রাত পোহালেই ভোট, আলোচনায় ‘বাতাস’

রাত পোহালেই ভোট। অপেক্ষায় গাজীপুরের ভোটাররা। তবে ভোটের উৎসব হবে নাকি খুলনা সিটির মতো ভোটের নতুন কোনো নজির তৈরি হবে- এমন প্রশ্ন মানুষের মুখে মুখে। শেষ মুহূর্তে নানা শঙ্কা প্রার্থী ও তাদের কর্মী-সমর্থকদের মাঝে। যদিও শুরু থেকেই ফুরফুরে মেজাজে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। বিএনপির মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার গতকাল শেষ মুহূর্তে জানিয়েছেন নির্বাচনী হাওয়া তার কাছে ভালো টেকছে না।
তার মতো অনেকে বলছেন, গত কয়েক দিনে যে হাওয়া বইছে তাতে সুষ্ঠু নির্বাচনের বিষয়ে আশ্বস্ত হতে পারছেন না। তাই শেষ পর্যন্ত ভোটের হাওয়া কেমন থাকে তার ওপরই নির্ভর করবে ভোটের হিসাব। গতকাল ছিল গাজীপুরে নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন। এত দিন না জমলেও গতকাল মেয়র ও কাউন্সিলর প্রার্থীদের শেষ মুহূর্তের প্রচারে সরগরম ছিল পুরো নগর। আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের পক্ষে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মিছিল-শোডাউনসহ ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়। সদ্য নির্বাচিত খুলনা সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারাও আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণায় নামেন।

পরস্পরকে দোষারোপ করে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছেন প্রধান দু’দলের প্রার্থী। এদিকে গতকাল থেকে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছেন রিটার্নিং অফিসার ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আজ কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার, বাক্স, সিলসহ নির্বাচন সামগ্রী পৌঁছে দেয়ার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রিটার্নিং অফিসার। বিকালে গাজীপুরে নামানো হয় ২৯ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার। মাঠে নেমেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবে গ্রেপ্তার, হামলা ও হয়রানির আতঙ্কে বিএনপি নেতাকর্মীরা। আর সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে বিরাজ করছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব।

বিকাল ৪টা ৯ মিনিট। গাজীপুরের প্রাণকেন্দ্র রাজবাড়ী রোড। নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে মিছিল-স্লোগান নিয়ে রেলগেট থেকে জাহাঙ্গীর আলমের নৌকা প্রতীকের একটি শো-ডাউন ডিসি অফিসের দিকে যায়। আগাম প্রতিশ্রুতি দেয়ার নিয়ম না থাকলেও বড় ইলেক্ট্রনিক ডিজিটাল পর্দা সম্বলিত একটি গাড়ি জাহাঙ্গীরের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকা প্রদক্ষিণ করে। মিনিট দু’য়েক পরে আরো একটি শো-ডাউন মিছিল-স্লোগান নিয়ে সে দিকে এগোয়। তার আগে ব্যানার সংবলিত একটি ঘোড়ার গাড়ি একই সড়ক প্রদক্ষিণ করে। একই সঙ্গে কয়েক মিনিট পর আরো একটি মিছিল। ডিসি অফিসের দিকে তিনটি মিছিল একাকার হয়ে বড় শো-ডাউনে রূপ নিয়ে আবার তা রেললাইনের দিকে ফিরে আসে। সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত এর আগে ও পরে নৌকা প্রতীকের আরো কয়েকটি মিছিল-স্লোগান দেখা গেছে। একই সময়ে আরো বেশ কয়েকজন কাউন্সিলর প্রার্থীর মিছিল-স্লোগান, মাইকিং ওই এলাকা অতিক্রম করলেও দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিএনপি প্রার্থীর কোনো মিছিল-স্লোগান দেখা যায়নি। ব্যাপক মাইকিংয়ের ভিড়ে দুপুরের দিকে একবার বিএনপির মাইকিং কানে আসে। একের পর এক নৌকা প্রতীকের মিছিল-স্লোগানে পুরো এলাকা সরগরম হয়ে উঠলেও ওই সময় একই সড়কে জেলা বিএনপি কার্যালয় ছিল প্রায় নেতাকর্মী শূন্য। দুপুরের দিকে ওই কার্যালয়ে গেলে দেখা হয় বিএনপি প্রার্থীর কয়েকজন নেতাকর্মী ও সম্ভাব্য পোলিং এজেন্টের সঙ্গে। এর মধ্যে রয়েছেন, বিএনপি নেতা মো. কফিল উদ্দিন, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের লক্ষীপুরার এক কেন্দ্রের ধানের শীষ প্রতীকের সম্ভাব্য পোলিং এজেন্ট মো. জাহিদুল ইসলামসহ কয়েকজন নেতাকর্মী। তারা কারো পকেটে বা বুকে দলীয় প্রার্থীর প্রতীক বা কোনো কার্ডও ধারণ করেননি। কফিল ও জাহিদসহ উপস্থিত নেতাকর্মীরা বলেন, ঘরে ঘরে অভিযান চালিয়ে আমাদের সক্রিয় নেতাকর্মী ও সম্ভাব্য এজেন্টদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। কেন্দ্রে না যেতে হুমকিধমকি দেয়া হচ্ছে। এখন আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে প্রচার-প্রচারণা চালালে আমাদের চিহ্নিত করা হবে। এরপর রাতে অভিযান চালিয়ে আটক বা গ্রেপ্তার করা হতে পারে। এমন পরিস্থিতি এড়াতেই প্রকাশ্য প্রচারণা থেকে আমরা বিরত রয়েছি। দলীয় প্রতীকও ধারণ করছি না। ‘এমন লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডে’ আমরা নির্বাচন করছি।

