দেশের বিভিন্ন স্থানে সূর্যের চারপাশে দেখা গেল লাল-নীল ২২ ডিগ্রি বলয় -মাঝখান লাল আর বাইরের অংশ নীল যেন সূর্যের পাশে আরেকটি সূর্য! প্রকৃতির এই খেলা আমাদের মাঝে ব্যাপক কৌতুহল ও বিস্ময়ের সৃষ্টি করে। -অনেক বন্ধুবান্ধব মেসেজ করে জিজ্ঞাসা করেছিল,,পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ঝড় উঠেছে,,সূর্যের চারদিকে লাল নীল আলোর যে বলয় দেখা গেছে এটা কি ছিল। বিজ্ঞানীরা একে ২২ ডিগ্রি হ্যালো বা বলয় বলে। কারণ আমরা যে বৃত্ত দেখি তা ২২ ডিগ্রির ব্যাসার্ধে সূর্যের চারদিকে বৃত্ত তৈরী করে। কিন্তু এই বৃত্ত তৈরীর পিছনে কারণ কি?
সাধারণত সূর্যের আলো মেঘের মধ্যে জমে থাকা প্লেট আকৃতির ক্রিস্টাল বরফে প্রতিফলিত হওয়ার কারণে এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়। সূর্যের আলো যখন পৃথিবীর দিকে ধাবিত হয় তখন যদি তা বাতাসে ভেসে বেড়ানো আইস ক্রিস্টালে পরে তখন তা ২২ ডিগ্রি কোণে প্রতিফলিত হয়। ফলে সূর্যের চারদিকে ২২ ডিগ্রি কোণ করে প্রতিফলিত আলো বলয়ের সৃষ্টি করে। যার জন্যই এই বলয় দেখতে পাওয়া যায়। এছাড়া আকাশের উপরে এই বলয় কখনো হতে পারে রঙ্গিন আবার হতে পারে সাদা রঙের বলয়ও। মাঝখানে সূর্য থাকবে আলোকচ্ছটার মত। তাই মনে হয় বুঝি দুটি সূর্য একসাথে পাশাপাশি অবস্থান করছে।সাধারণত সমস্ত মেঘ বায়ুমণ্ডলেএ দেড় কি:মি এর ভিতর হয়। কিন্তু এটি বায়ুমণ্ডলের ৫ থেকে ১০ কি :মি ভিতরে হয়। এই বলয়ে আকাশে পালকের মত পাতলা স্বচ্ছ্ব ক্রিস্টাল মেঘ জমে থাকে। আকাশ মোটামুটি পরিষ্কার থাকে। এটি শীত প্রধান দেশে খুব সাধারণ ঘটনা। কিন্তু আমাদের দেশে এটি বিরল ঘটনা। এটি কবে ঘটবে তা আগে থেকে বলাও প্রায় অসম্ভব। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রথম এই লাল নীল বলয় দেখা গেল। এটি শীত প্রধান দেশে খুব স্বল্প সময়ের জন্য হলেও আমাদের দেশে ১১.৩০ থেকে ১২.৩০ পর্যন্ত প্রায় ১ ঘন্টা স্থায়ী ছিল যা আরও বিরল ঘটনা। আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের মতে এটি বড় কোন ঝড়ের পূর্বাভাস। পুরাতন আবহাওয়া বিশ্লেষণ করলে বলা যায় -সূর্যের চারদিকে বৃত্তঘর,,তার মানেই আসিবে প্রবল বৃষ্টি ঝড়। হেডলাইন – বাংলাদেশের আকাশে ২২ ডিগ্রি হ্যালো বা বলয় দেখ গেল? বা ২২ ডিগ্রি হ্যালো বা বলয় কি?
লেখক : শামীম হোসেন মিজি, সমাজকল্যাণ সম্পাদক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গবেষণা সংসদ। বি.এস এবং এম.এস ( ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়)