জামিন পেলেন শিক্ষক হৃদয় মণ্ডল

ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় আটক বিজ্ঞানশিক্ষক হৃদয় মণ্ডলের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। পাঁচ হাজার টাকা মুচলেকায় রোববার (১০ এপ্রিল) বেলা ১টায় মুন্সিগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বলেন, আদালতের রায় আজ আমরা ন্যায্য বিচার পেয়েছি। আমার মক্কেল হৃদয় মণ্ডল কোথাও ধর্ম অবমাননা করেন নাই‌। তিনি ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলেন নাই। এই আদেশের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার বলেন, আমার স্বামী জামিন পাওয়ায় আমি খুশি। আমি তাকে নিয়ে যেন নিরাপদে থাকতে পারি। আমার স্বামী যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন।

তবে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের এপিপি সিরাজুল ইসলাম পল্টু হৃদয় মণ্ডলের জামিনের বিরোধিতা করেন। মামলা ও আদালত সূত্রে জানা যায়, বিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গত ২২ মার্চ আটক করা হয় বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে। ২৩ মার্চ তাকে আদালতে সোপর্দ করলে আদালত‌ তাকে কারাগারে পাঠান। পরে গত ২৮ মার্চ মুন্সিগঞ্জ আমলি আদালত-১-এ আসামির জামিন আবেদন করা হলে ওই আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আব্দুল্লাহ আল ইউসুফ জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।

পরে জামিন নামঞ্জুরের পরিপ্রেক্ষিতে তার আইনজীবী মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামির জামিনের জন্য ৪ এপ্রিল ফৌজদারি মিস মামলা করেন। সেদিন মামলাটিতে আসামির জামিন শুনানির জন্য আজ শুনানির দিন ধার্য করেন মুন্সিগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আমজাদ হোসেন।

উল্লেখ্য, গত ২০ মার্চ ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির একটি ক্লাস চলাকালে ধর্মীয় বিষয়ে হৃদয় মণ্ডলের বিভিন্ন কথোপকথন শিক্ষার্থীরা মোবাইলে রেকর্ড করে। ওই সব কথোপকথনে ধর্মের বিষয়ে আপত্তিকর কথা ও অবমাননার অভিযোগ তুলে ক্লাস শেষে শিক্ষকের বিচারের দাবিতে শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষক বরাবর লিখিত আবেদন করেন।

পরে ২২ মার্চ বিদ্যালয় চলাকালীন শিক্ষার্থীরা এ ঘটনায় বিক্ষোভ করেন। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই শিক্ষককে থানায় নিয়ে আসে। ২২ মার্চ একই দিন বিনোদপুর রামকুমার উচ্চবিদ্যালয়ের অফিস সহকারী মো. আসাদ বাদী হয়ে ধর্ম অবমাননার অভিযোগে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আটক ও আদালতে সোপর্দ করা হয়।