শহুরে তরুণীরা এখন আরো বেশি সচেতন ফ্যাশন ট্রেন্ড, কালার ফোরকাস্টিং বা প্যাটার্ন বা ফেব্রিক বৈচিত্র্য বিষয়গুলো জানতে। ক্রেতা চাহিদার প্রভাব তাই দেশীয় রেডি টু ওয়ার ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোতেও। এসব ব্র্যান্ডের দেশীয় ডিজাইনে স্বভাবতই পাশ্চাত্য কাট অনুসরণ এখন বেশ লক্ষণীয়।
এদিকে, ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়ার বদৌলতে ভারত এবং পাকিস্তানি ফ্যাশনও এখন প্রকট এদেশীয় ডিজাইনে। তাই ফেব্রিক বৈচিত্র্য থেকে প্যাটার্ন বা ডিজাইন এখন সবকিছুতে কনটেম্পরারি টুইস্ট দিতে যেন উত্সাহী ফ্যাশন ট্রেন্ডের প্রতিনিধিরা। নিরীক্ষা এখন বুনন, নকশা, প্রিন্ট, ম্যাটেরিয়াল আর এমবেলিশমেন্ট নিয়েও। স্যোশাল মিডিয়ার জন্য তরুণীরা এখন সচেতন বেশি। তাই প্রতিনিয়ত পরিবর্তন আসছে রুচি ও ফ্যাশনে। বর্তমানে মেয়েদের পোশাকে মিক্স অ্যান্ড ম্যাচের আধিপত্য। ফলে পোশাকের ধরন বদলেছে। এখন আর থ্রিপিস কেউ পরতে চান না। এই প্রবণতা মূলত সিঙ্গল পিস আর সিঙ্গল কুর্তি বা কামিজকে জনপ্রিয় করেছে। এগুলোর কাট আর প্যাটার্ন আলাদা। পরাও সুবিধা। প্যান্ট, টাইটস, সালোয়ার, জিনস, ট্রাউজারে মানিয়ে যায়। ফলে এই ওয়ান পিস এখন জনপ্রিয় এবং ফ্যাশনেবল।
ট্রেডিশনাল এবং পাশ্চাত্য পোশাকে নিজেদের গর্জাস লুকে উপস্থাপনার জন্য উজ্জ্বল রঙের এধরনের পোশাক থাকছে তাই আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজে। সবই সমকালীন ফ্যাশন প্যাটার্ন ও কালার প্যালেট অনুসরণ করে তৈরি। আইকনিকের উদ্যোক্তা তাসলিমা মলি জানান, টপস, কেপ বা কুর্তিতে কাট প্যাটার্নের সৌন্দর্যের পাশাপাশি হালকা এমব্রয়ডারি, প্রিন্টের ভ্যালু অ্যাডিশনও থাকছে আইকনিকের নতুন কালেকশনে। গ্রীষ্মকেন্দ্রিক এসব ট্রেন্ডি কালেকশনগুলোতে নেক ও স্লিভেও থাকছে বৈচিত্র্য। এসব পরা যায় অফিসে ক্লাসে এমনকি ইনফরমাল পার্টিতেও। স্টোরের পাশাপাশি অনলাইনেও অর্ডার দেওয়া যাবে এসব পণ্য।
ফ্যাশনে ফোকাস এখন গ্রীষ্ম
ঈদ পরবর্তী ডিজাইন, ফ্যাশন ব্র্যান্ডগুলোতে যা আসছে সবই গ্রীষ্মকেন্দ্রিক। এসময়টায় ক্যাজুয়াল পোশাক-আশাক নির্ভর করবে আপনার রুচি, শারীরিক গঠন এবং বয়সের উচ্ছলতার উপর।
