পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সৈকতে এবার ভেসে এলো বিশালাকৃতির অর্ধগলিত একটি তিমির মৃতদেহ। এটি শনিবার সকাল সাড়ে সাতটার দিকে সাগরে জোয়ারের স্রোতে জাতীয় উদ্যান সংলগ্ন ঝাউবাগান এলাকায় বালুচরে আটকা পড়ে। প্রায় ৩০ ফুট লম্বা ও পাঁচ ফুট প্রস্থের তিমিটি প্রথমে স্থানীয়রা দেখতে পায়।
দীর্ঘদিন আগে মারা যাওয়ায় এটির শরীর থেকে চামড়া ও মাংস খসে খসে সাগরে ভেসে যাচ্ছে। লেজ ও পিঠের অংশের হাড় বের হয়ে গেছে। মৃত এ তিমিটি বেলিন প্রজাতির বলে জানা গেছে।
এদিকে কুয়াকাটায় তিমি ভেসে আসার খবর পেয়ে সকাল থেকে এটিকে এক নজর দেখার জন্য সৈকতে ভিড় করে পর্যটকসহ স্থানীয়রা। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, পৃথিবীতে অন্তত ১৬ প্রজাতির বেলিন তিমি রয়েছে।
এগুলো ৭০ ফুট পর্যন্ত লস্বা হয়। এগুলো মূলত ঠান্ডা পানিতে বিচরণ করে। তবে সমুদ্রে খাবারের সংকট দেখা দিলে এগুলো জায়গা পরিবর্তন করে। সমুদ্রের প্লাংকটন, কাঁকড়া ও ছোট মাছই এদের প্রধান খাদ্য।
কুয়াকাটা ডলফিন রক্ষা কমিটির টিম লিডার রুমান ইমতিয়াজ তুষার সাংবাদিকদের জানান, এর আগে ২০১৮ সালে সৈকতে বড় আরও একটি তিমি ভেসে এসেছিলো। সেটিকেও বালুচাপা দেয়া হয়েছে। তবে ঠিক কি কারণে এসব তিমি মারা যাচ্ছে সেটা বলা যাচ্ছে না। সৈকতে ভেসে আসা মৃত তিমি ও ডলফিনের মৃত্যু রহস্য উন্মোচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, তিমিটির শরীর পঁচে গলে যাওয়ায় এটি ঠিক কবে এবং কিভাবে মারা গেছে তা নমুনা পরীক্ষা ছাড়া বলা সম্ভব হচ্ছে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আবু বক্কর সিদ্দিকী জানান, তিমি ভেসে আসার খবর পেয়ে মহিপুর বন বিভাগকে এটি উদ্ধারের জন্য বলা হয়েছে। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ডফিশ বাংলাদেশ, ইউএসএআইডি ইকোফিশ-২ এর সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি জানান, তিমিটি পঁচে গলে যাওয়ায় এটি কোন প্রজাতির এবং পুরুষ নাকি স্ত্রী প্রজাতির তা নির্ণয় করা কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে।
এটির মৃত্যর কারণ অনুসন্ধানে তারা চেষ্টা করছেন। তবে এটি বেলিন প্রজাতির। মৃত তিমির শরীরের নমুনা সংগ্রহ এবং এটির কংকাল সংরক্ষণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে। ইতিমধ্যে তারা বিশেষজ্ঞ টিমকে অবহিত করেছেন।