মৃত্যুর আগেও মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন যুবদল কর্মী শাওন, বাড়িতে শোকের মাতম

নারায়ণগঞ্জে বিএনপি-পুলিশ সংঘর্ষে একজন নিহতের ঘটনায় জেলাজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। প্রায় তিন ঘণ্টা চলা এই সংঘর্ষে শহরের অনেক দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছে, কমেছে জনসাধারণের আনাগোনা। অন্যদিকে নিহত যুবদল কর্মী শাওনের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রায় মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন শাওন।

বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর র‌্যালি করার জন্য পূর্বঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে নারায়ণগঞ্জ শহরের দুই নাম্বার রেলগেইট এলাকায় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হন। র‍্যালিতে অংশ নিতে জেলা যুবদলের নেতা সাদেকুর রহমানের নেতৃত্বে একটি মিছিল শহরের ২নং রেল গেইট এলাকায় গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে জড়ো হয়। ওই মিছিলের সমানের সারিতে উপস্থিত ছিলেন যুবদল কর্মী রাজা আহমেদ শাওন। বিএনপির জেলা ও মহানগর নেতাদের নেতৃত্বে র‌্যালি শুরু করার প্রস্তুতি নিলে পুলিশ ও ডিবি বাধা দেয়। ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে পুলিশ বিএনপি নেতাদের ব্যানার কেড়ে নেয় এবং লাঠিচার্জ করে।

ফলে ছত্রভঙ্গ হন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পর-মুহূর্তেই সংগঠিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায়। তারা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে, প্রতিউত্তরে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। রণক্ষেত্রে পরিণত হয় মণ্ডলপাড়া থেকে ২ নাম্বার গেইট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু সড়ক।

বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি, এসময় পুলিশের শর্টগানের গুলিতে মারা যায় রাজা আহমেদ শাওন। নিহত শাওন ফতুল্লার বক্তাবলী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের গোপালনগর এলাকার মরহুম শাহেদ আলীর ছেলে। তিনি যুবদলের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত ছিলেন। কাজ করতেন একটি গ্রিল ওয়ার্কশপে।

নারায়ণগঞ্জ সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক নাজমুল হোসেন বিপুল বলেন, আকাশ মাহমুদ শাওন (২০) নামে ওই তরুণের বুকে গুলির চিহ্ন রয়েছে৷ হাসপাতালে আনার আগেই তিনি মারা যান৷ এছাড়া কমপক্ষে আরো বিশজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা কোনো ধরনের পূর্বানুমুতি ছাড়াই সড়ক অবরোধ করেছিলেন। এতে বাধা দিলে পুলিশ উপর চড়াও হয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ টিয়ারশেল ছোঁড়ে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৫জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন, এদের মধ্যে পাঁচজন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।