ঈদের দিন সাজে তিন

ঈদের সকালের সাজ হালকাই ভালো, তবে তাতে যেন মিশে থাকে স্নিগ্ধতা—এমনটাই মত নুজহাত খানের। একে তো গরম, হতে পারে বৃষ্টিও, তাই যেকোনো হালকা রঙের পোশাকেই হোক সকালের শুরু। সকালের সাজে বেইজ খুব জরুরি নয়। যদি দিতেই চান, এক টোনেই সেরে নিন। বেইজের বদলে ফেস পাউডারও হতে পারে সকালের বেইজ। চোখে কাজলের এক টান আর চোখের মেকআপ পাপড়িতে মাশকারার হালকা টানেই শেষ করতে পারেন চোখের সাজ। চোখে শ্যাডো না দিলেই ভালো লাগবে। একান্তই দিতে চাইলে হালকা যেকোনো শেইড, যেমন গোলাপি, আকাশি, পার্পল—এগুলো দিতে পারেন। সে ক্ষেত্রে নিজের স্কিন টোন মাথায় রেখে মানানসই শ্যাডো বেছে নিন। চুলের বাঁধনে পেছনে বেণি করে এক পাশে বেঁধে নিলেই হলো। গয়নার বাহুল্য এড়িয়ে কানে শুধু পরে নিন একটি দুল। ব্যস, সকালের সাজ কমপ্লিট।

বেশ গরম পড়বে এই ঈদে—এমন আশঙ্কা আছে। হতে পারে বৃষ্টিও। তাই সাজপোশাকের বাছাইটাও তেমন হতে হবে। দুপুরের অতিথি আপ্যায়ন কিংবা বিকেলে বাইরে বেড়াতে যাওয়ার ঝক্কি এড়াতে বা আরামের কথা চিন্তা করে বেছে নিতে পারেন সালোয়ার-কামিজ। পোশাকের রঙে এখন উজ্জ্বল সব রঙের জয়জয়কার। মেরুন, লাল, বাসন্তী—এমন কোনো রঙের হতে পারে আপনার পোশাক। উৎসবটা ঈদ। তাই কামিজের কাজে একটু জমকালো লুক থাকতে পারে। হাতের কাজ, কাঁথা স্টিচ, জারদৌসির ডিজাইনও বেশ জেঁকে বসেছে।

এমন পোশাকের সঙ্গে দুপুরের সাজে বেইজটা এমন হবে, যেন তা খুব হালকা না হয় আবার খুব ভারিও না হয়। তাহলে অনায়াসে এক সাজেই বিকেল পার করে দিতে পারবেন। মনে রাখবেন, মুখে বেইজ দেওয়ার আগে একটু বরফ ঘষে নিলে বেইজের স্থায়িত্ব দীর্ঘ হবে। হালকা বেইজের সঙ্গে পোশাকের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চোখে দিন শ্যাডো। কনট্রাস্ট শ্যাডোর চেয়ে দিনের আলোতে পোশাকের রঙের শেইডই ভালো লাগবে। চোখের কোণ ধরে কালো বা বাদামি গাঢ় শ্যাডের ব্লেন্ড চোখকে খানিকটা বড় করে তুলবে। তারপর কাজলের হালকা টান। লাগাতে পারেন মাশকারা। তবে গাঢ় করে নয়। আইব্রো এঁকে নিন চোখের মাপে। লিপস্টিকে ন্যুড রং ভালো লাগবে। চুল ব্লো ডাই করে নিচে কার্ল করলে খানিকটা আলাদা লাগবে সবার চেয়ে। পোশাকের সঙ্গেও মিলে যাবে চুলের সাজ। হয়ে গেল সাজ। পোশাক যেহেতু জমকালো নিচ্ছেনই, তাই গয়নায় বাহুল্য এড়িয়ে যান। গলায় কিছু না পরলেই কামিজের সঙ্গে মানিয়ে যায়। যেহেতু গলায় কিছু থাকছে না, তাই কানে তুলে নিন বড় কোনো দুল। আর হাতে থাকতে পারে সরু বেল্টের ঘড়ি।

রাতের সাজ জমকালো হবে নিঃসন্দেহে। শাড়ি হতে পারে ঈদের রাতের পারফেক্ট পোশাক। বর্ষা ঋতুর ঈদ। রঙে তাই নীল হবে লা জবাব। এমব্রয়ডারি, কাঁথা স্টিচ, আরি কাজ, ডলার, মিরর কাজ—এমন সব কাজের শাড়িই এই ঈদের ট্রেন্ড। পোশাকের ম্যাটারিয়ালে গরমে সুতি যেমন থাকতে পারে, তেমনি রাতের সাজের জমকালো ভাব ফুটিয়ে তুলতে সিল্ক শাড়িও বেশ মানাবে। মনে রাখবেন, রাতের সাজের বেইজ হবে দিনের অন্য দুই বেলার চেয়ে ভারি। চোখের সাজে স্মোকি টোন পরিপূর্ণতা দেবে। পোশাকে সোনালি কাজ থাকলে সোনালি আর রুপালি আভা থাকলে তা-ই হবে চোখের শেইডের বেইজ টোন। বেইজ শ্যাডো দেওয়ার পর কালো শ্যাডো দিয়ে তার ওপর আবার পোশাকের রঙে মিলিয়ে সেই রঙের শ্যাডো গাঢ় করে বুলিয়ে নিন চোখে। কাজল আর মাশকারার টানও গাঢ় হবে। চোখের নিচের কোল ঘেঁষেও কাজল এঁকে নিন। আইব্রো এঁকে নিন চোখের কিছুটা বাইরে পর্যন্ত। এতে চোখ যেমন গাঢ়ত্ব পাবে, তেমনি বড়ও দেখাবে। লিপস্টিক হবে গাঢ়। মোদ্দা কথা, রাতের সাজ হবে ভারিক্কি। চুলের বাঁধনে রেট্রো স্টাইল আপনাকে অন্যের চেয়ে করবে আলাদা। সামনে হালকা পাফ করে পেছনে হাতখোঁপা সাজে সহজ, লুকে অনন্য। গয়নায় মেটাল, ব্রাস, রুপা বেশ জেঁকে বসেছে, হয়ে উঠেছে ট্রেন্ডিও। গয়নার নকশায় যদি থাকে সনাতনি লুক, তবে তো কথাই নেই। হাতে সরু রুলি। ব্যস! ঈদের রাতের সাজে অনন্য আপনি।