অর্জনের বিশ্বকাপ জিতেও আসল ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে না আর্জেন্টিনা

কাতার বিশ্বকাপের ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে ৩৬ বছর পর ফের বিশ্বকাপ গেল আর্জেন্টিনার ঘরে। সেই স্বপ্নের ট্রফি হাতে মেসিরা এখন নিজ দেশে। কিন্তু হাতে করে যে ট্রফিটা তারা নিয়ে এলেন সেটা আসল নয়, নকল বা প্রতিমূর্তি। আসলটা রেখে দিতে হয় ফিফার মিউজিয়ামে।

মেসিদের বহনকারী বিমান কাতারের দোহা থেকে ইতালির রোম হয়ে মঙ্গলবার ভোরে বুয়েনস এইরেসে এসে পৌঁছে লিওনেল মেসির দল।

এমন সাফল্যে লিওনেল মেসিদের বরণ করতে আর্জেন্টাইন ভক্তরা প্রস্তুত ছিল আগে থেকেই। রাজধানী বুয়েনস আইরেসে এখ চলছে স্বপ্ন জয়ের উৎসব।

তবে অর্জনের বিশ্বকাপ জিতেও আসল ট্রফি নিয়ে দেশে ফিরতে পারবে না আর্জেন্টিনার এই দল।

আর্জেন্টিনা একা নয়, ফিফার নিয়মানুযায়ী বিশ্বকাপ জেতার পরেও ট্রফি নিজেদের কাছে রাখতে পারে না কোনও দলই। জয়ী দলকে ব্রোঞ্জের একটি প্রতিমূর্তি দেওয়া হয়। সেটিই থাকে তাদের কাছে। আসল ট্রফি চলে যায় সুইজারল্যান্ডের জুরিখে।

সেখানে ফিফার বিশ্ব ফুটবল মিউজিয়ামে রাখা হয় ট্রফিটি। বিশ্বকাপের সময় এলে সংশ্লিষ্ট দেশে ট্রফি নিয়ে যাওয়া হয়। বিশ্বকাপ শেষে আবার নিজের জায়গায় ফেরত যায় বিশ্বকাপ ট্রফি।

বিশ্বকাপে ট্রফির ইতিহাস

তবে আগে ফিফার নিয়ম ছিল কোনো দেশ তিন বার বিশ্বকাপ জিতলে তাদের আসল ট্রফিটি দিয়ে দেওয়া হবে। ১৯৭০ সালে তৃতীয় বার বিশ্বকাপ জিতেছিল ব্রাজিল। আসল জুলে রিমে ট্রফি দেওয়া হয়েছিল পেলেদের।

পরে ১৯৮৩ সালের ১৯ ডিসেম্বর সেই ট্রফি চুরি হয়ে যায়। অনেক খোঁজার পরেও সেটা আর ফেরত পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হয়, ট্রফির সোনা গলিয়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল সেটা। কারণ চুরি যাওয়ার কয়েকদিন পরে পাওয়া গিয়েছিল ট্রফির নিচের অংশটা যেটা কিনা সোনার নয়।

সেই অংশটিও এখন রাখা আছে সুইজারল্যান্ডের ফুটবল মিউজিয়ামে। এই ঘটনার পর বিশ্বকাপ ট্রফিতে এসেছে পরিবর্তন, এসেছে নতুন ট্রফি।

এখনকার ট্রফিটা প্রথম দেওয়া হয়েছিল ১৯৭৪ সালে। কিন্তু ১৯৮৩ সালে ট্রফি হারিয়ে যাওয়ার ঘটনার পর থেকে কোনও দেশকেই আসল ট্রফি নিয়ে যেতে দেওয়া হয় না এখন।

তাই ৩৬ বছর পর ট্রফি জিতেও মেসিরা নিয়ে যাবেন ‘নকল’ট্রফি। যেটি আসল ট্রফির মতো দেখতে হলেও আসল ব্রোঞ্জের তৈরি একটি রেপ্লিকা বা প্রতিমূর্তি।

গেল রোববার ১৮ ডিসেম্বর কাতারের লুসাইল স্টেডিয়ামে ফাইনালে ফ্রান্সকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলে হারিয়েছিল আর্জেন্টিনা।

নির্ধারিত সময়ে ২-২ গোলে সমতা থাকার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত সময়ের ৩০ মিনিটে। সেখানেও ১-১ গোলের সমতা তৈরী হওয়ায় পরবর্তীতে খেলা গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে লিওনেল মেসির দল ৪-২ গোলে জয় লাভ করে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়।