পদত্যাগের ঘোষণা ইতালির প্রধানমন্ত্রীর

পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি। ইতালির জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ফাইভ স্টার মুভমেন্ট সমর্থন প্রত্যাহারের কয়েক ঘণ্টা পরই পদত্যাগের ঘোষণা দেন তিনি।

ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক প্রধান ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশটির জোট সরকারের নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, জোট সরকারকে টিকিয়ে রাখতে যে আস্থার দরকার, সেটা শেষ হয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, ‘আমি আজ সন্ধ্যায় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতির কাছে আমার পদত্যাগপত্র হস্তান্তর করব।’

গত সপ্তাহে ব্যক্তিগত কেলেঙ্কারি ও ভয়াবহ অর্থনৈতিক দুরাবস্থার মধ্যে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগ করার ঘোষণা দেওয়ার পর দ্রাঘি হলেন দ্বিতীয় জি সেভেন নেতা যিনি পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন।

সম্প্রতি জীবনযাপনের খরচ বৃদ্ধির ইস্যুতে দেশটিতে রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হয়েছিল। এ ঘটনা আরও বড় হয় যখন ফাইভ স্টার গ্রুপের প্রধান জিউসেপ কন্টে সরকারের ১৯.৫ বিলিয়ন ডলারের প্যাকেজ নিয়ে আলোচনায় সরকারের যথাযথ ভূমিকা নেই বলে অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ, দ্রাঘি মানুষের জীবনযাপনকে সহজ করতে ভূমিকা রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন।

ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘির জোট সরকার বেশ ঝুঁকির মধ্যে ছিল। দেশটির রাজনৈতিক দল ‘ফাইভ স্টার মুভমেন্ট’ তাদের জোট প্রত্যাহার করে নিলে সরকার টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছিল। এতে আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা তৈরি হয়। এ পরিস্থিতির মধ্যেই ইতালির প্রধানমন্ত্রী মারিও দ্রাঘি পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন।

জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় নিয়ে ফাইভ স্টার আন্দোলনের নেতা জিউসেপ কন্টের কাছ থেকে ক্রমাগত সমালোচনার সম্মুখীন হন দ্রাঘি। তখন তিনি বলেছিলেন, ফাইভ স্টার আন্দোলনের নেতা জিউসেপ কন্টের দলের সমর্থন ছাড়া তিনি ক্ষমতায় থাকবেন না। যদিও তিনি স্বাচ্ছন্দ্যে ফাইভ স্টার আইন প্রণেতাদের অংশগ্রহণ ছাড়াই আস্থা ভোট জিতেছিলেন।

ফাইভ স্টার মূলত জোটের সবচেয়ে বড় দল ছিল কিন্তু দলত্যাগ ও সমর্থন কমে গেছে তাদের। এই দলের প্রাক্তন নেতা লুইগি ডি মাইও বলেছেন, ইতালিকে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পতনের দিকে টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় দ্রাঘি সরকারকে পতনের এটি একটি কুৎসিত পরিকল্পনা।

দ্রাঘির পদত্যাগের ঘোষণার আগে ২০২৩ সালে ইতালিতে সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। এখন শরতে আগাম নির্বাচন ডাকা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

করোনা সংকট থেকে দেশকে পুনরুদ্ধার করতে ২০২১ সালে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিযুক্ত হন ৭৪ বছর বয়সী মারিও দ্রাঘি। প্রধানমন্ত্রী হবার পর তিনি ইতালির বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকের সমন্বয়ে একটি মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন। দ্রাঘি এর আগে বলেছিলেন, তিনি এমন একটি সরকারের নেতৃত্ব দেবেন না যেখানে ইতালির সবচেয়ে বড় দল ফাইভ স্টার অন্তর্ভুক্ত হবে না। খবর: বিবিসি