‘আমি অনেক পাপ করেছি, মামিকে হত্যা করে সব মুছে ফেললাম’

মামি-ভাগনের প্রেম দীর্ঘদিনের। সম্পর্কে ফাটল ধরাতে ছেলেকে বিয়ে করান মা। তবু মামিকে ভুলতে পারেননি ভাগনে। নিষিদ্ধ প্রেম থেকে স্বামীকে সরাতে না পেরে চলে যান স্ত্রীও। এর কিছুদিন পরই ফাটল ধরে মামি-ভাগনের সম্পর্কে। কিন্তু সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চেয়েছিলেন মামি। আর এ কারণেই তাকে হত্যা করেন প্রেমিক ভাগনে।
ঘটনাটি ২৩ জুলাইয়ের। তবে ২৪ জুলাই কিশোরগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাশেদুল আমিনের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এদিন দুপুর ২টা থেকে ৪টা পর্যন্ত জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

জবানবন্দিতে মামুন বলেন, অবৈধ সম্পর্ক শেষ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু রেকসোনা ওই অবৈধ সম্পর্ক শেষ করতে দেয়নি। পরে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করি। ওই পরিকল্পনা অনুযায়ী মামিকে প্রথমে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে আঘাত করি। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে মামিকে গলা কেটে হত্যা করেছি। আমি অনেক পাপ করেছি। তাই মামিকে হত্যা করে সব পাপ শেষ করলাম।

সোমবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এসব তথ্য জানান সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আল আমিন জানান, ২০০৫ সালে কিশোরগঞ্জের শহরের হারুয়া এলাকার তাইজুলের সঙ্গে বিয়ে হয় রেকসোনার। বিয়ের পর থেকে তাইজুলের ভাগনে মামুনের সঙ্গে মামির সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ নিয়ে তাদের সংসারে কলহ দেখা দেয়। দাম্পত্য জীবনের ১৭ বছরে তাদের ঘরে জন্ম নেয় দুই ছেলে ও এক মেয়ে।

তাদের এই অবৈধ সম্পর্কের বিষয়টি জানতে পেয়ে মামুনকে অন্যত্র বিয়ে দেয় তার পরিবার। মামুনের ঘরেও জন্ম নেয় এক সন্তান। এর পরেও চলতে থাকে মামুন ও মামির সম্পর্ক। ফলে মামুনের স্ত্রী চলে যায় তাকে ছেড়ে। একপর্যায়ে মামুন ও মামির সম্পর্কেও অবনতি ঘটে। মামুন এ অবৈধ সম্পর্ক শেষ করতে চাইলেও মামির কারণে তা শেষ করতে পারেননি। পরে মামুন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন।

ঘটনার দিন ২৩ জুলাই দুপুরে রান্নার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন মামি। এ সময় মামুন ঘরে ঢুকে মামির সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে মামিকে প্রথমে ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে আঘাত করে। পরে ধারালো ছুরি দিয়ে মামিকে গলা কেটে হত্যা করেন।

কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ দাউদ জানান, ঘটনার দিন রাতেই একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্বামী তাইজুল। মামলা হওয়ার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মামুনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হয়। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন আসামি।