দলের নাম ভাঙ্গিয়ে ঢাকায় অবস্থানরত নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরীর বিরুদ্ধে চাকরি, বদলি ও ব্যবসার নামে চাঁদাবাজি করার অভিযোগ উঠেছে। ‘গণভবনের দুয়েকজন কর্মচারির সাথে সেলফি প্রদর্শনের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষদের কাছে এহেন চাঁদাবাজির জন্য কখনোই দলগতভাবে আওয়ামী লীগকে দায়ী করা যাবে না কিংবা সে দায় নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ নেবে না’ বলে সংগঠনের প্রচার সম্পাদক মো. হাসানের বিলি করা এক বিবৃতিতে গণমাধ্যমকে অবহিত করা হয়েছে।
চলতি সপ্তাহে ঐ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘যিনি সারা বছর বাংলাদেশে অবস্থান করে দলের পদ-পদবি জাহির করে তদবির বাণিজ্য করেন, তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সক্রিয় কোন কোন কর্মকর্তা সম্পর্কে উল্টো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বক্তব্য দিয়েছেন। যার নিন্দা জানানোর ভাষা আমাদের নেই। কারণ ইমদাদ চৌধুরীর মত হাইব্রিডদের পক্ষেই এমন নোংরামি সম্ভব।’
বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, ‘যে ব্যক্তি বিশেষ মতলবে ছাত্রদল নেতা সাইফুল ইসলামকে মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও বহুল আলোচিত নিউইয়র্কে যুদ্ধাপরাধীদের একটি মিডিয়ার কর্মকর্তাকে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নিয়োগ করতে পারেন তার পক্ষে সবকিছু সম্ভব। এসব কার্যকলাপের জন্য এমদাদ চৌধুরী মহানগর আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটি কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত।’
‘শেখ হাসিনার অনুমোদন পাবার পর নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের দুই কর্মকর্তা মোঃ রফিকুর রহমান ও আইয়ুব আলী আজ অবধি কার্যকরী কমিটির কোন মিটিংয়ে উপস্থিত হননি। স্বাভাবিক নিয়মেই এরা সংগঠনের পদ-পদবি হারিয়েছেন। অথচ এ দু’জনকে নিয়ে এমদাদ চৌধুরী মহানগর আওয়ামী লীগ করছেন রাজধানী ঢাকায় অবস্থান করে। এছাড়া সাবেক যুগ্ম সম্পাদক আইয়ুব আলী মহানগর আওয়ামী লীগের নাম ভাঙ্গিয়ে ইমদাদ চৌধুরী সাথে এক হয়ে ঢাকায় বিভিন্ন তদবির বাণিজ্য করে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে প্রশ্নবিদ্ব করছেন’-বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবৃতিতে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগকে ধ্বংসের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন ঢাকায় বসে। এমদাদ চৌধুরী গণভবন, পুলিশ বিভাগ ও বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের চাকরি দেওয়া ও পাওয়ার প্লান্টের শেয়ার দেওয়া নাম করে প্রবাসীদের কাছ থেকে নানা সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন। পরবর্তী কার্যকরী কমিটির মিটিং-এ আলোচনা সাপেক্ষে এ ব্যাপারে এমদাদ চৌধুরী বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে এই বিবৃতিতে।
অতি সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিউইয়র্কে এসেছিলেন। তার সঙ্গী ছিলেন এই এমদাদ-আইয়ুবরা। পুলিশের আইজিপি নিউইয়র্ক সফরকালেই এ দু’জন সাথে এসেছিলেন বলে মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা উল্লেখ করেন। ‘অর্থাৎ পদস্থ কর্মকর্তাদের আশপাশে ঘুরঘুর করে তারা চাঁদাবাজি এবং তদবির বাণিজ্যের পথ সুগম রাখেন’-অভিযোগ মহানগর আওয়ামী লীগের। এমনকি শেখ হাসিনার অনুমোদিত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কার্যকরী কমিটির মিটিংয়ের পাল্টা কর্মসূচিতেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নিয়ে হাজির হয়েছিলেন এই এমদাদ চৌধুরী।
এমদাদের মত সুযোগ-সন্ধানীরা আওয়ামী লীগকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আখের গুছিয়ে নিচ্ছেন এবং এসব লোকের কারণেই। নাম গোপন রাখার স্বার্থে তারা এ সংবাদদাতাকে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকত্ব রয়েছে এমন দুয়েক কর্মকর্তা সভানেত্রীর সুনজরে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করে কাজের সুযোগ পেয়েছেন। এরাও আস্কারা দিচ্ছেন এমদাদ চৌধুরীর মত লোকজনকে। এ ব্যাপারে এখনই সতর্ক না হলে পুরো দায় প্রকারান্তরে আওয়ামী লীগকে বহন করতে হবে’।
এসব অভিযোগ সম্পর্কে এমদাদ চৌধুরীর বক্তব্য জানার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু ঢাকায় তাকে মোবাইল ফোনে পাওয়া যায়নি এ সংবাদ লেখা পর্যন্ত।