কাতার বিশ্বকাপ থেকে বিদায় নিল ব্রাজিল। ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় সেলেকাওরা।আর এর মাধ্যমেই টানা দ্বিতীয় বারের মতো ক্রোয়েশিয়া চলে গেছে বিশ্বকাপের শেষ চারে।
পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলকে টাইব্রেকারে ৪-২ গোলের ব্যবধানে হারিয়ে সেমিফাইনালে উঠে যায় ক্রোয়েশিয়া। এজন্য অবশ্য ক্রোয়েশিয়া কোচ জ্লাটকো ডালিচ তার রক্ষণভাগকে বেশি কৃতিত্ব দিয়েছেন।
ম্যাচ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে ক্রোয়েশিয়ার কোচ তার মিডফিল্ডকে বিশ্বসেরা আখ্যায়িত করে বলেন, আমার দল মিডফিল্ডে সেরা। শুধু সেরা নয়, বিশ্বসেরাই বলব।
বিশ্বসেরা মিডফিল্ডের কারণ ব্যাখাও করেছেন তিনি, আমার মিডফিল্ডারদের যেমন গতি রয়েছে তেমনি আবার প্রতিপক্ষের গতিও রোধ করতে পারে। ব্রাজিলকে মিডফিল্ডে দারুণভাবে নিয়ন্ত্রণ করেছে আমার ফুটবলাররা।
এই বিশ্বকাপে ক্রোয়েশিয়াকে কেউ আলোচনায় রাখেনি। দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে নেইমার-ভিনিসিয়াসদের পারফরম্যান্স দেখে দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন ক্রোয়েশিয়ার কোচ জ্লাতকো দালিচ।
আগে তিনি বলেছিলেন, টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল ব্রাজিল। এ পর্যন্ত আমরা যত ম্যাচ খেলেছি, তার চেয়ে এবারের ম্যাচটি একেবারেই ভিন্ন হবে। কারণ ব্রাজিল ফুটবল খেলতে ভালোবাসে। আমরা যদি বাস্তবতার কথা চিন্তা করি, তা হলে ব্রাজিল এ টুর্নামেন্টের সবচেয়ে শক্তিশালী দল। তাদের হাতে দারুণ সব অপশন রয়েছে। দুর্দান্ত একটা স্কোয়াড আছে ওদের, যা ভীতিকর। ফলে আমাদের জন্য এটি কঠিন পরীক্ষা হতে যাচ্ছে।
দালিচ আরও বলেন, ম্যাচটি আমাদের কাছে কোয়ার্টার ফাইনাল নয়, এটিকে ফাইনাল ম্যাচ বলা যায়। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করব, আমরা খেলার আগেই হার মানব না। আমরা আমাদের নিজেদের মতো করে ব্রাজিলকে রুখে দেওয়ার চেষ্টা করব।
কিনউত সেই কোচের সেই ভয় কাটিয়েই ক্রোয়েশিয়া এখন সেমিফাইনালে। টানা দুই ম্যাচ টাইব্রেকারে জিতে তারা শেষ চারে।
টাইব্রেকারে ম্যাচ নিয়ে যাওয়া তাদের কৌশল কি না এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, টাইব্রেকার আমাদের অন্যতম শক্তি। তবে আমরা ম্যাচেও নিয়ন্ত্রণ রাখি।
মিডফিল্ডকে সেরা বললেও আজকের ম্যাচের নায়ক মূলত ক্রোয়েট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ। গোলরক্ষকই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দিয়েছেন বলে স্বীকার করলেন কোচ, নিঃসন্দেহে সে ম্যাচের মূল চরিত্র। ব্রাজিলের ফুটবলাররা তার সামনে এসে আত্মবিশ্বাস হারিয়েছে। দারুণ সেভ করেছে সে। ফলে পরবর্তীতে ব্রাজিলের ফুটবলাররা আত্মবিশ্বাস নিয়ে শট সেভাবে করতে পারেনি।
কিন্তু এর আগের বিশ্বকাপের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সব মিলিয়ে চারটি ম্যাচের মধ্যে তিনটিতেই জয় ছিল ব্রাজিলের; একটি ম্যাচ ড্র হয়েছে। ২০০৫ সালে ব্রাজিল বনাম ক্রোয়েশিয়া সর্বপ্রথম মুখোমুখি হয়েছিল আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে। সে ম্যাচটি ১-১ গোল সমতায় ড্র হয়।
এর পর ২০০৬ বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো বিশ্ব আসরে মুখোমুখি হয় দল দুটি। যেখানে ব্রাজিল ১-০ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে পরাজিত করে। ২০১৪ সালে পুনরায় দুদলের দেখা হয়। সেখানে ব্রাজিল ৩-১ গোলে ক্রোয়েশিয়াকে পরাজিত করে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে আন্তর্জাতিক ফ্রেন্ডলি ম্যাচে দেখা হয়েছিল এই দুটি ফেভারিট দলের। সেই ম্যাচেও ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে ২-০ গোলের জয় পেয়েছিলেন তিতের শিষ্যরা।