বন্ধু বুয়েটে পড়া অবস্থায় ইন্ট্রারে পড়া এক মেয়েকে টিউশনি করাতো। বন্ধু দেখতে হ্যান্ডস্যাম। পড়তো কম্পিউটার সাইন্সে। ছাত্রী তখন তার রঙীন বয়সটা পার করতেছে। সো যা হবার তাই হলো।
সে ইনিয়ে বিনিয়ে বন্ধুকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে বসলো। বন্ধু এই প্রস্তাবের জবাবে শুধু একটা কথায় বলেছিলো “তুমি সবে মাত্র ইন্ট্রারে পড়। কম্পিউটারটা ঠিক মত চালাতে পারো না। তবুও তোমার একটা ল্যাটেস্ট ল্যাপটপ আর একটা ডেক্সটপ আছে।
দুইটা সেমিস্টার পার হয়ে গেল। বাবাকে বলেছি কম্পিউটার সাইন্সে পড়ি। একটা কম্পিউটার দরকার। বাবা দিতে পারেন নাই। বাকিটা তুমি বুঝে নিও। কাল থেকে আর পড়াতে আসবো না।” এরপর সেই ছাত্রীর কি হয়েছিলো জানি না। তবে বন্ধু আজ বেশ সফল একজন মানুষ।
সেদিন এক বন্ধুর হাতের রান্না খেলাম। খুব সুন্দর রান্না করে। মাংসতে এত ঝাল দিছে যে আমার চোখ দিয়ে পানি বের হচ্ছিলো। বন্ধুকে বললাম “এত ঝাল খাস কেন? বন্ধু বলল “ছোট বেলায় খুব অভাব ছিলো। প্রায়ই শুধু মরিচ দিয়ে ভাত খেতাম। সেই থেকে অভ্যাস হয়ে গেছে”। বন্ধুর জবাবটা এমনই ছিলো।
আমি চমকে তাকালাম। নিজের পরিবারের অভাব আর না পাওয়ার গল্প গুলো নিয়ে এত বার এত কিছু লিখেছি যে আর লিখতে ইচ্ছা করে না। আর বর্তমান জেনারেশনের বেশির ভাগই সব পেয়েছির দল (সবাই না)। সো তাদের কাছে এই কচকচানি বিরক্তিকর মনে হতেই পারে।
তবে শুধু এইটুকু বলি “জীবনটাতে টানপোড়ন, স্ট্রাগল, সংগ্রাম এই জিনিস গুলো বড্ড প্রয়োজন। না আমি কারো সামর্থ্য থাকাকে দোষ দিচ্ছি না। সেটা অবশ্যই শুকরিয়া করার বিষয়।
তবে কেউ কেউ চাহিবা মাত্র সবপেয়ে জীবনটাকে বিভিন্ন রং এর সাথে গুলিয়ে ফেলে। তাদের কাছে জীবন মানে একটা সেলফি, চেকইন, ডিজে পার্টি, হ্যাং আউট, বারবিকিউ, কিংবা ভার্চুয়াল কিছু অনূভুতি। তারা কি জানে “বাস্তবটা অত সোজা না। যেখানে একটা স্ট্যাটাস কিংবা দুইটা সেলফি দিয়ে সব কিছু আপডেট রাখা যায় না।
বাস্তব জীবনটাকে আপডেট রাখতে হলে ছুটতে হয়। ছুটতে গিয়ে হোঁচট খেতে হয়। হোঁচট খেয়ে ব্যাথা পেলে চোখে জল আসে। সেই চোখের জল মুছে উঠে দাঁড়িয়ে আবার ছুটতে হয়। নইলে জীবন তোমাকে খরচের খাতায় ফেলে দিবে। তুমি হারিয়ে যাবে সব বেহিসেবের আবর্জনায়।