মহামারি করোনাভাইরাসের তৃতীয় ঢেউ পৃথিবীতে আছড়ে পড়েছে। ২০১৯ সালে এই ভাইরাস যখন ছড়াতে শুরু করে তখন জ্বরের মাধ্যতে উপসর্গ জানান দিতো। কিন্তু গত তিন বছরে এই নানা ধরন বদলেছে। এখন জ্বর না হয়েও করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকেই। করোনাভাইরাসের নিত্যনতুন উপসর্গ দেখা দিচ্ছে।
এখন জ্বর মানেই একটা আতঙ্ক! করোনা উপসর্গের অন্যতম হিসাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে জ্বরকেই। বহু জায়গায় থার্মাল স্ক্যানারে তাপমাত্রা মাপা হচ্ছে। জ্বর নেই মানে করোনাও নেই, অনেক ক্ষেত্রেই ধরে নেওয়া হচ্ছে এমন। কিন্তু আদৌ কি তাই?
দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সের একটি রিপোর্ট ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। সেই রিপোর্ট কিন্তু বলছে অন্য কথা। সেখানে বলা হয়েছে, ৪৪ শতাংশ করোনা আক্রান্তই জ্বরের উপসর্গহীন। ৩৪.৭ শতাংশের ক্ষেত্রে সর্দি-কাশি-কফের সমস্যা রয়েছে। মাত্র ১৭.৪ শতাংশের ক্ষেত্রে জ্বর ছিল করোনা আক্রান্তের।
প্রথম থেকেই জ্বরের সঙ্গে করোনার সম্পর্কের উপরই জোর দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু জ্বর দেখেই কি করোনা বলা যায়?
জ্বর নেই, কিন্তু শুধুমাত্র কনজাংটিভাইটিস রয়েছে, শরীরে ক্লান্তি— এমন উপসর্গের রোগীরও করোনা পজিটিভ এসেছে। এমনও হতে পারে, কারও দুই এক দিন গা হাত-পা ব্যথা ছিল, তিনি করোনা পজিটিভ। নিজে থেকেই সেরে গিয়েছে। আর এই বিষয়টাই আরও বেশি করে ভাবাচ্ছে চিকিৎসকদের।
করোনা আক্রান্ত অনেকেরই শরীর দুর্বল লাগছে, তাদের ক্ষেত্রে কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করা হচ্ছে। তবে জ্বর থাকছে না অনেকেরই। কারও হয়ত সামান্য সর্দি-কাশি বা গলায় ব্যথা ছিল। কারও ক্ষেত্রে হয়তো ঝিমুনি ভাব। এগুলোকে আটিপিক্যাল উপসর্গ বলা যেতে পারে, কিন্তু অবহেলা করা ঠিক হবে না।
জ্বর, সর্দি, কাশি নিয়ে বর্ষাকালে অনেকেই ভোগেন। ফ্লু এই সময় অনেকেরই হয়। এটা ছাড়াও অনেক রোগীই আসেন। যারা বেশ কয়েক দিন কোনও গন্ধ পাচ্ছিলেন না। এমনিতে সুস্থই রয়েছেন। কিন্তু করোনা পরীক্ষার ফলে পজিটিভ এসেছে। তাই জ্বরকেই একমাত্র উপসর্গ হিসাবে ধরে নেওয়া হচ্ছে না।