ইরানের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় খুজেস্তান প্রদেশ ও ইসফাহান শহরে বিক্ষোভকারীদের ওপর অজ্ঞাত বন্দুকধারীদের হামলায় অন্তত ৯ জন নিহত হয়েছেন। বুধবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের খবরে এই ঘটনাকে ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করা হয়েছে। দেশটির সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল বলেছে, খুজেস্তানের ইজেহ শহরের একটি বাজারে বন্দুক হামলায় পাঁচজন নিহত ও আরও ১৫ জন আহত হয়েছেন।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ বলেছে, একটি গাড়িতে করে দুই বন্দুকধারী বাজারে পৌঁছে লোকজনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে।
খুজেস্তানের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রথম হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে ইতিমধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া অন্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
প্রথম হামলার চার ঘণ্টা পর ইরানের তৃতীয় বৃহত্তম শহর ইসফাহানে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে বাসিজ মিলিশিয়া গোষ্ঠীর সদস্যদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো হয়েছে। এতে বাসিজ মিলিশিয়া গোষ্ঠীর দুই সদস্য নিহত ও আরও দুজন আহত হয়েছেন।
হিজাব পরার বিধান লঙ্ঘনের দায়ে ইরানের নৈতিকতা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের পর গত ১৬ সেপ্টেম্বর মাহসা আমিনি নামে এক তরুণী মারা যান। এই ঘটনার পর দেশটিতে হিজাববিরোধী বিক্ষোভ চলছে। ইরানের জাতিগত আরব সংখ্যালঘুদের বেশিরভাগ খুজেস্তানে বসবাস করেন। সেখানকার সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর সদস্যরাও মাহসা আমিনি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় শুরু হওয়া বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন।
ইরানের সরকারি একটি টেলিভিশনকে খুজেস্তানের স্থানীয় কর্মকর্তা ভালিওল্লাহ হায়াতি বলেছেন, সন্ত্রাসী হামলায় পাঁচজন নিহত হয়েছেন। নিহতদের একজন শিশু, একজন নারী ও তিনজন পুরুষ। আইএসএনএ বলেছে, নিহতদের মধ্যে ইরানের স্বেচ্ছাসেবী বাসিজ মিলিশিয়া গোষ্ঠীর দুই সদস্যও রয়েছেন।
গত মাসে ইরানের শিরাজ শহরের এক মাজারে সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। এছাড়া ওই হামলায় আহত হন আরও কয়েক ডজন মানুষ। পরে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস) শিরাজের মাজারে হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়।
ইরানের আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা তাসনিম বলেছে, ইজেহ শহরের একটি স্কুলে সরকারবিরোধী বিক্ষোভকারী আগুন ধরিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, স্কুল ভবনে আগুন জ্বলছে। এ সময় সেখানে গোলাগুলির শব্দও পাওয়া যায়। তবে এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করা যায়নি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।