ভক্ত ও সমর্থকরা চরম হতাশ। বোদ্ধা, পণ্ডিত কিংবা বিশেষজ্ঞ হবার দরকার নেই। অজোঁ পাড়ার অবুঝ কিশোরও দেখতে দেখতে জেনে গেছে, বাংলাদেশের ব্যাটাররা টেস্টে ধৈর্য ধরে দীর্ঘ সময় উইকেটে থাকতে পারেন না। সর্বোচ্চ মনোযোগ ও মনোসংযোগ দিয়ে লম্বা ইনিংস খেলার চেয়ে তারা আকর্ষণীয় ও চটকদার মার মেরে ২৫-৩০ রান করতেই বেশি উৎসাহী। সমস্যাটা সেখানে।
আর তাই এক-দুইজন ছাড়া কারো ইনিংসই বড় হচ্ছে না। টিমের স্কোরলাইনও তাই ছোট থাকছে। চট্টগ্রামে ১৫০- এর পর ঢাকায় প্রথম ইনংস শেষ হলো ২২৭ রানে। দুই টেস্ট পর দলে ফেরা মুমিনুল (৮৪) ছাড়া সবাই ব্যর্থতার মিছিল করেছেন।
কেন এই ব্যর্থতার বৃত্তে আটকে থাকা? সমস্যা কি টেকনিকে না অন্য কোথাও? বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ জেমি সিডন্সের কাছে এ প্রশ্ন ছুঁড়ে দেওয়া হলে উত্তরে তিনিও হতাশা ব্যক্ত করেন।
আজ বৃহস্পতিবার শেরে বাংলায় প্রথম দিনের খেলা শেষে প্রেস কনফারেন্সে এসে বাংলাদেশের ব্যাটারদের নিয়ে অনেক কথাই বলেছেন সিডন্স। তার প্রায় পুরো কথোপকথন জুড়েই ছিল হতাশা।
জেমির দাবি, প্রস্তুতি ও অনুশীলনে ঘাটতি নেই। প্র্যাকটিস হচ্ছে বেশ। কিন্তু ব্যাটারদের অ্যাপ্রোচ ও অ্যাপ্লিকেশনে কোনোই পরিবর্তন চোখে পড়ছে না। সব একই থাকছে। তারা যে বড় ইনিংস খেলার চেয়ে চটকদার মার মারতেই বেশি ভালোবাসেন!
সমস্যাটা মানসিক কিনা? এমন প্রশ্নে সিডন্স বলেন, ‘এটা ভালো প্রশ্ন। আমি এখন ৬-৭ মাস ধরে আছ। এটা নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। আমরা অনেক অনুশীলন করি। কিন্তু ব্যাটাররা যখন মাঠে যায়, তখন শট খেলার দায়িত্ব তো তারই। যদি আপনি ২৮ করতে পারেন, তবে কেন আরও ২৮ করতে পারবেন না?’
নাম ধরেই ব্যাটারদের ভুলগুলো বললেন সিডন্স। টাইগার ব্যাটিং কোচের কথা, ‘সাকিব ডাউন দ্য উইকেটে গিয়ে আউট হলো, লিটন একটু জোরে মারতে গেলো, মেহেদি আলকা শট খেলে ফিরে আসলো। তারা মাঠ ছাড়ার সময় মাথা নাড়তে থাকে, (ভাবে) কেন এটা করতে গেলাম? কিন্তু তাদের তো দায়িত্বটা নিতে হবে। ছয় ঘণ্টা তাদের একইভাবে খেলতে হবে। ২৮-৩০ রানের চটকদার ইনিংস খেলার দরকার নেই। কিন্তু এটাই হয়ে চলেছে।’
সিডন্স যোগ করেন, ‘আমি টেকনিক্যাল এবং মেন্টাল ইস্যু নিয়ে কাজ করেছি। এক দুইজন ছাড়া বাকিদের সমস্যাটা টেকনিক্যাল বলে আমি মনে করি না। তারাই সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা ডাউন দ্য উইকেটে অথবা আকাশে বল ভাসিয়ে খেলবে। মুহূর্তে এদের শুধরে ফেলা আমার জন্য কঠিন।’