কাবা প্রাঙ্গণে রমজানের ২৭তম রাতে ২০ লাখ মুসল্লি

করোনার দুই বছর পর রমজানের ২৭তম রাতে পবিত্র মসজিদুল হারাম উপস্থিত হয়েছেন প্রায় ২০ লাখ মুসল্লি। মহিমান্বিত কদরের রাতে মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদে প্রচণ্ড ভিড় দেখা যায় পবিত্র দুই মসজিদে। রমজানের ২৯তম রাতেও মুসল্লিদের আরো ভিড় হতে পারে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। কারণ ওইরাতে দুই মসজিদে তারাবির নামাজে পবিত্র কোরআন খতম করা হবে।

রমজান মাসে আগত মুসল্লিদের নানা রকম সেবা দিচ্ছে পবিত্র দুই মসজিদের পরিচালনা পর্ষদ। মসজিদ প্রাঙ্গণে সহজেই মুসল্লিদের প্রবেশের ব্যবস্থা ছাড়াও খুলে দেওয়া হয় ছাদ। এস্কেলেটরযোগে ছাদে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। তাছাড়া মুসল্লিদের ইবাদতের মনোরম পরিবেশ তৈরি করতে জমজমের শীতল পানির ব্যবস্থা করা হয়।

গ্র্যান্ড মসজিদে মুসল্লিদের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ও হাসপাতালের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছে মক্কার স্বাস্থ্য বিষয়ক জেনারেল ডিরেক্টরেট। তাছাড়া মুসল্লিদের রোগ প্রতিরোধমূলক, নিরাময়মূলক ও অ্যাম্বুলেটরি পরিষেবা অব্যাহত রেখেছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

স্বাস্থ্যবিভাগের মুখপাত্র হামাদ বিন ফাইহান জানান, পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে আগত মুসল্লিদের ২৪ ঘণ্টা স্বাস্থ্যসেবা দিয়ে যাচ্ছে ১৮ হাজার কর্মী। সমন্বিত পরিকল্পনার আওতায় পবিত্র মসজিদের করিডোরে অবস্থিত দশটি হাসপাতাল, কিং আবদুল্লাহ মেডিকেল সিটি এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে হজযাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হয়।

এদিকে মসজিদুল হারাম প্রাঙ্গণে রমজানের প্রতিদিন ইফতারি বিতরণ করছে সৌদি কর্তৃপক্ষ ছাড়াও বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। নানা ধরনের খেজুর ও জমজম পানিসহ অন্যান্য শুকনো খাবার সরবরাহ করা হয়। করোনাবিধি মেনে মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে নির্দিষ্ট ইফতার খাবার বিতরণে দুই হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবীদের অনুমোদন দেওয়া হয়।

২০২০ সাল থেকে বৈশ্বিক করোনা মহামারি সংক্রমণ রোধে দুই বছর যাবৎ মক্কা ও মদিনার পবিত্র দুই মসজিদে ইতিকাফ ও ইফতারের আয়োজন স্থগিত ছিল। সর্বশেষ গত ৫ মার্চ সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিধানসহ করোনাবিধি শিথিল করে সৌদি আরব। এর আগে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি করোনাকালের দীর্ঘ ৩০ মাস পর সাত বছর বা এর বেশি বয়সী শিশুদের মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববিতে প্রবেশের অনুমোদন দেওয়া হয়।

করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ ডিসেম্বর থেকে পবিত্র কাবা প্রাঙ্গণে সামাজিক দূরত্বসহ সব ধরনের বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়। এর আগে গত বছরের ১৭ অক্টোবর সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরাসহ করোনা বিষয়ক বিধি-নিষেধ শিথিল করেছিল সৌদি সরকার।

২০২০ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবের পর প্রথমবারের মতো সতর্কতামূলক কঠোর বিধি-নিষেধ জারি করে সৌদি আরব। তখন ওমরাহ পালনে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। এরপর জরুরি অবস্থা জারি করে সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করার পাশাপাশি সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিষেবা স্থগিত করা হয়। পরবর্তী সময়ে ধাপে ধাপে সীমিত পরিসরে ওমরাহ ও হজ কার্যক্রমের ব্যবস্থা করা হয়।

সূত্র : আরব নিউজ