমানের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। এমনিতেই তার শিষ্যরা তাকে ‘মজলুম সাংবাদিক’ বলে; এখন থেকে নিশ্চয়ই ‘নির্যাতিত’, ‘নিপীড়িত’ বিশেষণে ঘাটতি পড়ে যাবে। ‘মজলুম সাংবাদিক’ তো দূরের কথা আমি মাহমুদুর রহমানকে সাংবাদিকই মনে করি না। তার মতের সাথে আমার কখনোই মেলে না। মাহমুদুর রহমানকে আমি অপছন্দ করি, ঠিক অপছন্দ নয়; আমি আসলে তাকে প্রচণ্ড ঘৃণা করি। মুক্তিযুদ্ধে অর্জিত অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক ভাবধারায় নিয়ে যাওয়ার দায় অনেকটাই এই মাহমুদুর রহমানের।
ভিন্নমতকে আমি সবসময় স্বাগত জানাই। কিন্তু, মাহমুদুর রহমানকে নয়। আমি মনে করি, মাহমুদুর রহমানের মত ভিন্নমত নয়; অসুস্থমত, উস্কানিমত। এই রকম একজন অসুস্থ চিন্তার মানুষের মুক্তভাবে থাকার কথা নয়। ২০১৩ সাল থেকেই আমি তাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়ে আসছি। তার অপরাধের যে পাহাড় জমেছে, তাতে তার আমৃত্যু কারাগারেই থাকার কথা। মাহমুদুর রহমান যাতে তার অসুস্থ চিন্তা সমাজে ছড়াতে না পারেন, সেটা নিশ্চিত করার দায়িত্ব অবশ্যই সরকারের। মাহমুদুর রহমান নিজেও তখন গ্রেপ্তারের প্রস্তুতি নিয়ে অফিসে থাকতেন। সরকার অনেক দেরি করে মাহমুদুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে। ততদিনে তিনি দেশকে প্রায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মুখে নিয়ে যেতে পেরেছিলেন, সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন।
তবে আমার দুঃখ মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে তার মূল অপরাধগুলো অভিযোগ আকারে আনা হয়নি। তথ্যপ্রযুক্তি আইনে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে জামিনও পেয়ে গেছেন। জামিন পেয়ে আবার তিনি তার অসুস্থ চিন্তা আর সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়াচ্ছেন।
মাহমুদুর রহমানের অপরাধের ফিরিস্তি দেয়ার আগে তার ওপর হামলা এবং রক্তাক্ত মাহমুদুর রহমান প্রসঙ্গে একটু বলে নেই। মাহমুদুর রহমানের রক্তাক্ত মুখ আর রক্তে ভেজা শার্ট দেখে আমার খারাপ লেগেছে, খুবই খারাপ লেগেছে। আমি চাই মাহমুদুর রহমান সারাজীবন কারাগারেই থাকুন। কিন্তু, আদালত তাকে জামিন দিয়েছেন। দেশের প্রচলিত আইনের প্রতি শ্রদ্ধা দেখিয়ে তিনি কুষ্টিয়ার আদালতে জামিন চাইতে গিয়েছিলেন, জামিন পেয়েছেনও। তার মানে, আইনের দৃষ্টিতে এখন মুক্তমানুষ। তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এখন রাষ্ট্রের দায়িত্ব। আদালত চত্বরে, পুলিশের উপস্থিতিতে একজন মানুষের ওপর হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এটা প্রমাণ করে দেশে আইনের শাসন নেই; যেটুকু আছে, তাতে সাধারণ মানুষের আস্থা নেই। সরকারের প্রতি সমর্থন থাকলে, আইনের প্রতি শ্রদ্ধা থাকলে ছাত্রলীগ জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসা একজন মানুষের ওপর হামলা চালাতে পারতো না।
আমি কখনোই আমার শত্রুর ওপরও বিচারবহির্ভূত হামলাকে সমর্থন করি না। আমার দাবি, সরকার আর আদালতের কাছে। তারা দাবি পূরণ না করলে আমি ক্ষুব্ধ হব, কিন্তু আইন হাতে তুলে নেব না। অনেকে বলছেন, মাহমুদুর রহমানকে ছাত্রলীগ মারেনি, তিনি গণরোষের শিকার হয়েছেন। কিন্তু, একজন মানুষকে নিরাপত্তা দেয়া তো পুলিশের দায়িত্ব। পুলিশ তো সেখানে ছিল।
