গ্রাহক স্বার্থ রক্ষায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন টেলিটকের ইন্টারনেট ডাটার মেয়াদের সীমাবদ্ধতা থাকবে না। যত দিন ডাটার ব্যালেন্স থাকবে ততদিন গ্রাহক তার ক্রয়কৃত ডেটা ব্যবহার করতে পারবেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার আজ মঙ্গলবার রাজধানীর বিটিআরসি মিলনায়তনে মোবাইল অপারেটরদের ডাটা ও ডাটা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন প্যাকেজ সম্পর্কিত নতুন নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ক অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন। আগামী ১৭ মার্চ থেকে টেলিটক এই ব্যবস্থা কার্যকর করবে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে এই প্রথমবারের মতো মোবাইল ডাটার কোনো মেয়াদ রাখার সীমাবদ্ধতা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে এলো। টেলিটকের পর অন্য অপারেটরগুলো পর্যায়ক্রমে এই ব্যবস্থা চালু করবে বলে মন্ত্রী দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
মোস্তাফা জব্বার আরও বলেন, ‘আমার ডাটা আমি ব্যবহার করবো, যতদিন ব্যালেন্স থাকবে ততদিন করবো’- গ্রাহকদের এটাই দাবি। আমরা সেই দাবিই বাস্তবায়ন করছি। কলড্রপের ফলে গ্রাহকদের আর্থিক ক্ষতির বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখার জন্য মোবাইল অপারেটরসহ সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল সেবা সবার জন্য সহজলভ্য এবং ন্যায়সঙ্গত হোক, এটাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের লক্ষ্য।
বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যামসুন্দর সিকদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো. খলিলুর রহমান বিশেষ অতিথির বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র, টেলিটকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাহাব উদ্দিন, এমটবের সেক্রেটারি জেনারেল ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এস এম ফরহাদ (অবসরপ্রাপ্ত) এবং গ্রামীণফোন, রবি ও বাংলা লিংকের প্রতিনিধিগণ মোবাইলফোনের ডেটা প্যাকেজ ব্যবস্থাপনা সহজীকরণে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এ বিষয়ে বিটিআরসির গাইডলাইন অনুযায়ী কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি অবহিত করেন। বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক তৈরি নিশ্চিত করার মাধ্যমে বাংলাদেশকে পঞ্চম শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করা হবে উল্লেখ করে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা লড়াই করছি। এই লড়াইয়ে টেলকো ইন্ডাস্ট্রির অপরিসীম ভূমিকা রয়েছে।
করোনাকালে দেশব্যাপী ফোর–জি নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে নির্দেশ বাস্তবায়নের জন্য অপারেটরদের ভূমিকার প্রশংসা করে মন্ত্রী বলেন, কোনো কিছু নির্দেশ দিয়ে নয়, আমরা অপারেটরদের সঙ্গে সব সময় এক টেবিলে বসে লক্ষ্য বাস্তবায়নে কাজ করছি এবং তা অব্যাহত থাকবে।
ইন্টারনেটকে শ্বাস-প্রশ্বাসের সাথে তুলনা করে মন্ত্রী আরও বলেন, ডাটা যত বেশি সম্প্রসারণ করতে পারব, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তত বেশি সুযোগ সৃষ্টি করতে পারব।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের ইন্টারনেটের সাথে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর সংযোগ নিশ্চিত করতে তিনি শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকার প্রশংসা করে মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণার পর তা বাস্তবায়নে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ তা সফলতার সাথে অতিক্রম করে বিশ্বে এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব গত ১৩ বছরে টেলিযোগাযোগ খাতে বাংলাদেশের অগ্রগতি তুলে ধরেন এবং কলড্রপ সংকট সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।