ঢাবিতে চালু হলো বাংলা ভাষায় ‘প্লেজিয়ারিজম’ শনাক্তকারী সফটওয়্যার

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নে বাংলা ভাষায় লিখিত গবেষণা প্রবন্ধ, অ্যাসাইনমেন্ট, টার্ম পেপার, থিসিস পেপারসহ বিভিন্ন আর্টিক্যালে সিমিলারিটি চেকিং (প্লেজিয়ারিজম) ধরার জন্য dubd21 (ডিইউবিডি) নামে একটি সফটওয়্যার চালু করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)।

মঙ্গলবার (০২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে এটি উদ্বোধন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান এই সফটওয়্যারটি উদ্বোধন করেন।

সফটওয়্যারটি তৈরি করেছেন ঢাবির তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক আব্দুস সাত্তার। দীর্ঘ আট মাসের পরিশ্রমে এই সফটওয়্যারটি চালু করা হয়। এই সফটওয়্যারটি বাংলা ভাষায় লিখিত আর্টিক্যাল, কন্টেন্ট, অ্যাসাইনমেন্ট, রিসার্স পেপারে কতটুকু মৌলিকত্ব সেটা যাচাই করতে সক্ষম হবে। এছাড়াও কোনো কোনো উৎস থেকে তথ্য নেওয়া বা (কপি করা) হয়েছে, কতো শতাংশ কপি করা হয়েছে সেটা দেখাবে। পাশাপাশি কোথা থেকে তথ্য নেওয়া হয়েছে সেটার লিংকও দিয়ে দেবে এই সফটওয়্যারটি।

dubd21 নামের এই সফটওয়্যারটি প্রথমে বাংলা ভাষায় লিখিত বিভিন্ন রিসার্চ আর্টিকেল, অ্যাসাইনমেন্ট প্রাইমারী সোর্স হিসেবে ইনক্লুড করবে। সেক্ষেত্রে উইকিপিডিয়াসহ বিভিন্ন গবেষণা জার্নালকে ব্যবহার করা হবে। তারপর নতুন কোনো গবেষণার সিমিলারিটি ইনডেক্স নির্ণয়য়ের জন্য সফটওয়্যারে ইনপুট করা হলে সফটওয়্যার সেটি নির্ণয় করবে।

এ বিষয়ে আবদুস সাত্তার বলেন, এই সফটওয়ারের আরো ডেভেলপমেন্ট হবে। প্রাইমারি সোর্স ইনক্লুড করাসহ এতে বিভিন্ন বিষয় সংযোজন করা হবে। তারপর নীতিমালার আলোকে আমরা এটিকে কমার্শিয়ালি লঞ্চ করব।

সফটওয়ারটির সার্বিক তত্ত্বাবধানের বিষয়ে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো আখতারুজ্জামান বলেন, সফটওয়ারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে ঠিক তেমনি গবেষণায় এটি ব্যবহৃত হবে। কেউ গবেষণা করতে চাইলে তার গবেষণায় কোনো সিমিলারিটি আছে কিনা যাচাই করতে পারবে এটির মাধ্যমে। এর ফলে গবেষণাটি হবে একেবারে মৌলিক। আর এই মৌলিকত্বই হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান। আর যখন এটা আমরা পরিপূর্ণভাবে করতে পারব তখনই সেটা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যাশিত সামগ্রিক মানের ওপরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মৌলিক গবেষণা ও উদ্ভাবনের জন্য ঢাকা মহানগরীর অদূরে পূর্বাচল এলাকায় ঢাবির জন্য নির্ধারিত স্থানে ‘মৌলিক গবেষণা ও উদ্ভাবন’ নামে নতুন একটি ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠার কথা জানিয়েছেন ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আখতারুজ্জামান।
তিনি বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা ও উদ্ভাবনের দিকে রূপান্তর করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় পূর্বাচলে রাজউক আমাদের যে জায়গাটি দিয়েছে সেখানে আমরা আমাদের সম্পূর্ণ একটি ভিন্ন ক্যাম্পাস তৈরি করব। যেখানে গতানুগতিক আবাসিক সুবিধা বা শ্রেণিকক্ষ থাকবে না। সেটিকে আমরা এক্সক্লুসিভ ইনোভেশন ক্যাম্পাসে রূপান্তর করব। যেখানে শুধুই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। এছাড়া কক্সবাজারে ব্লু ইকোনোমির জন্য সেখানেও গবেষণা ও উদ্ভাবনী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রবীর কুমার সরকারের সঞ্চালনায় সফটওয়্যারটি উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন অনুষদের ডিন, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও শিক্ষকবৃন্দ।