আইসিইউতে ছেলে, ফেসবুকে যা লিখলেন কুমার বিশ্বজিত

কঠিন সময় পার করছেন দেশের নন্দিত সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিৎ। কানাডার টরেন্টোতে ছেলে নিবিড় কুমার সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন। একই দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান নিবিড়ের সঙ্গে থাকা তিন বন্ধু।

ঘটনার পর থেকেই চুপ ছিলেন কুমার বিশ্বজিৎ। চলেছেন গণমাধ্যম এড়িয়ে। অবশেষে নীরবতা ভেঙে ফেসবুকে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দিয়েছেন তিনি। যেখানে মারা যাওয়া তিনজনের জন্য তার সমবেদনা এবং একমাত্র ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতির কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।

মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টায় দেয়া এ স্ট্যাটাস ঢাকা টাইমসের পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হলো-
‘জীবন কখনো কখনো অনেক বড় পরীক্ষার অন্য এক নাম। হঠাৎ আসা কোনো ঝড়ের মতো গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরন্টো শহরে আমার একমাত্র সন্তান নিবিড় এবং তার তিন বন্ধু আরিয়ান দীপ্ত, শাহরিয়ার খান মাহির ও এঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ এক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। আরিয়ান, মাহির ও শ্রেয়া আমাদের সবাইকে ছেড়ে অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।’

‘নিবিড়ের মতোই বাকি তিনজনকে আমি আমার সন্তানই মনে করি। তারা আমার পরিবারেরই একটা অংশ। তাদের সবার সাথেই আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুতুল্য। আমি মেনে নিতে পারছি না তারা নেই। সন্তান হিসেবেই তাদের স্মৃতি আমার হৃদয়ে থাকবে চিরজাগ্রত।’

‘আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি আর ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের এই শোক সহ্য করবার শক্তি দেন। আমি ঈশ্বরের কাছে আরও প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাকে ও আমার পরিবারের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে আমার নিবিড়কে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন। নিবিড় এখনো আইসিইউতে শয্যাশায়ী।’

‘এই আকস্মিক ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত। আমি আমার সব বন্ধু, পরিচিতজন এবং ভক্তদের কাছে নিবিড়ের জন্য দোয়া/আশীর্বাদ কামনা করছি। আর যারা এরই মধ্যে নিবিড়ের সুস্থতা কামনা এবং আমার পরিবারের এ দুঃসহ অবস্থা কাটিয়ে ওঠার জন্য দোয়া/আশীর্বাদ করেছেন ও করছেন তাদের কাছে আমি চিরঋণী।’
বর্তমানে নিবিড়ের বাবা কুমার বিশ্বজিৎ ও মা নাঈমা সুলতানা কানাডায় ছেলের পাশে রয়েছেন।

উল্লেখ্য, দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে টরন্টো পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, টরন্টোর স্থানীয় সময় ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে গাড়িটি চালাচ্ছিলেন নিবিড়। আরোহী ছিলেন শাহরিয়ার, অ্যাঞ্জেলা ও আরিয়ান। খুব দ্রুতগতিতে চলার কারণে এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে উঠতে টার্ন নেওয়ার সময় গাড়ি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। পরে গাড়িটি হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায় এবং ঘটনাস্থলেই দুজন আরোহী মারা যান।

হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়। নিহত তিনজনও বাংলাদেশ থেকে কানাডায় পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন।