রান পাহাড় করেও ক্যারিবীয় তাণ্ডবে উড়ে গেল কোহলিরা

রোববার (২৭ মার্চ) দিনের ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) বেঙ্গালুরুর দেওয়া ২০৬ রানের বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৯ ওভার মোকাবিলায় ৫ উইকেট হারিয়ে পাঞ্জাবের ইনিংস থামে ২০৮ রানে। হাতে ফস্কে যাওয়া ম্যাচের শেষদিকে ৮ বলে ২৫ রানের ঝড় তুলে দলের জয় নিশ্চিত করেন ওডিন স্মিথ। তার ইনিংসটি ৩ ছক্কা ও এক চারের মারে সাজানো ছিল। শাহরুখ খান অপরাজিত ছিলেন ২০ বলে ২ ছয় ও এক চারের মারে ২৪ রান করে। বেঙ্গালুরুর বোলারদের মধ্যে সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার করেন মোহাম্মদ সিরাজ।

এর আগে মুম্বাইয়ে ২০৬ রানের বড় লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বিধ্বংসী ব্যাট চালাতে থাকেন পাঞ্জাব কিংসের দুই ওপেনার মায়াঙ্ক আগারওয়াল ও শিখর ধাওয়ান। দুজনের ৭১ রানের জুটি অষ্টম ওভারে এসে ভাঙেন ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। মায়াঙ্ক ২৪ বলে সমান দুই বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩২ রান করে সাজঘরে ফেরেন। এরপর ব্যাট হাতে ক্রিজে এসে রীতিমতো ঝড় তোলেন ভানুকা রাজাপাকসা। তাকে সঙ্গ দিয়ে দলকে জয়ের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন ধাওয়ান।

তাদের ৪৭ রানের জুটি ভেঙে বিরাট কোহলির দলকে আবার ম্যাচে ফেরান হার্শাল প্যাটেল। ধাওয়ান ৫ চার ও এক ছক্কার সাহায্যে ২৯ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলে আউট হন। ইনিংসের ১৩তম ওভার পর্যন্ত মনে হচ্ছিল লক্ষ্য বড় হলেও তা পাঞ্জাব ব্যাটারদের জন্য কোনো ব্যাপারই নয়। তবে ইনিংসের ১৪তম ওভারে বল করতে এসে সব কিছু নস্যাৎ করে দেন মোহাম্মদ সিরাজ। একই ওভারে তুলে নেন ক্রিজে ঝড় তুলতে থাকা রাজাপাকসা ও রাজ বাওয়ার উইকেট।

রাজাপাকসা ২২ বলের মোকাবিলায় ৪ ছক্কা ও ২ চারের মারে ৪৩ করে সাজঘরে ফেরেন। বাওয়া ফেরেন খালি হাতে। পরের ওভারে ইংলিশ ব্যাটার লিয়াম লিভিংস্টোন আকাশ দীপের শিকার করে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় পাঞ্জাব। তবে ষষ্ঠ উইকেট জুটিতে শাখরুখ খানের সঙ্গে ক্রিজে থেকে ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার ওডিন স্মিথ তাণ্ডব চালালে মুহূর্তে ম্যাচ পাঞ্জাবের নাগালে চলে আসে।

এর আগে ডু প্লেসির ঝড়ে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেট হারিয়ে ২০৫ রানের বিশাল সংগ্রহ দাঁড় করায়। ফাফ ডু প্লেসি করেছেন ৫৭ বলে ৮৮ রান। তার ইনিংসটিতে ছিল ৩ চারের সঙ্গে ৭টি ছক্কার মার। এছাড়া বিরাট কোহলি করেন ৪১ রান।

টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামা বেঙ্গালুরুর পক্ষে ইনিংস উদ্বোধন করতে নামেন দলের অধিনায়ক ফাফ ডু প্লেসি। অনুজ রাওয়াতের সঙ্গে শুরুতে বেশ সাবধানী ব্যাটিং করছিলেন ডু প্লেসি। প্রথম ১৫ বলে মাত্র ৭ রান করতে সমর্থ হন ডু প্লেসি। কিন্তু সময়ের সঙ্গে হাত খুলতে থাকেন বেঙ্গালুরু অধিনায়ক। ৭ ওভারে দলের রান ৫০ এর ঘরে পৌঁছায় তাদের। এরপর ২১ রান করা অনুজ রাওয়াত চাহারের বলে বোল্ড হয়ে ফেরেন।

রাওয়াত ফিরলে উইকেটে আসেন বেঙ্গালুরুর অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়া বিরাট কোহলি। প্রথম উইকেট হারানোর পরে যেন সম্বিৎ ফিরে পায় বেঙ্গালুরুর দুই ব্যাটার। দুজন মিলে পাঞ্জাবের বোলারদের ওপর তাণ্ডব বইয়ে দিতে থাকেন। দুজনে মিলে ১০ ওভারে দলের খাতায় যোগ করেন ১১৮ রান। এই জুটিতে একটু বেশিই আক্রমণাত্মক ছিলেন ডু প্লেসি। হারপ্রীত বার ও ওডেন স্মিথের উপর দিয়েই ঝড়টা বেশি গেছে। ৭ ছক্কা ও ৩ চারে ৮৮ রানের ইনিংস খেলা ডু প্লেসি আউট হন ১৮তম ওভারের প্রথম বলে। দলের রান তখন ১৬৮।

ডু প্লেসি আউট হয়ে গেলেও রানের চাকা ঘোরা থামেনি বেঙ্গালুরুর। পরের ১৭ বলে আরও ৩৭ রান যোগ করেন কোহলি-দীনেশ কার্তিক জুটি। ১ চার ও ২ ছয়ে কোহলি ২৯ বলে করেন ৪১ রান। অন্যদিকে দীনেশ কার্তিক ছিলেন গোল্ডেন টাচে। তার ব্যাটে যা আসছিল সবই রান হয়ে যোগ হয়েছে দলের স্কোরকার্ডে। তাতে ২০ ওভারের শেষে বেঙ্গালুরুর সংগ্রহ গিয়ে দাঁড়ায় ২ উইকেটে ২০৫ রানে। পাঞ্জাবের পক্ষে রাহুল চাহার দুর্দান্ত বোলিং করে ২২ রানে নেন রাওয়াতের উইকেটটি। ওপর উইকেটটি পান আর্শদিপ সিং।