একুশের প্রথম প্রহরে শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ভাষা শহীদদের স্মরণ

মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নেমেছে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। শ্রদ্ধা জানাতে ফুল হাতে দলগত পর্যায়ে সর্বোচ্চ পাঁচজন ও ব্যক্তি পর্যায়ে দুজন করে এসে হাজির হয়েছেন শহীদ বেদীতে।

একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ১২টা ১ মিনিটে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা জানানোর কথা থাকলেও তাদের পক্ষে প্রতিনিধিদল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। রাষ্ট্রপতির পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এসএম সালাহউদ্দিন ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী শ্রদ্ধা জানান।

রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে তারা সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থেকে ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।

পরে জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর পক্ষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়ার পক্ষেও শ্রদ্ধা জানানো হয়।

এর পরে আসেন আওয়ামী লীগের বিশেষ প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দল চলে যাওয়ার পরে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।

পরে তিন বাহিনী তথা সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর পক্ষে শ্রদ্ধা জানানো হয়। তাদের শ্রদ্ধা জানানো শেষ হলে বিরোধী দল জাতীয় পার্টির নেতারা সশরীরে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়াও বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ একুশের প্রথম প্রহরে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি শহীদ বেদীতে শ্রদ্ধা জানায়। এসময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান শুরুতে সবাইকে স্বাগত জানান।

রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের শ্রদ্ধা জানানো শেষে সাধারণ মানুষের জন্য শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ খুলে দেওয়া হয়।

প্রসঙ্গত, বাংলা মায়ের বীর সন্তানেরা মাতৃভাষার সম্মান রক্ষার্থে আজ থেকে ৭০ বছর আগে ১৯৫২ সালের এই দিনে বুকের রক্তে রঞ্জিত করেছিলেন ঢাকার রাজপথ। পৃথিবীর ইতিহাসে সৃষ্টি হয়েছিল মাতৃভাষার জন্য আত্মদানের অভূতপূর্ব নজির। একুশে ফেব্রুয়ারি তাই বাঙালির চেতনার প্রতীক। সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, সফিউর এবং নাম না জানা শহীদের রক্তে রাঙানো অমর একুশে বাঙালির পথের দিশা, প্রাণের স্পন্দন।

মাতৃভাষার জন্য বাঙালির আত্মদানের এই অনন্য ঘটনা স্বীকৃত হয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেসকো একুশে ফেব্রুয়ারিকে ঘোষণা করে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে। আজ বাঙালির সঙ্গে সারা বিশ্বেই দিনটি পালিত হচ্ছে।