অগ্নিকান্ডে নিহত ২৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেলো

কনটেইনার ডিপোতে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বিপর্যস্ত চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড। ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে লাশের সারি। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় প্রায় দুইদিন পর নিয়ন্ত্রণে এসেছে আগুন । এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৩ জন নিহত হয়েছেন । এছাড়া ঘটনায় আহত হয়েছেন কমপক্ষে চারশত জন। এছাড়া বিস্ফোরণের পর থেকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের সন্ধানে মঙ্গলবারও হাসপাতালে ভিড় করেছেন তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়-স্বজনেরা।

ভয়াবহ এই অগ্নিকান্ডের পর আজ মঙ্গলবার (৭ জুন) চমেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ইমার্জেন্সি কেয়ার সেন্টারের সামনে দ্বিতীয় দিনের মতো ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কার্যক্রম চালানো হয়। ডিএনএ নমুনা সংগ্রহের কাজটি করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ- সিআইডির ফরেনসিক বিভাগ। মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত ২২ জনের খোঁজে ৩৯ জন নমুনা দিয়েছেন বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।এছাড়া দুপুরের দিকে সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপো থেকে দুটি লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার করেছে ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার কর্মীরা। পরে লাশ দুটি চমেক হাসপাতালে পাঠানো হয়।

অগ্নিকান্ডে এ নিয়ে উদ্ধার লাশের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৪৩। তবে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ২৬ জনের লাশ। এসব লাশ তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে চমেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। চমেক হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শামীম আহসান বলেন, ‘মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত ২৬টি লাশের পরিচয় শনাক্ত করা গেছে। এসব লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। নমুনার ফলাফল পেতে অন্তত এক মাস সময় লাগতে পারে।

ততোদিন পর্যন্ত লাশগুলো চমেক হাসপাতালের ফ্রিজারে সংরক্ষণ করা হবে।’ এছাড়া দ্বিতীয়দিনের মতো মঙ্গলবারও চমেক হাসপাতালের সামনে নিখোঁজদের সন্ধানে ভিড় করতে দেখা যায় স্বজনদের। অনেকেই অবস্থান করেছেন নিখোঁজদের ছবি সম্বলিত ব্যানার নিয়ে। নিখোঁজ হওয়া ব্যক্তির পিতা-মাতা, সন্তান অথবা ভাইয়ের কাছ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি সদস্যরা।

এর আগে গতকাল শনিবার রাত ৯টার দিকে বিএম কন্টেইনার ডিপোর লোডিং পয়েন্টের ভেতরে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ফায়ার সার্ভিসের তিনটি ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রথমে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। রাত পৌনে ১১টার দিকে এক কন্টেইনার থেকে অন্য কন্টেইনারে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। একটি কন্টেইনারে রাসায়নিক থাকায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এতে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ, স্থানীয় শ্রমিকসহ অনেকে হতাহত হন। পরবর্তী সময়ে ইউনিট আরও বাড়ানো হয়। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের ২৫টি ইউনিটের ১৮৩ কর্মী আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন। এছাড়া নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর ও কুমিল্লাসহ আশপাশের বিভিন্ন জেলা থেকেও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।