‘নিখোঁজ’ কলেজছাত্রী ইয়াশা মৃধা সুকন্যার সন্ধান মিলেছে। প্রশ্ন হলো কীভাবে তিনি নিখোঁজ হন? যদিও সুকন্যা জানিয়েছেন, তিনি নিখোঁজন হননি, নিজ ইচ্ছাতেই বাড়ি ছাড়েন।
সুকন্যা রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজের শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার একটি বেসরকারি টেলিভিশনের মুখোমুখিও হন তিনি।
নিজের মাকে দোষারোপ করে সুকন্যা বলেন, আমি পরিবারে ফিরতে চাই না। আমার মা আমাকে নানা ধরনের নির্যাতন করেন। তিনি আমাকে বিক্রি করে দিতে চেয়েছিলেন।
সুকন্যা বলেন, বিয়ে করার জন্য জোর করা হচ্ছিল। মা আমাকে সাড়ে ৩ লাখ টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দিতে চাচ্ছিলেন। রাতে আমি ভয়ে ঘুমাতে পারতাম না। আমাকে বালিশ চাপা দেয়া হবে! নানার বাড়ি গেলে, তারাও আমাকে একই কথা বলতেন। বিয়েটা করে ফেলো। সাড়ে ৩ লাখ টাকা পাবি। লাগলে আরো টাকা বাড়িয়ে দেবে।
ঐ কলেজছাত্রী বলেন, মা জানতেন আমি ক্ষুধা সহ্য করতে পারি না। কিন্তু মা আমাকে দুইদিন পর্যন্ত রুমে আটকে রাখেন। কিছু খেতে দেননি। ওয়াশরুমের পানি খেয়ে কোনোরকম জীবন বাঁচিয়েছি।
এদিকে এ ঘটনায় সুকন্যার মায়ের করা মামলায় তার বন্ধু ইসতিয়াককে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এতেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন সুকন্যা। তিনি বলেন, আমার বন্ধু চিশতির কোনো দোষ নেই।
গত শনিবার সুকন্যার সন্ধানে মা নাজমা ইসলাম সংবাদ সম্মেলন করেন। তিনি বলেন, আমার মেয়ে নাকি আমার সম্পর্কে দুর্নাম করেছে। তাকে নাকি আমি মারধর করেছি। কথা না শোনা, পড়াশোনাসহ নানা কারণে মা হিসেবে তো মারতেই পারি। কিন্তু সপ্তম শ্রেণির পর থেকে তার গায়ে কখনো হাত তুলিনি।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে লন্ডন প্রবাসী বাবা আকুতি জানিয়ে বলেন, সব ভুলে বাসায় ফিরে এসো মা (সুকন্যা)।
প্রসঙ্গত, গত ২৩ জুন মায়ের সঙ্গে সিদ্ধেশ্বরী গার্লস কলেজে মডেল টেস্ট দিতে যান সুকন্যা। পরীক্ষা শেষে অন্য শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এলেও মেয়ের কোনো খোঁজ পাচ্ছিলেন না মা নাজমা ইসলাম।
কলেজ কর্তৃপক্ষ জানায়, সুকন্যা নামের ঐ শিক্ষার্থী পরীক্ষাই দেয়নি। নিজের কাছে থাকা মেয়ের মুঠোফোনে দেখেন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইশতিয়াক আহমেদ চিশতীর সঙ্গে দেখা করার পূর্বপরিকল্পনা ছিল সুকন্যার।
এ তথ্যের সূত্র ধরে পরদিন ইশতিয়াককে আটক করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে গেন্ডারিয়ার বিভিন্ন এলাকায় সুকন্যাকে নিয়ে ঘোরাঘুরির কথা বললেও ২৩ জুন রাতে সুকন্যাকে বাসার উদ্দেশে রিকশায় তুলে দেওয়ার দাবি করেন ইশতিয়াক।
সিসিটিভি ফুটেজে ২৩ জুন সন্ধা ৭টা ৭ মিনিটে রাজধানী গেন্ডারিয়ায় সুকন্যাকে একই রিকশায় ইশতিয়াকের সঙ্গে দেখা যায়। প্রায় ঘণ্টাখানেক পর রাত ৮টা ৫ মিনিটে দুজনকে দেখা যায় আলাদা দুটি রিকশায়।