২১ বছর পর আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় এনে শেখ হাসিনা কিন্তু তাঁর বাবা-মা, ভাই-ভাবি, স্বজনের হত্যাকারীদের ক্রসফায়ারে হত্যা করতে পারতেন, গণরোষের মুখে ঠেলে দিতে পারতেন। তিনি কিন্তু তা করেননি। শেখ হাসিনা বিচার চেয়েছেন, প্রতিশোধ নিতে চাননি। বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচারেও কিন্তু শেখ হাসিনা কোনো তাড়াহুড়ো করেননি। আইন চলেছে নিজের গতিতে। বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের বিচার শেষ করে, রায় কার্যকর করতে শেখ হাসিনাকে আবার ক্ষমতায় আসতে হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের পর শেখ হাসিনা শুরু করেছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার। মাহমুদুর রহমানদের শত চেষ্টার পরও বিচার হয়েছে। ট্রাইব্যুনাল-হাইকোর্ট-আপিল বিভাগ-রিভিউ-রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সব ধাপ পেরিয়ে তবেই যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। কই সরকার তো কাউকে ক্রসফায়ারে দেয়নি, গণরোষের মুখে ছেড়ে দেয়নি। সাঈদী তো এখনও কারাগারে নিরাপদেই আছে। তাহলে সেই দেশে একজন ভিন্নমতাবলম্বীর ওপর আদালত প্রাঙ্গণে হামলা হবে কেন? যুদ্ধাপরাধীরা ন্যায়বিচার পেলে তার সমর্থক মাহমুদুর রহমান কেন আইনি সুরক্ষা পাবেন না?
আদালত প্রাঙ্গণে মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা দেশে-বিদেশে সরকারের ভাবমূর্তি বাড়াবে না কমাবে? যারা বোকার মতো হামলাটি চালিয়েছে, তারা কি এই প্রশ্নের উত্তর জানেন? আমি মানি আর না মানি, মাহমুদুর রহমানের হামলা কিন্তু একজন সম্পাদকের ওপর হামলা হিসেবেই চিত্রিত হবে। আওয়ামী লীগ আমলে একজন সম্পাদকের ওপর আদালত প্রাঙ্গণে হামলা হয়েছে, এটা কিন্তু কোনো প্রশংসাপত্র নয়। মাহমুদুর রহমানের রক্তাক্ত ছবি আগামী নির্বাচনে কত বড় পোস্টার হবে, কত আন্তর্জাতিক প্রোপাগান্ডায় রসদ জোগাবে; সে খেয়াল কি হামলাকারী অর্বাচীণদের আছে?
একজন অসুস্থ মানসিকতার সাম্প্রদায়িক মানুষকে কেন দেশে-বিদেশে হিরো বানানোর সব আয়োজন সম্পন্ন হলো? এই হামলা আর এই রক্ত কিন্তু মাহমুদুর রহমানের পাপের পাহাড়কে ধুয়ে দিতে পারে। এখন তিনি সবার সহানুভূতি পাবেন। ছাত্রলীগ কেন সরকারের এত বড় ক্ষতি করল, আমার মাথায় ঢোকে না। দুপুরে ওবায়দুল কাদের সচিবালয়ে বললেন, ছাত্রলীগের বাড়াবাড়িতে প্রধানমন্ত্রী বিরক্ত। তার কিছুক্ষণ পরই ছাত্রলীগ মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালিয়ে বুঝিয়ে দিল, তারা আসলে কারও নিয়ন্ত্রণে নয়। তারা যা ইচ্ছা, তাই করতে পারে।
মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা এবং তার রক্তাক্ত ছবি দেখে অনেকে উল্লসিত হয়েছেন। অনেকে হামলাকারীদের পক্ষ নিয়ে বলছেন, এটা তার পাওনা ছিল, এত কম মারল কেন, পিটিয়ে মেরে ফেলল না কেন ইত্যাদি ইত্যাদি। শুনে আমি শঙ্কিত হয়েছি। আমাদের মনে আইন হাতে তুলে নেয়ার এমন উদগ্র আকাঙ্খা লুকিয়ে আছে, একজন মানুষের রক্ত দেখে খুশি হওয়ার মত নিষ্ঠুরতা আমরা বয়ে চলি; এটাই আমার শঙ্কার মূল কারণ।
চোখের বদলে চোখ নিলে তো দেশটা অন্ধে ভরে যাবে। আজ মাহমুদুর রহমান যে হামলার মুখে পড়েছেন, ভবিষ্যতে তো আপনিও তেমন পরিস্থিতিতে পড়তে পারেন। যে দেশে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের প্রতিও প্রতিহিংসা দেখানো হয়নি, সে দেশে ভিন্নমতের একজন মানুষকে পিটিয়ে মেরে ফেলার প্রকাশ্য সুপারিশ ফেসবুকে করা যায়, এটা অবিশ্বাস্য। সবাই যদি এভাবে আইন হাতে তুলে নেয় বা নিতে উৎসাহ দেয়; তাহলে দেশে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে। সবাই ভাববে দেশে আইনের শাসন নেই। আপনারা কি সেটাই চান?
