কনস্টেবলের এএসপি হওয়ার খবরটি ভুয়া

সম্প্রতি এক পুলিশ কনস্টেবলের ৪০তম বিসিএসের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার গল্প ফলাও করে প্রচার করা হয় দেশের অনেক শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যমে। কনস্টেবলের চাকরির পাশাপাশি তুমুল প্রস্তুতি নিয়ে বিসিএসের পুলিশ ক্যাডারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ায় তার এই সংবাদ ভাইরাল হয় ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে। অভিনন্দনের বন্যায় ভাসেন তিনি। দেশের প্রথম সারির বিভিন্ন মিডিয়ায় ফলাও করে প্রচারও হয় সে খবর। তার জীবন, সংগ্রাম, স্বপ্ন ইত্যাদি উঠে আসে গল্পের মতো। আর সেই গল্পের নায়কোচিত চরিত্র পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল হাকিম।

তবে ঘটনার মোড় ঘুরে যায় বেশ দ্রুতই। যখন জানা গেল, সেই কনস্টেবলের ৪০তম বিসিএসে পুলিশ ক্যাডারে ৬৭তম স্থান অর্জন করা বা এএসপি পদে তার সুপারিশপ্রাপ্তির ঘটনা পুরোটাই ভুয়া, তখন নয়া আলোচনা শুরু হয়েছে। আদতে বিসিএসে উত্তীর্ণ তো দূরের কথা, পরীক্ষাই দেননি আবদুল হাকিম। পুলিশ কনস্টেবল আবদুল হাকিম দাবি করেছিলেন, ৪০তম বিসিএসে তিনি পুলিশ ক্যাডারে ৬৭তম স্থান অর্জন করেছেন।

অথচ বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (পিএসসি) তালিকায় সেই স্থান লাভ করা ব্যক্তির রোল নম্বর ১৬০০৪৩৯১, যা কিনা সিলেট অঞ্চল থেকে আবেদন করা এক পরীক্ষার্থীর। তার নাম সঞ্জীব দেব। আর আবদুল হাকিম নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামের বাসিন্দা। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সঞ্জীব দেব শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ২০১২-১৩ সেশনের শিক্ষার্থী ছিলেন। প্রথম বিসিএসেই পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন এ মেধাবী।

এ প্রসঙ্গে পুলিশের উপকমিশনার (মিডিয়া) মো. ফারুক হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, আব্দুল হাকিম নামের ওই কনস্টেবল দাবি করেছেন যে, তিনি বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদের জন্য বাছাই হয়েছেন। তার এই দাবি ঠিক নয়, ভুয়া। আব্দুল হাকিমের কথাবার্তা শুনে মনে হচ্ছে, সে মানসিক বিকারগ্রস্ত। তিনি আরও বলেন, আমরা খবর নিচ্ছি, সে কেন এমন দাবি করল তা খতিয়ে দেখতে হবে। সে কেন এমন তথ্য মিডিয়াকে দিল! শেষ পর্যন্ত যদি প্রমাণ হয় যে এসব সত্যিই মিথ্যাচার, তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।