গাংনীতে শ্যালিকাকে নিয়ে দুলাভাই উধাও, দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা

মেহেরপুরের গাংনীতে শ্যালিকাকে নিয়ে দুলাভাই উধাও। জামাইয়ের কাছে গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে ১লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা নিল শশুর। ঘটনাটি ঘটে গতকাল শুক্রবার বিকালে উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের বেতবাড়িয়া গ্রামের।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত কয়েকদিন আগে কাজিপুর গ্রামের মজিবরের মেয়ে পরীকে (১৬-ছদ্মনাম) নিয়ে বাড়িতে থেকে অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় বেতবাড়িয়া গ্রামের জাফর মোল্লার ছেলে শাহাবুল মোল্লা (২৪)। তারা সম্পর্কে দুলাভাই ও শালিকা।পরে শাহাবুলের পরিবারের লোকজন বাড়িতে নিয়ে আসে। উভয় পরিবারের লোকজন ৮নং ওয়ার্ড বেতবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাসায় গ্রাম্য সালিশ বসাই।

এসময় দু’পক্ষের কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সংঘর্ষ ২-৩ জন আহত হয়। ০২নং ওয়ার্ডের কাজিপুর ইউপি সদস্য ফুলচাঁদ এসে দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতায় নিয়ে আসেন। ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান ও ফুলচাঁদের সমন্বয়ে শাহাবুল ইসলাম কে ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা জরিমানা করে। ওই সময় নগদ ৫০হাজার টাকা ও এক মাসের মধ্যে আরো ১লক্ষ পরিশোধ করতে হবে এমন শব্দ স্ট্যাম্পের লিখিত নেন।

এ বিষয়ে শাহাবুল ইসলাম জানান,০৮নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য সাইদুর রহমানের বাড়িতে আমাকে আটকে রেখে গ্রাম্য সালিশ পরিচালনা করেন। পরে সকলের সিদ্ধান্তে আমার কাছে ১ লক্ষ ৫০হাজার টাকা জরিমানা করে গ্রাম্য সালিশের মাতব্বররা।

এ বিষয়ে ০৮-নং ওয়ার্ডের(বেতবাড়িয়া) ইউপি সদস্য সাইদুর রহমান জানান, উভয় পক্ষের লোকজন নিয়ে গ্রাম্য সালিশ করা হয়েছে। সালিশ চলাকালীন সময়ে সামান্য ধাক্কাধাক্কি হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হতে পারে। তার কোনো প্রকার জরিমানা করা হয়নি। ওই মেয়ের বিয়েতে একটা খরচ হবে তাই বিয়ের খরচ বাবদ ১লক্ষ ৫০হাজার টাকা দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ০২ ওয়ার্ডের(কাজিপুর) ইউপি সদস্য জানান,শাহাবুল ইসলাম আমার ভাইয়ের জামাই। তাকে ভয় দেখানোর জন্য স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর দিয়ে ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। নগদ ৫০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে এবং এক মাসের মধ্যে ১ লক্ষ টাকা দিতে বলা হয়েছে।যেহেতু আমরা তাকে ভয় দেখিয়েছে তাই শাহাবুলকে টাকা ফেরত দেয়া হবে।

নাম প্রকাশ করা যাবে না এখন শর্তে এক স্কুল শিক্ষক জানান, কালকে ওই গ্রাম্য সালিশে আমি উপস্থিত ছিলাম। দু’পক্ষের মধ্যে টাকা পয়সা দিয়ে মীমাংসা চলছিল। এমন সময় দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে হাতাহাতি শুরু হয়। এতে কয়েকজন আহত হয়। ছেলেটিকে ঘরের মধ্যে বন্দি করে উভয় ওয়ার্ডের ইউপি সদস্যরা জোরপূর্বক এমন জরিমানা আদায় করেছেন যা আমাদের কাম্য ছিলনা।

গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত থানায় কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। লিখিত অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।