আব্দুল হাকিম নিজের মেধা ও পরিশ্রকমকে কাজে লাগিয়ে সাফলতা পেয়েছেন। পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরিতে থাকা অবস্থায় বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন নরসিংসীর এই যুবক। বুধবার (৩০ মার্চ) ৪০তম বিসিএসের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে পুলিশ ক্যাডারে (এএসপি) সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন আব্দুল হাকিম। সেখানে পুলিশ ক্যাডারে মেধাতালিকায় ৬৭তম হয়েছেন তিনি।
হাকিম নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার শ্রীনগর ইউনিয়নের সায়দাবাদ গ্রামের সিরাজ মিয়ার পঞ্চম সন্তান। ২০১৩ সালে কনস্টেবল হিসেবে বাংলাদেশ পুলিশে যোগদান করেছিলেন তিনি। কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে যোগ দেওয়া হাকিম বর্তমানে নায়েক হিসেবে বাহিনীতে কর্মরত রয়েছেন।
জানা যায়, ২০১০ সালে সায়দাবাদ উচ্চবিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেছেন হাকিম। কিন্তু এসএসসি পরীক্ষার কয়েকদিন আগেই মারা যান তার বাবা। শোক আর কষ্ট নিয়ে কোনোরকম পরীক্ষার সিটে বসতে হয়েছিল। ফলও তেমন ভাল হয়নি। এরপর রায়পুরা কলেজ থেকে ২০১২ সালে সম্পন্ন করেন উচ্চমাধ্যমিক।২০১২-১৩ সেশনে ভর্তি হন নরসিংদী সরকারি কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে। এর কিছুদিন পর পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি হয় তার। ২০১৩ সালে পুলিশের যোগদান করার পর প্রথমে গাজীপুরে শিল্প পুলিশে পোস্টিং হয় হাকিমের। কিন্তু ২০১৫ সালে বদলি হয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশে (ডিএমপি) আসেন তিনি। পোস্টিং হয় পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) বিভাগে। সেখানে থাকা অবস্থাতেই নরসিংদী সরকারি কলেজ থেকে ২০১৬ সালে অনার্স শেষ করেন।
দুই বছরের ব্যবধানে ২০১৮ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে আবেদন করেন আব্দুল হাকিম। সেবার প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর মনোবল আরও অনেক বেড়ে যায়। প্রিলিমিনারিতে কৃতকার্য হওয়ার পর পর্যায়ক্রমে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত চলতি বছরের ৩০ মার্চ ৪০তম বিসিএসের ফলাফলে পুলিশ ক্যাডারের মেধাতালিকায় ৬৭তম হিসেবে জায়গা করে নেন এই যুবক।
হাকিম জানান, ডিএমপিতে প্রচুর কাজের চাপ ছিল। সারাদিন কাজ করে বিশ্রামের সময় পড়াশোনা করতাম। যখন অনার্স চতুর্থ বর্ষের শেষ দিকে, তখন ভালো মানের একটা চাকরির চিন্তা শুরু হয়। এই চিন্তা থেকেই চাকরির পাশাপাশি পড়াশোনা করতে থাকি। তিনি বলেন, ডিউটির পাশাপাশি ১৩ থেকে ১৪ ঘণ্টা পড়াশোনা শুরু করলাম। রাত ২টা পর্যন্ত পড়তাম। আবার সকাল ৭টায় যখন রোলকল হতো, তখন আমার ঘুমে ঢুলুঢুলু অবস্থা। মাঝে মাঝে রোলকলের দায়িত্বে থাকা এএসআই বকতেন।