পোশাকের প্যাটার্নেও থাকবে ভিন্নতা। যেমন—ফিস কাট, রাউন্ড কাট, ডাবল লেয়ার ও স্ল্যাশড প্যানেলসহ স্লিডেড কিছু প্যাটার্ন। তবে এক্ষেত্রে পোশাকের প্যাটার্ন হবে সাদামাটা। এ বছরের শুরু থেকেই টার্সেল এবং ফ্রিলের ব্যাপক ব্যবহার দৃশ্যমান এবং এবার ঈদের পরও খুব একটা ব্যতিক্রম হবে না। ফ্যাশন টপ, ড্রেস, ক্রপ টপের ব্যবহার বাড়তি আনন্দ যোগ করবে পোশাকের উপস্থাপনায়। থিম নির্ভর কাজ করে এমন যুগোপযোগী ব্র্যান্ডগুলো নিজেদের থিম অনুযায়ী মোটিফ ব্যবহার করে কাপড়ে প্রিন্ট, এমব্রয়ডারি, কারচুপি আর হাতের কাজ দিয়ে তৈরি করছে আধুনিক দৃষ্টিনন্দন দেশীয় পোশাকের কালেকশন। প্রিন্টের মোটিফে গত বছরের মতোই এবারো ফ্লোরাল প্রিন্ট ও ভিনটেজ আউটলাইন থিমে চলবে। এ ছাড়া কাপড়েও থাকছে ভিন্নতা। টপসে দেখা যাচ্ছে পুরোনো নানা ডিজাইন। বিগত দিনের পাফ ও সিল্ডসের চল আবারও দেখা যাচ্ছে ফ্যাশনে। সঙ্গে বেল, রাফ্লড, বেলুন ডিজাইন তো আছেই। সত্তরের মতো ফ্রন্ট নটের টপস এবং টপসের চারপাশে রাফ্লডের খেলা তো থাকছেই। নানান ধরনে প্যাঁচানো কিমোনো ডিজাইনের টপস বেশি দেখা যাচ্ছে। টপসে এক রঙ বা পোলকা ডট বেশি পছন্দ করছেন তরুণীরা। কারণ, এগুলো দিচ্ছে পারফেক্ট ভিনটেজ লুক। কালার স্ট্রাইপ, গিংহ্যাম চেক ও প্লেইড—এসব চলছে পাল্লা দিয়ে।
রঙ
এখন গ্রীষ্ম। হালকা রঙের কুর্তিই এখন মানানসই। রাতের অনুষ্ঠানের জন্য গাঢ় রঙই আদর্শ। রঙ বাছাইয়ে সামার কালার প্যালেট অনুসরণ করাই শ্রেয়। কিছু রঙ আছে যেগুলো ক্ল্যাসিক; যেমন—সাদা, কালো, সোনালি, লাল। এগুলো কুর্তিতে বেশ মানানসই। তবে এখনকার ট্রেন্ডি রঙ প্যাস্টেল, পিচ ইত্যাদিও এই পোশাকে সমকালীনতা দেবে। কুর্তি সাদামাটা হলে দোপাট্টা একটু গর্জাস হতে পারে। জমকালো কুর্তিতে উল্টোটা। দোপাট্টা বেছে নিতে পারেন জামদানি, লিনেন, সুতি ও জর্জেট থেকে। কেউ কেউ কেপ পরেও গর্জাস ভাবে নিজের উপস্থিতিকে জানান দিচ্ছেন। তবে রঙিন প্রিন্ট এবারও দাপিয়ে বেড়াবে।
কোথায় পাবেন
ডিজাইন ভেদে সিঙ্গেল কুর্তির জন্য ভালো হবে নির্দিষ্ট কিছু ডিজাইন ব্র্যান্ড স্টোর। যদি ট্রেন্ডে থাকতে চান তবে যেতে পারেন এক্সট্যাসি, আইকনিক ফ্যাশন গ্যারেজ, ক্যাটস আই, প্রাইড গার্লস, মার্জিন বাই অঞ্জন’স, ইয়োলো, টুয়েলভ, সেইলরে। কুর্তি বা টপসের দাম ৯০০ থেকে ৪ হাজার টাকার মধ্যে রয়েছে।
পোশাক ও ছবি