বিকাল ৪টা ১৮ মিনিট। জয়দেবপুর বাজার। নৌকা প্রতীকের মিছিল মসজিদ রোড থেকে শিববাড়ী কালীমন্দিরের দিকে যেতে দেখা যায়। এরপর পর ঘুড়ি প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী কাউন্সিলর প্রার্থী হান্নান মিয়া হান্নুর একটি মিছিলও একই এলাকা প্রদক্ষিণ করে। একই সময় কৃপাময়ী কালী মন্দির প্রাঙ্গণে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ যৌথভাবে সমাবেশ করে। বিকাল ৪টা ৪৫ মিনিটের দিকে ওই সমাবেশে যোগ দিতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন করে অন্তত ডজনখানেক গাড়ির বহর নিয়ে তাতে যোগ দেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম।

এক বিএনপি কর্মী নাম প্রকাশ না করে বলেন, সরকার দলীয় প্রার্থীর নেতাকর্মীরা আমাদের কেন্দ্রে যেতে না দিতে নানা অপকৌশল করছে। গেলেও কেন্দ্র থেকে বের করে দিয়ে তারাই বিএনপি প্রার্থীর প্রতীক ধারণ করে আমাদের এজেন্ট সেজে কারচুপি করার পরিকল্পনা নিচ্ছে। সরকারদলীয় বহু নেতাকর্মী সেই ঘোষণাও দিচ্ছে। তার এমন অভিযোগের প্রমাণ চাইলে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার রাতে রেল গেটে একটি সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর সমর্থকরা। সেখানে গাজীপুর মহানগর জাতীয় শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইব্রাহিম খলিল তার কর্মীদেরকে কেন্দ্রে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে গায়ে পড়ে ঝগড়া করে ইস্যু সৃষ্টির পর মারধর করে বের দেয়ার পরামর্শ দেন।

এ বিষয়ে ইব্রাহিমের কাছে জানতে চাইলে তিনি তা অস্বীকার করেন। বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। আমি এসব বলিনি। কেন্দ্রে আমাদের এজেন্ট থাকবে। বিএনপি তো কেন্দ্রের জন্য এজেন্টই পাচ্ছে না।

