ভারতে হঠাৎ করেই নতুন এক মডেলের আগমনে হতবাক সবাই। পরনে দামি স্যুট। চোখে রোদচশমা। চুলে, গোঁফদাড়িতেও নতুন স্টাইল। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার ফ্যাশন ফটোশুটের প্রচুর ছবি ইতোমধ্যেই ভাইরাল। খোলা হয়েছে তার ফ্যানপেইজও। সেখানে তার ফটোশুটের সমস্ত ছবি আপলোড করা হয়েছে। খবর এনডিটিভির।
ছবিগুলো দেখে কোনোভাবেই বোঝার উপায় নেই, সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পরিশ্রম করে যা উপার্জন করেন, তা দিয়েই ডাল-ভাত খেয়ে দিন কাটে মডেল মাম্মিক্কার। তার পরনে থাকে অপরিষ্কার শার্ট আর লুঙ্গি। গালে সাদা দাড়ি। মোটা গোঁফ। কেরলের কোঝিকোড়ের বাসিন্দা তিনি। সেখানকার ৬০ বছর বয়সী দিনমজুর মাম্মিক্কাই এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সাড়াজাগানো মডেল!
মূলত মাম্মিক্কার ভাগ্যের চাকা ঘুরে যায় ফটোগ্রাফার শরিক বয়ালিল শেখের কল্যাণে। শরিকের হাত ধরেই ফ্যাশন দুনিয়ায় পা রাখেন মাম্মিক্কা।
সংবাদমাধ্যমকে শরিক জানান, অনেক আগে মাম্মিক্কার একটি ছবি তুলেছিলেন তিনি। গায়ে ধুলোময়লা, রং ওঠা লুঙ্গি পরেই পোজ দিয়েছিলেন তিনি। শরিকের তোলা সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল। তার পরে বিষয়টি আড়ালে চলে যায়।
কিছুদিন আগেই ওয়েডিং স্যুটের এক ব্র্যান্ডের ছবি তোলার প্রস্তাব আসে শরিকের কাছে। কে মডেল হবেন, তা নিয়েই চিন্তায় পড়ে যান শরিক। তখনই মাম্মিক্কার কথা মাথায় আসে তার। তাকে দিয়েই বাজিমাৎ করার চেষ্টা চালান শরিক। দামী পার্লারে গিয়ে মাম্মিক্কার মেকওভার করা হয়। তার উস্কোখুস্কো চুল ছাঁটা হয় কেতাদুরস্ত চালে। খসখসে ত্বকে গ্লেজ আনতে দেয়া হয় প্রসাধনীর পরতও। পরে আরেকদফা কারুকার্য চালানো হয় মাম্মিক্কার এলোমেলো গোঁফদাড়ির ওপর।
এরপরই শরিক একগুচ্ছ ছবি তোলেন মাম্মিক্কার। নেটমাধ্যমে দেখা গেছে নতুন এ মডেলের চোখধাঁধানো অজস্র ছবি। এক হাতে ধরা অ্যাপল আইপ্যাড, চোখ ঢাকা দামি রোদচশমায়, পরনে দামি স্যুট-টাই। কখনও ঝাঁ-চকচকে এসইউভি-এর বাইরে দাঁড়িয়ে। আবার কখনো ধীর লয়ে হাঁটছেন।
এসব ছবি দেখে রীতিমতো চোখ ছানাবড়া নেটিজেনদের। ফেসবুক বা টুইটারে মডেল মাম্মিক্কার অজস্র ছবিও চালাচালি শুরু হচ্ছে। ভক্তদের জন্য একটি ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টও খোলা হয়েছে তার।
তবে রাতারাতি তারকার খ্যাতি পেলেও মাটি থেকে পা সরেনি মাম্মিক্কার। জানিয়েছেন, মডেল হিসাবে আলোড়ন তুললেও দিনমজুরি ছাড়বেন না। কারণ এক সময় দিনমজুরি করেই তো সংসার টানতেন মাম্মিক্কা!