অনেকে হামলাকারীদের বীর হিসেবে অভিহিত করছেন। অন্য কেউ মাহমুদুর রহমানের ওপর হামলা চালাতে পারেনি, কুষ্টিয়া পেরেছে। আইন হাতে তুলে নেয়া অন্যায়। তবু বিরোধী দলে থেকে এ ধরনের কিছু করলে না হয় আপনি আড়ালে-আবডালে হলেও তাদের সাহসের প্রশংসা করতে পারতেন। কিন্তু, নিজেদের দল ক্ষমতায় থাকলে, পুলিশ নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে থাকলে এ ধরনের অপকর্ম করতে সাহস লাগে না। এটা সাহসের ব্যাপার না, সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কুষ্টিয়া ছাত্রলীগের সভাপতি তো মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এখন তার আদালতের ওপর আস্থা রাখা উচিত ছিল। নিজেই যদি হামলা করে শাস্তি দিয়ে দেবেন, তাহলে আর মামলা করলেন কেন?
আমি চাই মাহমুদুর রহমানকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করা হোক। তার বিরুদ্ধে সত্যিকারের অভিযোগগুলো তুলে ধরে মামলা করা হোক। আমি মাহমুদুর রহমানের বিচার চাই। কিন্তু, হামলা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। যারা এই অপ্রয়োজনীয় হামলা চালিয়ে মাহমুদুর রহমানকে হিরো বানাচ্ছেন আর সরকারকে বিব্রত করছে; তাদেরও খুঁজে বের করা দরকার।
আমি মাহমুদুর রহমানের বিচার চাই। অনেকে জানতে চেয়েছেন, কেন চাই? এই স্বল্প পরিসরে তার বিবরণ দেয়া সম্ভব নয়। তবু ছোট্ট করে একটু মনে করিয়ে দিচ্ছি। উত্তরা ষড়যন্ত্রসহ নানা ষড়যন্ত্রের হোতা এই মাহমুদুর রহমানের গত ৫ বছরের অপরাধ কিন্তু সবার চোখের সামনেই ঘটেছে। নামে বিএনপি হলেও মাহমুদুর রহমান কিন্তু চেতনায় জামায়াত। তাই তো জামায়াতে ইসলামীর প্রচার সম্পাদক তাসনীম আলমকে সাথে করে আমার দেশ কিনে সেটিকে দ্রুত সাম্প্রদায়িকতা আর প্রতিক্রিয়াশীলতার আখড়া বানিয়ে ফেললেন। সংগ্রাম, দিনকাল, ইনকিলাব, নয়া দিগন্ত যা পারেনি; মাহমুদুর রহমানের আমার দেশ দ্রুত সেটি করেছে। শিষ্যদের কাছে মজলুম সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান কিন্তু সম্পাদক হয়েছেন টাকার জোরে।
সিরামিক শিল্পে তার গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে, কিন্তু গণমাধ্যমে তার ভূমিকা শূন্য। সাংবাদিকতা ক্যারিয়ারে যার প্রথম পদ সম্পাদক, তিনি কিনা এখন সাংবাদিকদের বাতিঘর। আহারে সে ঘর বড় অন্ধকার। আমার বিবেচনায়, তার প্রথম অপরাধ হলো সম্পাদকীয় প্রতিষ্ঠানকে কলঙ্কিত করা। সাংবাদিকতাকে ধুলায় মিশিয়ে দেয়া। আপনার পছন্দ-অপছন্দ থাকতে পারে, পক্ষ-বিপক্ষ থাকতে পারে; কিন্তু আপনাকে বস্তুনিষ্ঠভাকে সত্যকে তুলে ধরতে হবে। মাহমুদুর রহমান বরাবরই মিথ্যা, বানোয়াট জিনিসকে সংবাদের মতো করে পরিবেশন করেছেন। অপসাংবাদিকতা, মিথ্যা সাংবাদিকতা, গুজব সাংবাদিকতা, ক্ষতিকর সাংবাদিকতা, উস্কানিমূলক সাংবাদিকতার পথিকৃত পুরুষ মাহমুদুর রহমান। মক্কা শরীফে গিলাফ পরিবর্তনের ছবিকে সাঈদীর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন বলে চালিয়ে দেয়া হয়েছে। সৌদি