চলেই গেলেন সেই জারিন তাসনিম রাফা!


আদ দ্বীন মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষার্থী জারিন তাসনিম রাফা মারা গেছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩ টায় মারা যান বলে রাফার ভাই রিদওয়ানুল ইসলাম অর্ণব সোশ্যাল মিডিয়া ফেসবুকে জানিয়েছেন।

তিনি দিল্লি থেকে লিখেছেন, ‘আমার বোন জারিন তাসনিম রাফা আজ রাত ৩.৩০ মিনিটে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সবাই ওর জন্য দোয়া করবেন। আর কিছু লিখতে পারছি না।’

গত ২৮ জুন দিল্লির বি এল কাপুর সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে রাফার বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট সম্পন্ন হয়। এরপর রাফার শরীর ভালো যাচ্ছিল না। রাফার মা জানিয়েছিলেন, ‘আমার মেয়ের অবস্থা খুব খারাপ। আমার মেয়েটা ট্রান্সপ্ল্যান্ট হবার পর থেকে যে যুদ্ধ করে যাচ্ছে তা নিজ চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবেন না। শরীরের সব জায়গায় ওর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। খাওয়া বন্ধ হয়েছে বহু আগেই। সবার কাথে ওর জন্য দোয়া কামনা করছি।’

গত ২৪ মে কালের কণ্ঠ অনলাইন সংস্করণে ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে বাঁচান, বুকে টেনে নেন’ মেডিক্যাল ছাত্রীর আকুতি শিরোনামে রাফাকে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। রাফাকে বাঁচাতে প্রয়োজন ৯০ লাখ টাকা। প্রাথমিক পর্যায়ে রাফার চিকিৎসায় নিঃস্ব হয়ে যায় রাফার পরিবার। দেশবাসী, চিকিৎসক মহল ও প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন রাফা।

রাফা দেশের চিকিৎসক কমিউনিটির উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, ‘আমার একটা প্রশ্ন পুরো ডাক্তার সমাজের কাছে! একজন ডাক্তার মারা যাচ্ছে টাকার অভাবে, আপনারা চেয়ে চেয়ে দেখবেন? দেশের লক্ষাধিক প্রফেসর, ডাক্তাররা এগিয়ে আসলে কি আমি বাচঁতে পারতাম না? মৃত্যুর আগে এই প্রশ্নটা রেখে গেলাম।’

রাফার এই বক্তব্যে টনক নড়ে সকলের। দেশের প্রায় সবগুলো মেডিক্যাল কলেজ ও তাঁদের শিক্ষার্থীরা এগিয়ে আসতে শুরু করে এবং খুব অল্প সময়ে চিকিৎসার ৯০ লাখ টাকা উঠে যায়।

এরপরই ততাকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসা শুরু হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাঁকে বাঁচানো গেল না। বোনম্যারো ট্রানপ্ল্যান্ট ভালোভাবে সম্পন্ন হলেও শরীরের অভ্যন্তরে সর্বত্রই রক্ত ক্ষরণ শুরু হয়ে হয়, ফলে অবস্থার অবণতি ঘটতে থাকে।