কে পাচ্ছেন রানির রেখে যাওয়া ৫০০ মিলিয়ন ডলার সম্পদের মালিকানা ?

৭০ বছর রাজত্ব করার পর ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি রাজশাসক রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ স্কটল্যান্ডের ব্যালমোরাল প্যালেসে প্রিয়জনদের সান্নিধ্যে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের জন্ম ২১ এপ্রিল ১৯২৬ খৃষ্টাব্দে। ব্রিটিশ রাজতন্ত্রের ৯০০ বছরের ইতিহাসে রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ হলেন দ্বিতীয় ব্যক্তি। ১৯৫৩ সালের ২ জুন অভিষেক হয় রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের। গ্রেট ব্রিটেন এবং নর্দান আয়ার্ল্যান্ডের রাজদণ্ড হাতে তুলে নেন তিনি। রানি এলিজাবেথের সম্পত্তি নিয়ে নানা কথা প্রচলিত থাকলেও ফরচুন ম্যাগাজিনের প্রতিবেদন অনুযায়ী রানির ব্যক্তিগত সম্পদের পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলার।

৭০ বছরের বেশি সময় সিংহাসনে আসীন ছিলেন তিনি। ওই সময়েই এই পরিমাণ সম্পত্তি অর্জন করেছেন তিনি। এ ছাড়াও ব্রিটিশ রাজপরিবারের ২৮ বিলিয়ন ডলারের ব্যবসা রয়েছে, যাকে রয়্যাল ফার্ম বলা হয়। রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও প্রিন্স ফিলিপ এটিকে পারিবারিক ব্যবসাও বলে গেছেন। মায়ের মৃত্যুর পর পুত্র প্রিন্স চার্লস সিংহাসনে আরোহনের পরপরই রাজপরিবারের নিয়ম অনুযায়ী বিপুল এ সম্পত্তির মালিক হয়ে যাবেন।

সবমিলিয়ে রানির ব্যক্তিগত সম্পত্তির আনুমানিক মূল্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার। বিনিয়োগ, শিল্প সংগ্রহ, গয়না ও রিয়েল এস্টেট থেকে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ আয় করেছেন দ্বিতীয় এলিজাবেথ। মায়ের কাছ থেকে ৭০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের পারিবারিক সম্পত্তিও পেয়েছিলেন রানী দ্বিতীয় এলিজাভেথ । এর মধ্যে রয়েছে দামি পেইন্টিং, গয়না, স্ট্যাম্প সংগ্রহ, ঘোড়া ইত্যাদি। রানির আয়ের অন্যতম উৎস ছিল করদাতাদের তহবিল থেকে সার্বভৌম অনুদান। প্রতিবছর এ খাত থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ পেতেন রানি এলিজাবেথ। ব্রিটিশ সরকার রাজপরিবারকে এ অর্থ দেয়।

রাজা তৃতীয় জর্জ ও ব্রিটিশ পার্লামেন্টের মধ্যে এক চুক্তি অনুযায়ী রাজা জর্জ সব সম্পত্তি পার্লামেন্টকে দিয়ে দেন। এর বদলে রাজপরিবারকে ব্রিটিশ সরকার প্রতিবছর একটা অর্থ দিয়ে থাকে। একে আগে ‘নাগরিক তালিকা’ বলা হতো। ২০১২ সাল থেকে এ অর্থকে ‘সার্বভৌম অনুদান’ বলা হচ্ছে। ব্রিটেনের রয়্যাল ফার্ম মনার্ক পিএলসি নামেও পরিচিত। এর আনুমানিক সম্পদমূল্য ২৮ বিলিয়ন ডলার। এ ব্যবসায়িক ফার্মে রানি এলিজাবেথের নেতৃত্বে রাজপরিবারের সদস্যরা রয়েছেন। অনেক ইভেন্ট ও পর্যটনের মাধ্যমে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানটি প্রতিবছর ব্রিটেনের অর্থনীতিতে মিলিয়ন পাউন্ড জোগান দেয়। ফার্মের সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন চার্লস ও তার স্ত্রী ক্যামিলা, প্রিন্স উইলিয়াম ও তাঁর স্ত্রী কেট মিডলটন, প্রিন্সেস অ্যান, প্রিন্স অ্যাডওয়ার্ড ও তার স্ত্রী সোফি।

রানির আয়ের অন্য আরেকটি বিরাট উৎস দ্য ড্যাচি অব ল্যাংকেস্টার। এটি মূলত ব্রিটিশ রাজপরিবারের বাণিজ্যিক, কৃষিজাত ও আবাসিক সম্পত্তি। তবে এটি সরকারি সম্পত্তি নয়, বরং উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া পারিবারিক সম্পত্তি। রাজা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর বড় মেয়ে হিসেবে এ সম্পত্তি বুঝে পান রানি এলিজাবেথ। তার মৃত্যুর পর এখন এ সম্পত্তির মালিক হবেন প্রিন্স চার্লস ও তার বোন এবং ভাইয়েরা।