প্রিন্সের রাজকীয় বাড়িকে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বাড়ি বলে চালানো হয়েছে। তবে তার সবচেয়ে বড় অপরাধ মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পক্ষে সাধারণ মানুষের ঐতিহাসিক গণজাগরণকে হেয় করা। এমনকি বিএনপিও যখন গণজাগরণ মঞ্চ নিয়ে দ্বিধায় ছিল, মাহমুদুর রহমান সেখানে ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শুনতে পেয়েছেন।
শাহবাগের গণজাগরণে কোটি মানুষ এসেছেন। সেখানে সব ধর্ম, বর্ণ, বয়স, শ্রেণী, পেশা, সব বয়সের মানুষ এসেছেন। তাদের মধ্যে কেউ কেউ ধর্মে অবিশ্বাসী নাস্তিক থাকতেই পারেন। গণজাগরণ মঞ্চ তো আর সেখানে আসা লোকদের ধর্মবিশ্বাস পরীক্ষা করেনি। অনেক খুঁজে আমার দেশ আহমেদ রাজীব হায়দার নামে এক ব্লগারের ইসলামবিরোধী লেখা পেল ব্লগে। তিনি থাবাবাবা নামে লিখতেন। ব্লগের ক্ষুদ্র পরিসর থেকে আমার দেশ সেইসব ইসলাম বিরোধী লেখা নিয়ে এল মূলধারার গণমাধ্যমে। এই যেমন আমার দেশ তুলে আনার আগ পর্যন্ত আমি থাবাবাবার লেখা পড়া তো দূরের কথা, নামই শুনিনি। এই এক আহমেদ রাজীব হায়দারকে দিয়ে মাহমুদুর রহমান গোটা গণজাগরণ মঞ্চকেই নাস্তিকদের আন্দোলন বানিয়ে দিলেন। তখন এমন অবস্থা, ব্লগার মানেই যেন নাস্তিক। আহমেদ রাজীব হায়দার যে খুন হলেন, তার উস্কানিদাতা মাহমুদুর রহমান। এরপর দেশের বিভিন্নস্থানে একের পর ব্লগার, লেখক, প্রকাশক খুন হতে লাগলেন। এই প্রত্যেকটি মামলায় উস্কানিদাতা হিসেবে মাহমুদুর রহমানের নাম থাকা উচিত।
গণজাগরণ মঞ্চের কাউন্টার হিসেবে হেফাজতে ইসলামকে মাঠে নামানোর অনেকটা দায় এই মাহমুদুর রহমানের। চালচলন, বেশভুষায় ইসলামের চিহ্ন না থাকলেও মাহমুদুর রহমানই বাংলাদেশে ইসলামের হেফাজতকারী। অথচ বাংলাদেশে ইসলামে সবচেয়ে বড় শত্রু এই মাহমুদুর রহমান। থাবাবাবার যে ব্লগ মাহমুদুর রহমান আমার দেশে ছেপেছেন, তা যদি জনকণ্ঠে ছাপা হতো, তাহলে হেফাজতে ইসলাম জনকণ্ঠকে মাটিতে মিশিয়ে দিতো। ইসলামকে হেফাজত করতে চাইলে সবার আগে মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা উচিত ছিল। অথচ মাহমুদুর রহমান কৌশলে হেফাজতে ইসলামকে ঠেলে দিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের বিরুদ্ধে।
মাহমুদুর লেখায়-বলায় উস্কানি, সামম্প্রদায়িকতার বিষ। ক’দিন আগে তিনি বলেছেন, একাত্তরে নাকি মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল ইসলামী রাষ্ট্র কায়েমের জন্য। তার প্রায় প্রতি কথায় মামলা করার উপাদান থাকে। সরকার অনেক সদয়, মূল অপরাধগুলোতে তার নামে এখনও মামলাই হয়নি। আমি আবারও দাবি জানাচ্ছি, দেশে সাম্প্রদায়িক বিষ ছড়ানোর অভিযোগে, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের চেতনায় আঘাত হানার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে যেন মামলা করা হয়। আদালতের বিচার আমি মেনে নেব। কিন্তু বিচারের বাইরে মাহমুদুর রহমান বা কোনো নাগরিকের ওপরই যেন হামলা না হয়।
প্রভাষ আমিন