ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু ‘পড়তে এসেছি, মরতে নয়’ প্রতিবাদে সহপাঠীদের মানববন্ধন

টাঙ্গাইলের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি স্কুলের আবাসিকে পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র শিহাব (১২) এর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সহপাঠী শিক্ষার্থীরা। বুধবার (২২ জুন) সকালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ টাঙ্গাইল জেলা শাখার উদ্যোগে সৃষ্টি স্কুলের শিক্ষার্থীরা এই মানববন্ধন করেছে। টাঙ্গাইল শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকা সংলগ্ন বিশ্বাস বেতকা সড়কের মুখে এই মানববন্ধন করেন তারা।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিহাব ৫ম শ্রেনির ছাত্র ছিল, সে কি কারণে আত্মহত্যা করবে, তার আত্মহত্যা করার মতো মানসিকতা তৈরি হয় নাই। তাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তারা বলেন, শিহারেব মৃত্যুর ঘটনাই প্রথম নয়, এর আগেও সৃষ্টিতে আরো দূর্ঘটনা ঘটেছে।টাকা দিয়ে ধামাচাপা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা এখানে পড়তে এসেছি, মরতে নয়। আমাদের পরিবার আমাদের পড়তে পাঠিয়েছে। শিক্ষকরা শাসন করবেন, কিন্তু সেই শাসন কেন পৈশাচিক হবে। শাসনের কারণে কেন আমাদের মরতে হবে।

এসময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলেন, আমাদের শিক্ষকরা বইয়ের ভাষায় মানবতার কথা বলেন-কিন্তু তারা কি মানবিক? এসময় শিক্ষকদের একটি অংশকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের চিহ্নিত করতে ছবি তুলতেও দেখা যায়। কেন ছবি তুলছেন শিক্ষকরা, জানতে চাইলে তারা এর কোন সদুত্তর দিতে পারেন নি?

উল্লেখ্য, গত ২০ জুন টাঙ্গাইলের সৃষ্টি শিক্ষা পরিবারের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী শিহাবের রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হয়। এবিষয়ে শিহাবের ফুপাতো ভাই আল আমিন সিকদার জানান, গত জানুয়ারিতে শিহাবকে সৃষ্টি স্কুলের আবাসিকে ভর্তি করা হয়, তখন থেকেই নিয়মিত ভালোভাবেই পড়ালেখা করতেছিল শিহাব। হঠাৎ সৃষ্টি স্কুল থেকে ফোন দিয়ে বলা হয় শিহাব অসুস্থ আপনারা তাড়াতাড়ি আসেন।

পরবর্তীতে ওই নাম্বারে ফোন দিয়ে শিহাবের অসুস্থতার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলে স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে বলা হয় সিএনজি দুর্ঘটনায় আহত হয়েছে। তাড়াহুড়ো করে সৃষ্টি স্কুল ভবনের কাছে গেলে সেখানে ঢুকতে না দিয়ে তারা বলে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য।

পরে হাসপাতালে আসার পর শুনতে পাই শিহাব মারা গেছে, স্কুলের শিক্ষকরা বলে স্কুলের আবাসিকের বাথরুমে ঝুলন্ত অবস্থায় শিহাবকে দেখার পর সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। সহপাঠী শিক্ষার্থীসহ টাঙ্গাইলের সর্বস্তরের মানুষ এই ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে।