বাংলাদেশে আঘাত হানতে পারে ঘূর্ণিঝড় ‘আসানি’

গত মাস থেকে চলছে টানা তাপ্রবাহ। এ মাসের শুরুতেও তাপপ্রবাহ ছিল কিন্তু মঙ্গলবার (৩ মে) ঈদের দিন সকালে আকাশ কালো মেঘে ছেয়ে আসে এবং ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বজ্রসহ বৃষ্টি হয়। এরইমধ্যে মে মাসের প্রথম দিকেই শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। যা বয়ে যেতে পারে বাংলাদেশ, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষার ওপর দিয়ে। বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ড. মো. আবুল কালাম মল্লিক বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

তিনি জানান, আগামী ৬-৭ মে’র মধ্যে দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। লঘুচাপটি তৈরি হলে সেটি পরবর্তীতে সুনির্দিষ্ট লঘুচাপের পর ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। যার নাম হবে ‘আসানি’। বর্তমান তথ্য অনুযায়ী ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষা ও বাংলাদেশের উপকূলে চলতি মাসের ১০-১২ মের মধ্যে আঘাত হানতে পারে। আবুল কালাম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, লঘুচাপটি আরও শক্তি অর্জন করে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে।

পরবর্তীতে নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে। আন্দামান সাগরে এই লঘুচাপটির জন্ম হবে আগামী ৬-৭ মে। বাংলাদেশ থেকে এর দূরত্ব হবে আড়াই হাজার থেকে তিন হাজার কিলোমিটার। এই লঘুচাপ পরে ঘূর্ণিঝড় হবে কি না সেটি এ মুহূর্তে বলা কঠিন।

তিনি বলেন, তবে তৈরি হতে যাওয়া লঘুচাপটি থেকে শক্তি অর্জন করে ঘূর্ণিঝড় হওয়ার সুযোগ রয়েছে। এখন পর্যন্ত আমাদের প্রেডিকশন অনুযায়ী লঘুচাপটি বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ অভিমুখী আছে। যদি এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেয়, তাহলে পশ্চিমবঙ্গ, উড়িষ্যা ও বাংলাদেশ উপকূল বরাবর দিকটা তৈরি হতে পারে।

কিন্তু এই মুহূর্তেই এই পূর্বাভাস দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ গত কয়েক বছরে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে যে লঘুচাপগুলো দেখা গেছে, সেগুলো ক্ষণে ক্ষণে চরিত্র, বৈশিষ্ট্য ও দিক পরিবর্তন করেছে। এ জন্যই বলা যাচ্ছে না যে, এটা আদৌ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে কি না। তবে বর্তমান তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী শক্তি অর্জন করে এটির ঘূর্ণিঝড় হওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে।

তিনি বলেন, লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেওয়ার পর দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত আসতে সপ্তাহখানেক সময় লাগে। এই লঘুচাপটি যে জায়গায় তৈরি হয়েছে, সেখান থেকে বাংলাদেশ উপকূলে আসতে ১০ দিন সময় লাগবে। সুতরাং আগামী ১০-১২ মে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। তারপরও ঘূর্ণিঝড়টির দিক ও তার অগ্রসরমান গতির ওপর নির্ভর করবে কবে কোথায় এটি আঘাত হানবে।

এর আগে অবশ্য ঈদের আগের দিন, ঈদের দিন ও ঈদের পরের দিন বেশি বৃষ্টি হওয়ার কথা জানানো হয়েছিল আবহাওয়া অফিসের পক্ষ থেকে। যেটা এখনও বলবৎ আছে। আগামী ৪ মে রাত পর্যন্ত এই বৃষ্টিপাত থাকতে পারে বলেও জানানো হয়েছিল। এছাড়া সারাদেশের দিন ও রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে।