এক সময় প্লেবয় ছিলেন, স্বীকার করলেন ইমরান খান

সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ ও সেই ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হওয়ার পর বিরোধীদলীয় এমপিদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতা হারানো ইমরান খান স্বীকার করেছেন, যৌবনে তিনি প্লেবয় ছিলেন।

মঙ্গলবার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোরে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সাবেক সেনাপ্রধান কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর আগে সর্বশেষ বৈঠকের স্মৃতি ভাগ করে নেন তিনি। সেখানে পাকিস্তানের বর্তমান প্রধান এই বিরোধী নেতা বলেন, ‘(বৈঠকে) জেনারেল বাজওয়া আমাকে প্লেবয় বলেছিলেন। আমি তার জবাবে বলেছিলাম, হ্যাঁ, আমি প্লেবয় ছিলাম।’

‘বাজওয়া হচ্ছেন সেই ব্যক্তি যিনি একই সঙ্গে আমাদের পিঠে ছুরি মেরেছেন, আবার একই সঙ্গে সহানুভূতিও প্রদর্শন করেছেন।’

সফল ক্রিকেটার থেকে রাজনীতিবিদ বনে যাওয়া ইমরান খানও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আশীর্বাদপুষ্ট হয়েই পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয়ী হলেও ক্ষমতায় যেতে তাকে পূর্বসূরী রাজনীতিকদের পদাঙ্ক অনুসরণ করতে হয়েছিল।

কিন্তু ক্ষমতায় যাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই সেনাবাহিনীর সঙ্গে ইমরান খানের দূরত্ব সৃষ্টি হয় এবং তার জেরেই চলতি বছর ১০ এপ্রিল পার্লামেন্টে বিরোধী দলীয় এমপিদের অনাস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রীর পদ হারান পাকিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান; ক্ষমতায় আসীন হয় সাবেক বিরোধী দল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) নেতৃত্বাধীন জোট সরকার।

পিটিআই সরকারের আমলের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের সেনাপ্রধান পদে থাকা বাজওয়া অবসরে গেছেন গত ২৯ নভেম্বর। মঙ্গলবারের মতবিনিময় সভায় জেনারেল বাজওয়ার সঙ্গে নিজের সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ইমরান খান বলেন, ‘তিনি আইনের শাসন ও জবাবদিহিতার সংস্কৃতির বিরোধী ছিলেন। তবে প্রতিষ্ঠানে (সেনাবাহিনী) তার প্রভাব ছিল ব্যাপক, আমাদের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক কখনও গড়ে ওঠেনি।’

প্রধানমন্ত্রীর পদ হারানোর পর থেকে আর পার্লামেন্ট ভবনে যাননি ইমরান খান। সভায় এ সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমরা আর পার্লামেন্টে গিয়ে কি করব? সেখানে গিয়ে কোনো লাভ নেই।’

‘এই মুহূর্তে প্রয়োজন একটি স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচন। কারণ একটি স্বচ্ছ নির্বাচনই পারে দেশে একটি টেকসই সরকার গঠন করতে।’

প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) কো চেয়ারম্যান আসিফ আলী জারদারি এবং তার ছেলে ও পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়ালি ভুট্টোরও সমালোচন করেছেন ইমরান খান।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আসিফ জারদারির রাজনৈতিকভাবে অপরিপক্ক ছেলের দায়িত্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতো একটি স্পর্শকাতর মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দেওয়া শুধু বোকামিই নয়, বরং একটি অপরাধমূলক কাজ।’