এর আগে দুপুরের দিকে দিরাশ্রম এলাকায় কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর প্রার্থীর একাধিক মিছিল চোখে পড়ে। গাজীপুর সদরে দুপুরে পিকআপ ভ্যানে চড়ে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মো. নাসির উদ্দিন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) প্রার্থী কাজী রুহুল আমিন কাস্তে প্রতীক নিয়ে প্রচারণা চালান টঙ্গী, বড়বাড়ী, বোর্ড বাজার, বাইপাস, চৌরাস্তা ও পূবাইল এলাকায়। এসব এলাকায় নেতাকর্মীরা পথসভা করেন। লিফলেট বিতরণ করেন। তখন সিপিবি কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক কমরেড শাহ আলম, সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাফি রতন, জেলা সভাপতি জয়নাল খান, দুলাল সিকদারসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শুধু অভিযোগ করেন, ভোট চান না: জাহাঙ্গীর
গাজীপুর সিটি নির্বাচনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, বিএনপি প্রার্থী হাসান সরকার শুধু অভিযোগের পর অভিযোগই করে যাচ্ছেন, ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন না। রোববার নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিনে বিকালে এক প্রেস ব্রিফিং এ জাহাঙ্গীর আলম নির্বাচনে তার মূল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনপির হাসান উদ্দিন সরকার সম্পর্কে এ মন্তব্য করেন। বিকালে তিনি সুসজ্জিত নৌকার বহর নিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে শেষ মুহূর্তে গণসংযোগ করেন। এর আগে প্রচারের শেষ দিনের সকালে নগরের শালনায় দিনের প্রথম পথসভা করেন নৌক প্রতীকের প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। এ পথসভায় তিনি বলেন, নির্বাচনে নৌকার পক্ষে একটি জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। গাজীপুরের মানুষ উন্নয়নের পক্ষে ভোট দেবেন। গাজীপুরের মানুষ আর অনুন্নয়ের পথে থাকতে চান না। তিনি বলেন, প্রচারে গিয়ে দেখেছি নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের স্বতঃস্ফূর্ত মনোভাব। আগে গাজীপুর উন্নয়ন বঞ্চিত হয়েছে। এ বঞ্চনা অবসানের সময় হয়েছে। এরপর তিনি চৌরাস্তাসহ বিভিন্ন স্থারে পথসভা করেন। এই পথসভাতেও অসংখ্য মানুষ যোগ দেন। সভায় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এ অঞ্চলেই আমি বেড়ে উঠেছি। নেতা হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। এখানকার মানুষের ভোট পাওয়া আমার অধিকার। তাদের ভালোবাসাতেই আজ আমি জাহাঙ্গীর আলম হয়েছি। আপনাদের জন্যই সত্তর বছরের দলটির মেয়র প্রার্থী আমি হতে পেরেছি। আপনারা নিশ্চয়ই আমার সম্মান রাখবেন। তিনি আরো বলেন, এখন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ সরকার। নির্বাচিত হলে তার পরিকল্পনা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরে তা বাস্তবায়নের কথা তিনি বলবেন।

দুপুরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করেন জাহাঙ্গীর আলম। তিনি আবারও উন্নয়নের স্বার্থে তাকে নির্বাচিত করার জন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে জনগণের কাছে আবেদন করেন। জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বিএনপির প্রার্থী হাসান সরকার এখন ভোট না চেয়ে অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন। তিনি গাজীপুরে একাধিক ভোট ডাকাতির নির্বাচন করেছেন। অতীতে ভোটের জন্য রক্তাক্ত করেছেন মানুষকে। আমি চাই না এখানে কোনো রক্ত ঝরুক। তিনি আরো বলেন, এ যাবৎ নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের একটি উদাহরণ বিএনপির প্রার্থী দিতে পারবেন না। তিনি আমাকে, আমার পরিবার, দল ও প্রতীককে যে ভাষায় আক্রমণ করে কথা বলেছেন তা তার মতো সিনিয়র ব্যক্তির কাছে আশা করি না। আমাদের প্রিয় নেতা সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার সাজা হয়েছে হাসান সরকারের ভাই নুরুল ইসলাম সরকারের। আদালত তাকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছেন। এই খুনি পরিবার এখন মানুষের কাছে ভোট চাইছে। এসময় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ও মহানগর সভাপতি মো. আজমত উল্লাহ খান উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনের পর জাহাঙ্গীর আলম গাজীপুর শহরের শিববাড়ী এবং আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে, টঙ্গী মিলগেট, গাছা বাজার ও বোর্ডবাজার এলাকায় পথসভায় বক্তব্য দেন।

ন্যূনতম সুষ্ঠু ভোট হলে জয়ী হবো: হাসান সরকার
বিএনপি মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার নির্বাচনী প্রচারণায় না নেমে সকালে টঙ্গী থানা বিএনপির প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন ডেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও তাদের নেতাদের আচরণবিধি লঙ্ঘনের নানা অভিযোগ তুলে বলেন, ন্যূনতম সুষ্ঠু নির্বাচন হলেও সম্মানজনক ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবো। এ সময় তিনি আরো বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের গণহারে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এজেন্টদের হুমকি দেয়া হচ্ছে। পুলিশ বিএনপির নেতার বাড়ি গিয়ে বলছে, জাহাঙ্গীরের সঙ্গে দেখা করতে নয় তো এলাকা ছেড়ে দিতে। আমাদের এজেন্ট, নেতাকর্মী এমনকি ভোটারদের জীবনেরও কোনো নিরাপত্তা নেই। তিনি আরও বলেন, নৌকার প্রার্থী পুলিশের গাড়িতে করে ঘুরছে। এটা অনেক পত্রিকায় ছবি এসেছে। এসময় তিনি তারা দলীয় নেতাকর্মীদের ও ভোটারদের উদ্দেশ্যে বলেন, ভোটের দিন যত ঝড়-বৃষ্টি ও বাধা থাকুক না কেন, আপনারা কেন্দ্রে ভোট দিতে আসবেন। নিজের জীবন দিয়ে হলেও ভোট কারচুপি ঠেকাবো। তিনি বলেন, নির্বাচনে অংশ নিয়েছি, আছি এবং থাকবো। তবে সরকারের কাছে বলতে চাই আমি নিজেও একজন মুক্তিযোদ্ধা। সরকার মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যে দেশ গড়তে চায়, সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন দিয়ে তা-ই প্রমাণ করুক। সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি সালাউদ্দিন সরকার, প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক মো. সোহরাব উদ্দিন, মাহবুবব আলম শুক্কুর, প্রভাষক বশির আহমেদ, হেফাজতে ইসলামীর জেলা যুগ্ম সম্পাদক মুফতি নাসির উদ্দিন ও ধানের শীষের প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে সংবাদ সম্মেলন শেষে হাসান উদ্দিন সরকার গাজীপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের খোঁজখবর নেন এবং গ্রেপ্তারকৃতদের নিয়মিত খোঁজখবর রাখার জন্য দলের দায়িত্বশীল নেতাদের নির্দেশনা দেন। বিকালে হাসান উদ্দিন সরকার টঙ্গীর ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে সর্বশেষ প্রচারণায় অংশ নেন। হাসান সরকার এসময় অভিযোগ করে বলেন, কাশিমপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আবির হোসেন নামের এক কর্মীকে আওয়ামী লীগেররা মারধর করে ধানের শীষ প্রতীকের লিফলেট ছিনিয়ে নিয়েছে এবং জোরপূর্বক তার গলায় নৌকার ব্যাজ ঝুলিয়ে ছবি তুলেছে। এছাড়া গাজীপুরের ৫টি সিনেমা হল কর্তৃপক্ষকে জোরপূর্বক বাধ্য করে তাদের পর্দায় আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যাকান্ডকে পুঁজি করে হাসান সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।

বিজিবি মোতায়েন: নির্বাচন সামনে রেখে নগরের বিভিন্ন এলাকায় গতকাল সকাল থেকে বিজিবি সদস্যদের টহল শুরু হয়েছে। তারা সিটিতে ঘুরে, বিশেষ করে ভোটকেন্দ্র এলাকার সার্বিক নিরাপত্তার পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে। জেলা রির্টানিং কর্মকর্তা মো. রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, মোট ২৯ প্লাটুন বিজিবি সদস্য এবং র‌্যাবের ৫৮টি টিম নির্বাচনী এলাকায় নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে। এর বাইরে বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য মোতায়েন থাকবে নির্বাচনী দায়িত্বে। সার্বিক নিরাপত্তার জন্য র‌্যাব, পুলিশসহ প্রায় ১১ হাজার নিরাপত্তাকর্মী প্রস্তুত রয়েছে। তিনি আরো জানান, নির্বাচনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচন অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে এই বিশাল নিরাপত্তা বাহিনীর পাশাপাশি নগরের ৫৮টি ওয়ার্ডে স্ট্রাইাকিং ফোর্স ও ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টিম কাজ করছে।