যুক্তরাষ্ট্র-কেন্দ্রিক বিশ্বব্যবস্থা পতনের দিকে: রাশিয়া

রাশিয়ার ওপর আরোপিত সকল নিষেধাজ্ঞা শীঘ্রই বাতিল হবে এবং একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র-কেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন রুশ সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্রি মেদভেদেভ। তিনি মার্কিন সাময়িকী নিউজউইককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে রাশিয়া। এরপর থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমারা। তাদের ধারণা ছিল এ কারণে রাশিয়া ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত অর্থনৈতিক সংকটের মুখে পড়েছে। তবে এর কোনোটিই রাশিয়াকে তার লক্ষ অর্জনে বিরত রাখতে পারেনি।

রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট আরও বলে বলেছেন, এই নিষেধাজ্ঞার প্রভাব বিশ্বজুড়ে অনুভূত হবে। নিউজউইকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রাশিয়ার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট তার নিজের টেলিগ্রাম চ্যানেলে এমন ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন। যেখানে তিনি বৈশ্বিক সরবরাহ ব্যবস্থা, মূল্যস্ফীতি এবং খাদ্য সংকটের ওপর নিষেধাজ্ঞার প্রভাব ১০টি বুলেট পয়েন্ট আকারে তুলে ধরেছেন।

তিনি আরও ভবিষ্যদ্বাণী করে বলেছেন, রাশিয়ার বিরুদ্ধে নেওয়া বিধিনিষেধমূলক ব্যবস্থাগুলো বৈশ্বিক আর্থিক ব্যবস্থার ক্ষতি, সম্ভাব্য কিছু দেশ বা ব্লকে মুদ্রা ও আর্থিক সঙ্কট সৃষ্টি করবে। যার ফলে কয়েকটি দেশের মুদ্রার স্থিতিশীলতা হ্রাস পাবে, ব্যাপক মুদ্রাস্ফীতি এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি রক্ষার আইনি ব্যবস্থাও ভেঙে পড়বে।

রাজনীতিবিদদের মতে, জীবনের অনেক দিকই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সেই সব জায়গায় নতুন আঞ্চলিক সামরিক সংঘাত আবির্ভূত হবে, যেখানে বছরের পর বছর ধরে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধান করা যায়নি বা যেখানে বৈশ্বিক মোড়লদের উল্লেখযোগ্য স্বার্থ উপেক্ষিত হয়েছে। তিনি লিখেছেন, সন্ত্রাসীরা সক্রিয় হয়ে উঠবে; যারা মনে করে পশ্চিমা কর্তৃপক্ষ বর্তমানে রাশিয়ার সাথে শোডাউনে লিপ্ত হওয়ায় তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র-কেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণার পতন ঘটবে। কারণ বর্তমানে যা ঘটছে তার সবকিছুই আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পশ্চিমা ধারণার দুর্বলতাকে পরিষ্কারভাবে তুলে ধরবে।

দিমিত্রি মেদভেদেভ ২০০৮ সালে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন। পূর্বসূরি ভ্লাদিমির পুতিনের চেয়ে বেশি উদার মনে করা হয় মেদভেদেভকে। মেদভেদেভের মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন পুতিন।

মেদভেদেভ ক্ষমতায় আসার পর রাশিয়ার অর্থনীতি ও সমাজের আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে একটি বিস্তৃত আধুনিকীকরণ কর্মসূচিকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। একই সঙ্গে তেল ও গ্যাসের ওপর থেকে দেশটির নির্ভরতা হ্রাস করেছিলেন তিনি।
সূত্র: নিউজ উইক।