বরগুনায় এক আওয়ামী লীগ নেতা নারী জুতাপেটা করছেন। সম্প্রতি সময়ে এমন একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নিয়ে জেলায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। জানা যায়, ভাইরাল হওয়া ওই আওয়ামী লীগ নেতার নাম শাহ আলম। তিনি সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
২ মিনিট ১২ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, শাহ আলম একটি ঘরে একজন নারী ও কয়েকজন ব্যক্তির সঙ্গে রয়েছেন। কথোপকথনের এক পর্যায়ে বোরকা পরা ওই নারী তাকে পেটাতে থাকেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শনিবার রাতে বরগুনা পৌর শহরের ডিকেপি রোড এলাকার একটি বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
জুতাপেটার ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিত ও বানোয়াট বলে অভিযোগ আওয়ামী নেতা শাহ আলমের। তিনি বলেন, আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ পরিকল্পিতভাবে ভাড়াটে লোকজন দিয়ে এটা ঘটিয়েছে। তবে ওই নারীর সঙ্গে আমি কয়েকদিন কয়েকবার ফোনে কথা বললেও তাকে আমি চিনি না। ওই নারী ফোন করে ডিকেপি সড়কে আসতে বলে। আমি বাসার কাছাকাছি গেলে কয়েকজন যুবক আমার সামনে এসে বলে আপনি কোন বাসায় বেড়াতে যাবেন নাকি। তখন আমি হ্যাঁ সূচক জবাব দেই। এরপরই ওই যুবকরা আমাকে ওই নারীর বাসায় নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, সেখানে গিয়ে দেখি অপর এক নারী একটি শিশু নিয়ে বসে আছে। কিছুক্ষণ পর বোরকা পরিহিত এক নারী এসে আমার পাশে বসে। সঙ্গে সঙ্গে ওই যুবকরা বাসায় ঢুকে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আমি অসুস্থ হয়ে যাই। সমস্ত শরীর দিয়ে ঘাম ঝড়তে থাকে। আমি পাঞ্জাবিটা খুলে ফেলি। এই ফাকে ওই যুবকরা আমার ছবি তুলে। ওই নারী আমাকে জুতা দিয়ে পেটাতে থাকে। সেই ছবিও যুবকরা তুলে। আমার পকেটে ৬০ হাজার টাকা ছিল তাও যুবকরা নিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা ডিকেপি রোডে ওই নারীকে দিয়ে ফাঁদে ফেলার ভিডিও ধারণ ও ব্ল্যাকমেইল করে টাকা হাতিয়ে নেওয়া উদ্দেশ্য ছিল যুবকদের। আমার কাছে যুবকরা আরও টাকা চেয়েছে। আমি টাকা না দেওয়ায় ভিডিও ভাইরাল করে দিয়েছে।
স্থানীয় আওয়ামী নেতা ও ইউপি সদস্য মো. পলাশ বলেন, ‘তাকে (শাহ আলম) কখনো কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকতে দেখিনি। আমার ধারণা তাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে ফাঁসানো হয়েছে। প্রশাসনের কাছে দাবি বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হোক।’
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শাহ মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ ওলি বলেন, ‘আমি ভিডিওটি এখন পর্যন্ত দেখিনি। খোঁজ-খবর নিচ্ছি। আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বরগুনা সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আলী আহম্মেদ বলেন, ‘এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।