নিজের বাবা মা কে একসঙ্গে করতে চাওয়া ধ্রুব ও লুব্ধকের হাতে সময় আছে মাত্র ২৬ দিন!

কিছুদিন আগে একটি বিষয় সারাদেশে সোরগোল ফেলে দিয়েছিল। দুটি শিশু তার বাবা আর মাকে আলাদা না হতে দিয়ে এক সঙ্গে করার জন্য অনেক আকুতি মিনতি করেছিল।
ধ্রুব (১২) ও লুব্ধকের (৯) বাবা-মাকে ১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত। তালাক হয়ে যাওয়ার পরও সন্তানদের কথা বিবেচনা করে নিজেদের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারে মেহেদী হাসান ও কামরুন নাহার মল্লিকা আবার এক হতে চান কিনা সেবিষয়ে আদালতকে জানাতে হবে তাদের। এই জন্যে ধ্রুব ও লুব্ধকের বাবা-মায়ের হাতে আদালতের দেওয়া সময় আছে মাত্র ২৬ দিন!
বুধবার (৪ জুলাই) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টে বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শুনানি শুরুর পরই আইনজীবী তাপস কান্তি বল শিশু দুটির বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্কোন্নয়নের বিষয়টিও আদালতকে অবহিত করেন। কামরুন নাহারের আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল শিশুদের বাবা-মায়ের মধ্যে সম্পর্কন্নোয়ন হয়েছে বলে জানান। এরপর আদালত তাদের ১ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেন। একইসঙ্গে এই সময়ের মধ্যে তাদের সম্পর্কের অগ্রগতি সম্পর্কে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

মামলার সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা বলেন, কামরুন্নাহার মল্লিকা ও মেহেদী হাসান ২০০২ সালে বিয়ে করেন। এরপর তাদের কোল জুড়ে আসে দুটি ছেলে সন্তান। বর্তমানে বড় ছেলে মিয়া মো. সালিম সাদমান ধ্রুবর বয়স ১২ বছর ও ছোট ছেলের মিয়া মো. সাদিক সাদমান লুব্ধকের বয়স ৯ বছর। তারা যথাক্রমে চতুর্থ ও দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র। তবে দীর্ঘদিনের দাম্পত্য কলহের জেরে ২০১৭ সালের ১২ মে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর থেকে শিশু দুটি বাবার তত্ত্বাবধানে তার ফুফুর কাছেই থাকতো।

এরপর গত ২৯ মে দুই সন্তানকে নিজের কাছে চেয়ে রিট দায়ের করেন তাদের মা কামরুন নাহার। সে রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দুই সন্তানকে কেন মায়ের হেফাজতে দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। একইসঙ্গে ওই দুই শিশুকে আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও শিশু দুটির বাবাকে নির্দেশ দেন। সে নির্দেশ অনুসারে তাদের ২৫ জুন আদালতে হাজির করা হয়।

দীর্ঘ এক বছর পর মা’কে দেখতে পেয়ে ২৫ জুন সন্তানরা মায়ের কাছে ছুটে যায়। ডিভোর্স হওয়া বাবা-মা’কে আবার এক হয়ে যেতে বলে শিশুদুটি আদালতেই কান্নায় ভেঙে পড়ে। তাদের কান্নায় এজলাশের পরিবেশও আবেগঘন হয়ে ওঠে। এসময় সন্তান দুটি বারবার তাদের বাবা-মা’কে একে অপরের কাছে ‘স্যরি’ বলার অনুরোধ জানায়। এমনকি বাবা-মাকে মিলিয়ে দিতে বিচারপতিদের কাছেও কান্নাজড়িত কন্ঠে আরজি জানায় তারা।

এরপর আদালত তার আদেশে বলেন, ৪ জুলাই পর্যন্ত শিশু দুটি মায়ের হেফাজতে থাকবে। তবে এই সময়ে পিতা শিশু দুটির দেখাশোনা করার সুযোগ পাবে।