রাবিতে অশ্রুসিক্ত নয়নে শাহরিয়ারকে চিরবিদায়

অশ্রুসিক্ত নয়নে হলের তৃতীয় তলা থেকে পড়ে নিহত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থী এমজিএম শাহরিয়ারকে চিরবিদায় জানিয়েছেন তার শিক্ষক ও সহপাঠীরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রথম জানাজায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে শাহরিয়ারকে চিরদিনের মতো বিদায় জানান তারা।

জানাজা শেষে শাহরিয়ারের মরদেহ নিয়ে তার গ্রামের বাড়ি দিনাজপুরের বিরল এলাকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স। দাফনে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসযোগে রওনা দিয়েছেন শাহরিয়ারের সহপাঠীরাও।

এর আগে সকাল ৮টার দিকে পরিবারের কাছে শাহরিয়ারের মরদেহ হস্তান্তর করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে প্রথম জানাজার উদ্দেশ্যে শাহরিয়ারের মরদেহ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে আসা হয়।

জানাজায় পরিবারের পক্ষ থেকে অংশগ্রহণ করেন শাহরিয়ারের দুই ভাই।

জানাজা শেষে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, আমাদের একজন সন্তানতুল্য শিক্ষার্থী চলে গেলেন। আমরা এ ধরনের মর্মান্তিক মৃত্যুতে মর্মাহত হয়েছি। এ দুর্ঘটনা ঘটার পর প্রথম কাজ হিসেবে তাকে মেডিকেলে নেওয়া হয়েছে। সেখানে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে। সে ঘটনায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তদন্ত কমিটি করেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আলাদা কমিটি হবে। নিহতের পরিবারকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে যে কোনো ধরনের সহযোগিতা প্রদানে আমরা প্রস্তুত আছি।

এর আগে গতকাল বুধবার রাত ৮টায় মার্কেটিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী এমজিএম শাহরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ হবিবুর রহমান হলের তৃতীয়তলার বারান্দা থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। দ্রুত অ্যাম্বুলেন্সযোগে হাসপাতালে নেওয়ার পর জরুরি বিভাগে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ তোলে হাসপাতালে ভাঙচুর চালান রাবি শিক্ষার্থীরা। পরে হাসপাতালের সামনে বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা পর্যন্ত অবস্থান নেন তারা। পরে রাত পৌনে ১১টার দিকে হাসপাতালের ভেতর থেকে বেরিয়ে এসে জরুরি বিভাগের সামনে অবস্থান নেন রাবি শিক্ষার্থীরা।

অবস্থান কর্মসূচিতে তারা এক ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়ে শাহরিয়ারের চিকিৎসায় অবহেলা এবং শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলার ঘটনায় ৮নং ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক, সব ইন্টার্ন ও স্টাফদের অবিলম্বে স্থায়ী বহিষ্কার এবং গ্রেফতারের দাবি জানান।

এর পাশাপাশি অতর্কিত হামলাকারীদের চিহ্নিত করে গ্রেফতার এবং হামলায় আহতদের সুচিকিৎসার দাবি জানান তারা। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি মেনে না নিলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে পরে এদিন রাত সাড়ে ১২টায় রাবি ও রামেক আলোচনায় বসেন। আলোচনা শেষে মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষকে আহ্বায়ক করে পাঁচ সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।